ঢাকা ০২:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমি সর্বহারার শিষ্য

  • গৌতম মণ্ডল
  • আপডেট সময় ০৪:৪৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০২৩
  • ১৭৩ বার পড়া হয়েছে

আমি রিক্ত! আমি নিঃস্ব!
আমি সর্বহারার শিষ্য!
আজ দুঃসময়ের, দশ দিকে ঐ
উড়ছেরে চিতা ভস্ম৷
আমি ক্লিষ্ট, পথ ভ্রষ্ট
আমি অন্ধকারের অন্ধ পথিক
পথ ভোলা নৈরাশ্য!
আমি সর্বহারার শিষ্য৷৷

আমি প্রতিশ্রুতির, শুষ্ক নদীর
রুক্ষতা বিন্যস্ত৷
আজ অবিশ্বাসের বিশ্বায়নে
বিস্মিত সারা বিশ্ব৷
আমি সর্বহারার শিষ্য!

আমি জীর্ণ, আমি দীর্ণ
আমি কুন্তির ছেলে কর্ণ৷
আমি ঘেন্নার জলে, সাঁতরিয়ে চলি
যন্ত্রণা করি চূর্ণ৷
আমি আস্তিক, আমি নাস্তিক
আমি ভন্ড সাধুর স্বস্তিক৷
আমি ধর্মের নামে, ষাঁড়াষাঁড়ি বান
লুটেপুটে খাই দশ দিক৷

আমি জৈন, আমি হিন্দু
আমি হিল্লোলে ভরা সিন্ধু৷
আমি কোরাণ – পুরাণ,
বাইবেল – গীতা
একটি শিশির বিন্দু৷
আমি মন্দির, আমি মসজিদ
অমি সাম বেদে গাওয়া সঙ্গীত।
আমি ওঙ্কার সুরে, ঝংকারে ফিরি
ঈশান – অগ্নি, নৈঋত৷

আমি রাত্রির, অভিযাত্রী
আমি তপ্ত চিতার মাদ্রী।
আমি দুঃশাসনের, রাজত্বে ঐ
কন্ঠে গরল ধাত্রী৷
আমি হিংস্র, আমি হায়না
আমি কাটোয়া হইতে, কালনা!
আমি আঁচল ছেঁড়া বেইজ্জতীর
বুক ফাটা মহা কান্না!

আমি স্তব্ধ, বাক্ রুদ্ধ
আমি নির্বাক্, নিঃস্পন্দ৷
আমি অন্ধ মুনির বৎস সিন্ধু
যন্ত্রণা শর বিদ্ধ!
আমি গঙ্গা, আমি পদ্মা
আমি সব হারাদের বান্দা৷
আমি লাল তাজা খুনে বক্ষ রাঙাই
দেখে হাসে মহা যোদ্ধা৷

আমি সংঘাত, আমি কাল রাত
আমি ভীষ্মের শর – শয্যা৷
আমি ক্ষুধাতুর হিয়া, লক্ লকে জ্বিহা
শক্তিতে ভরা মজ্জা৷

আমি তিক্ত, রক্তাক্ত
আমি বিস্বাদে সম্মৃক্ত৷
আমি রক্ত মাখা খড়্গ হাতে
নাচি উল্লাস নৃত্য!
আমি ভ্রান্ত, উদ্ ভ্রান্ত
আমি তর তাজা প্রাণবন্ত৷
আমি সবুজ প্রাণের, অবুঝ মনের
চঞ্চল তর, চিত্ত৷

আমি ঈশ্বর, আমি নশ্বর
আমি অফুরাণ প্রাণ মন্তর৷
আমি সৃষ্টি সুরার, বসুন্ধরার
শাশ্বত দীপ, অন্তর৷

আমি বাংলা, আমি গুজরাট
আমি স্বপ্নে বিভোর, দিন – রাত।
আমি শস্য – শ্যামল, সবুজ আঁচল
ফুলে – ফলে ভরা, মাঠ – ঘাট।

আমি হাস্য, আমি লাস্য
আমি সোনার ভারত বর্ষ।
আমি বিশ্ব ভূমির বক্ষ মাঝে
বাল্মীকি মহা – ভাষ্য৷

আমি সুগ্রীব, মহা উদ্ গ্রীব৷
আমি রণ সাজে সাজি, গৈরিক৷
আমি গণতন্ত্রের টুঁটি টিপে ধরি
মস্ নদে বসা সৈনিক৷

আমি ত্রস্ত, নি – রস্ত্র
ভয়ে কম্পিত থর দশ দিক৷
আমি সর্প গরলে, জ্বালা ধরা বিষে
স্নান করি, দিন – দৈনিক৷

অমি নিঃশ্বাস, শ্বাস – প্রশ্বাস
আমি বোবা জনতার আশ্বাস৷
আমি কাফেরের সাথে কোলাকুলি করি
ছিন্ন করিয়া নাগ পাশ৷

আমি সন্দ, উপাসন্দ
আমি লালসার মহা দ্বন্দ্ব।
আমি তারকাটা বীণা, ছন্দ বিহীন
বেসুরো নিঃ স্পন্দ।
আমি ঊর্বশী, আমি এলোকেশী
আমি জটাধারী শিব, ভোলানাথ৷
আমি ঝমকি – ঝমকি, উছলি চমকি
তালে – তালে নাচি, দিন – রাত।

আমি হাহাকার, আমি উদ্ গার
অমি আহম্মকের চিৎকার।
আমি আনার কলির, জ্যান্ত কবর
মহব্বতের ধিৎকার!

আমি অম্বর, পয় গম্বর
আমি বোম্ – বোম্ হর শঙ্কর৷
আমি করাল বদনী, ডাকিনী – যোগিনী
প্রলয়ঙ্কারী মুদ্ গর!

আমি জম্বু, আমি কাশ্মীর
চির তুষারাবৃত গম্ভীর৷
আমি গঙ্গা – সিন্ধু, এক জল ঢেউ
ইছামতী, জ লঙ্গীর৷

আমি রাষ্ট্রের, নৈরাজ্যের
যত ব্যাহেয়া, নির্লজ্জের৷
আমি জালিমের কাছে জল চেয়ে খাই
চুমু খাই, কাল কেউটের৷

আমি ইশ্ তেহারের, মশাল জ্বেলে
পায়ে পিষে দলি, জনমত৷
আমি কসায়ের কাছে ভালোবাসা শিখে
লাশ কাটা ঘরে ছট্ পট্!

আমি ধান্দা বাজের, ভন্ড মুখোশ
টুটবই ভেঙে টুটবো৷
আমি সাম্যবাদের গানটাকে
সুর – কন্ঠে ভ’রে, গাইবো৷

বলো – বন্দে মাতরম্ ,………
সে যে, সত্য সুন্দরম্ ,……..
সে যে, সত্য মঙ্গলম্ ……….
আমি মহা বিশ্বের, মহাকাশ জ্যোতি
নিত্য — অনিত্যম্৷
বন্দে মাতরম্ – বন্দে মাতরম্ …….
বন্দে মাতরম্৷৷
……………………….
তাং- ০১/০৫/২০২৩

দাসপুর, ঘাটাল, পশ্চিম মেদিনীপুর (w. B)

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আমি সর্বহারার শিষ্য

আপডেট সময় ০৪:৪৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০২৩

আমি রিক্ত! আমি নিঃস্ব!
আমি সর্বহারার শিষ্য!
আজ দুঃসময়ের, দশ দিকে ঐ
উড়ছেরে চিতা ভস্ম৷
আমি ক্লিষ্ট, পথ ভ্রষ্ট
আমি অন্ধকারের অন্ধ পথিক
পথ ভোলা নৈরাশ্য!
আমি সর্বহারার শিষ্য৷৷

আমি প্রতিশ্রুতির, শুষ্ক নদীর
রুক্ষতা বিন্যস্ত৷
আজ অবিশ্বাসের বিশ্বায়নে
বিস্মিত সারা বিশ্ব৷
আমি সর্বহারার শিষ্য!

আমি জীর্ণ, আমি দীর্ণ
আমি কুন্তির ছেলে কর্ণ৷
আমি ঘেন্নার জলে, সাঁতরিয়ে চলি
যন্ত্রণা করি চূর্ণ৷
আমি আস্তিক, আমি নাস্তিক
আমি ভন্ড সাধুর স্বস্তিক৷
আমি ধর্মের নামে, ষাঁড়াষাঁড়ি বান
লুটেপুটে খাই দশ দিক৷

আমি জৈন, আমি হিন্দু
আমি হিল্লোলে ভরা সিন্ধু৷
আমি কোরাণ – পুরাণ,
বাইবেল – গীতা
একটি শিশির বিন্দু৷
আমি মন্দির, আমি মসজিদ
অমি সাম বেদে গাওয়া সঙ্গীত।
আমি ওঙ্কার সুরে, ঝংকারে ফিরি
ঈশান – অগ্নি, নৈঋত৷

আমি রাত্রির, অভিযাত্রী
আমি তপ্ত চিতার মাদ্রী।
আমি দুঃশাসনের, রাজত্বে ঐ
কন্ঠে গরল ধাত্রী৷
আমি হিংস্র, আমি হায়না
আমি কাটোয়া হইতে, কালনা!
আমি আঁচল ছেঁড়া বেইজ্জতীর
বুক ফাটা মহা কান্না!

আমি স্তব্ধ, বাক্ রুদ্ধ
আমি নির্বাক্, নিঃস্পন্দ৷
আমি অন্ধ মুনির বৎস সিন্ধু
যন্ত্রণা শর বিদ্ধ!
আমি গঙ্গা, আমি পদ্মা
আমি সব হারাদের বান্দা৷
আমি লাল তাজা খুনে বক্ষ রাঙাই
দেখে হাসে মহা যোদ্ধা৷

আমি সংঘাত, আমি কাল রাত
আমি ভীষ্মের শর – শয্যা৷
আমি ক্ষুধাতুর হিয়া, লক্ লকে জ্বিহা
শক্তিতে ভরা মজ্জা৷

আমি তিক্ত, রক্তাক্ত
আমি বিস্বাদে সম্মৃক্ত৷
আমি রক্ত মাখা খড়্গ হাতে
নাচি উল্লাস নৃত্য!
আমি ভ্রান্ত, উদ্ ভ্রান্ত
আমি তর তাজা প্রাণবন্ত৷
আমি সবুজ প্রাণের, অবুঝ মনের
চঞ্চল তর, চিত্ত৷

আমি ঈশ্বর, আমি নশ্বর
আমি অফুরাণ প্রাণ মন্তর৷
আমি সৃষ্টি সুরার, বসুন্ধরার
শাশ্বত দীপ, অন্তর৷

আমি বাংলা, আমি গুজরাট
আমি স্বপ্নে বিভোর, দিন – রাত।
আমি শস্য – শ্যামল, সবুজ আঁচল
ফুলে – ফলে ভরা, মাঠ – ঘাট।

আমি হাস্য, আমি লাস্য
আমি সোনার ভারত বর্ষ।
আমি বিশ্ব ভূমির বক্ষ মাঝে
বাল্মীকি মহা – ভাষ্য৷

আমি সুগ্রীব, মহা উদ্ গ্রীব৷
আমি রণ সাজে সাজি, গৈরিক৷
আমি গণতন্ত্রের টুঁটি টিপে ধরি
মস্ নদে বসা সৈনিক৷

আমি ত্রস্ত, নি – রস্ত্র
ভয়ে কম্পিত থর দশ দিক৷
আমি সর্প গরলে, জ্বালা ধরা বিষে
স্নান করি, দিন – দৈনিক৷

অমি নিঃশ্বাস, শ্বাস – প্রশ্বাস
আমি বোবা জনতার আশ্বাস৷
আমি কাফেরের সাথে কোলাকুলি করি
ছিন্ন করিয়া নাগ পাশ৷

আমি সন্দ, উপাসন্দ
আমি লালসার মহা দ্বন্দ্ব।
আমি তারকাটা বীণা, ছন্দ বিহীন
বেসুরো নিঃ স্পন্দ।
আমি ঊর্বশী, আমি এলোকেশী
আমি জটাধারী শিব, ভোলানাথ৷
আমি ঝমকি – ঝমকি, উছলি চমকি
তালে – তালে নাচি, দিন – রাত।

আমি হাহাকার, আমি উদ্ গার
অমি আহম্মকের চিৎকার।
আমি আনার কলির, জ্যান্ত কবর
মহব্বতের ধিৎকার!

আমি অম্বর, পয় গম্বর
আমি বোম্ – বোম্ হর শঙ্কর৷
আমি করাল বদনী, ডাকিনী – যোগিনী
প্রলয়ঙ্কারী মুদ্ গর!

আমি জম্বু, আমি কাশ্মীর
চির তুষারাবৃত গম্ভীর৷
আমি গঙ্গা – সিন্ধু, এক জল ঢেউ
ইছামতী, জ লঙ্গীর৷

আমি রাষ্ট্রের, নৈরাজ্যের
যত ব্যাহেয়া, নির্লজ্জের৷
আমি জালিমের কাছে জল চেয়ে খাই
চুমু খাই, কাল কেউটের৷

আমি ইশ্ তেহারের, মশাল জ্বেলে
পায়ে পিষে দলি, জনমত৷
আমি কসায়ের কাছে ভালোবাসা শিখে
লাশ কাটা ঘরে ছট্ পট্!

আমি ধান্দা বাজের, ভন্ড মুখোশ
টুটবই ভেঙে টুটবো৷
আমি সাম্যবাদের গানটাকে
সুর – কন্ঠে ভ’রে, গাইবো৷

বলো – বন্দে মাতরম্ ,………
সে যে, সত্য সুন্দরম্ ,……..
সে যে, সত্য মঙ্গলম্ ……….
আমি মহা বিশ্বের, মহাকাশ জ্যোতি
নিত্য — অনিত্যম্৷
বন্দে মাতরম্ – বন্দে মাতরম্ …….
বন্দে মাতরম্৷৷
……………………….
তাং- ০১/০৫/২০২৩

দাসপুর, ঘাটাল, পশ্চিম মেদিনীপুর (w. B)