পহেলা জানুয়ারীতে প্রতি বছরের মতো এ বছর মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসব হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনার প্রভাবের কারণে এ বছর বই উৎসব হচ্ছে না। পাশাপাশি প্রতি বছরের মতো পহেলা জানুয়ারির আগে বিদ্যালয়গুলোতেও শতভাগ বই পৌঁছার কথা থাকলেও পৌঁছেনি শতভাগ বই। করোনার প্রভাবে এমনটি হয়েছে বলে জেলা শিক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
তবে শতভাগ না হলেও ইতোমধ্যে মাধ্যমিকে ৬১ ভাগ এবং প্রাথমিকে ৭৮ ভাগ বই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বইয়ের চালান আসা অব্যাহত থাকায় আগামী ১২ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিটি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতভাগ বই পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন শিক্ষকসহ জেলা শিক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। তবে করোনা প্রতিকূলতার মধ্যে শতভাগ বই হাতে না এলেও ইতোমধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণি, সপ্তম শ্রেণি ও অষ্টম শ্রেণির বই এসেছে। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকরা।
বই পাওয়ার বিষয়ে নিয়াজ মুহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহিদুল ইসলাম জানান, অষ্টম ও সপ্তম শ্রেণির বই পেয়েছি। বৃহস্পতিবারের (৩১ ডিসেম্বর) মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির বই পেয়ে যাব বলে আশা করছি। শুক্রবার (১ জানুয়ারি) আমরা বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু করতে পারব। শুক্রবার সকালে শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছ থেকে বই নিয়ে যাবে। আশা করি, আগামী দু’দিনের মধ্যে নবম ও দশম শ্রেণির বই বিতরণ করতে পারব।
উলচাপাড়া মালেকা সাহেব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল ওয়াহিদ ভূইয়া বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারকে শিক্ষা পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ আমরা যখন পড়ালেখা করতাম তখন ৬ থেকে ৭ মাস চলে যেত বই পেতে পেতে। কিন্তু আজকে বছর শেষ হওয়ার আগেই নতুন বছরের বই পেয়ে যাচ্ছি। আজকে অষ্টম ও সপ্তম শ্রেণির বই পেয়েছি। আশা করি, সব শ্রেণির বই কয়েক দিনের মধ্যে পেয়ে যাব এবং শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারব।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফি উদ্দিন জানান, এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ২৪৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক, দাখিল, ইবতেদায়ি, ইংরেজি ভার্সন ও ভোকেশনালসহ মোট বইয়ের চাহিদা ছিল ৪২ লাখ ৬০ হাজার ৮২১টি। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হাতে এসেছে ২৩ লাখ ৭০ হাজার ৮২০টি। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শতভাগ বই হাতে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি শ্রেণিতে তিন দিন করে বই দেওয়া হবে ষষ্ঠ,সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে প্রথম বই দেওয়া হবে। এর মধ্যে বাকি বই এসে যাবে বলে আশা করছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১২ জানুয়ারির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ করা সম্ভব হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খোরশেদ আলম জানান, জেলার ১১৭টি বিদ্যালয়ে প্রায় ২৪ লাখ বইয়ের চাহিদা রয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৮ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৯টি বই এসেছে। পর্যায়ক্রমে বই আসামাত্র সব প্রতিষ্ঠানে বই পৌঁছে দেওয়া হবে।