ঢাকা ০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কোনালের সঙ্গে বিপ্লব সাহার গান ‘তোমার চোখে চোখ পড়তেই’ Logo বরুড়ায় থাইল্যান্ড প্রবাসী নিহত আনোয়ার হোসেনের পরিবারের পাশে ইউএনও Logo গোদাগাড়ীতে ভিজিএফের ৮৮ বস্তা চাউল সহ দুইজন গ্রেফতার Logo বরুড়ায় জামায়াতে ইসলামীর ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo বুড়িচংয়ে সোলালী ব্যাংকে ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ দিয়ে গ্রাহককের টাকা ছিনতাই Logo কবরস্থানের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দে চাচাতো ভাইয়ের ঘুষিতে আ’লীগ নেতার মৃত্যু Logo বরুড়ায় বন কর্মকর্তার যোগসাজশে কাটা হচ্ছে রামমোহন হরিপুর সড়কের গাছ Logo ঈদে ১০ নাটক নিয়ে নির্মাতা এস.আই.সোহেল Logo রাঙ্গামাটিতে যৌথ উদ্যোগে ঈদ উপহার বিতরণ Logo চলচ্চিত্রের সাথে চীন ভ্রমণ : সিয়াংইয়াং থাংছেং ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বেস

এক ছেলের পর একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়ে বিপাকে দিনমজুর নাজমুল শেখ

অতনু চৌধুরী (রাজু)
বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি

অন্যের জমিতে কাজ করে কোনো রকম সংসার চলে নাজমুল শেখের। ঘরে একটি ৪ বছর বয়সী ছেলে রয়েছেন। এরই মাঝে নাজমুল শেখ – ঝুমুর বেগম দম্পতির ঘর আলো করে একসঙ্গে দুই পুত্র সন্তান ও এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়েছে। তাদের আগমনে পরিবারে খুশির আমেজের পরিবর্তে দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে।
নাজমুল শেখ (৩১) মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাঁশতলার রুচুমারি গ্রামের মোহাম্মদ আনসার শেখের ছেলে। তার স্ত্রী ঝুমুর বেগম (২৬) গত ৪ অক্টোবর রাতে খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে এক সঙ্গে দুই পুত্র সন্তান এক কন্যাসন্তান’সহ মোট তিন সন্তান প্রসব করেন।

জানা গেছে, সন্তানরা মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় ও জন্মের পর তাদের চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ করতে হয়েছে। ফলে দিনমজুর নাজমুল শেখের পক্ষে সংসার চালানোর পাশাপাশি তাদের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকালে নাজমুল শেখ – ঝুমুর বেগম দম্পতির সঙ্গে কথা হয়। তারা তিন সন্তানের চিকিৎসা শেষে খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরছিলেন। বাচ্চাদের ঠান্ডাজনিত সমস্যার কারণে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ২০দিন। এতে খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকার মতো। একসঙ্গে তিন সন্তানের ওষুধ কিনতে গিয়ে বিভিন্ন জনের কাছে ধারদেনা করতে হচ্ছে।

ঝুমুর বেগম বলেন, গত ২৫ দিন হয়েছেন ওদের জন্ম হয়েছে। খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি হওয়াতে কিছুটা সাশ্রয় হয়েছে। তানা হলে কি করতাম আল্লাহ ভালো জানেন। তিন বাচ্চা হওয়াতে ঠিকমতো দুধ পাচ্ছে না। টাকার অভাবে বাইরের কেনা দুধও খাওয়াতে পারছি না। আমরা গরিব-অসহায়, কেউ একটু সহযোগিতা করলে খুব উপকার হতো।

দিনমজুর নাজমুল শেখ বলেন, আমাদের কোনো জমি-জমা নেই। অন্যের জমিতে কৃষিকাজ ও মাটি কাটার কাজ করে সংসার চালাই। বড় এক ছেলে রয়েছে। তার বয়স ৪’বছর হওয়াতে কাজ করতে পারে না। ঠিকমতো সংসারই চালাতে পারি না। এর মধ্যে আরও তিন সন্তানের জন্ম দিয়ে বিপাকে পড়েছি। তাদের জন্য ঠিকমতো খাবার ও চিকিৎসা-ওষুধের ব্যবস্থা করতে পারছি না। ২০ দিনে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে ও ওষুধ কিনতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬০’হাজার টাকা।

ঝুমুর বেগম ছোট বোন লিমা খাতুন বলেন, একসঙ্গে জন্ম নেওয়া তিন সন্তানের নাম রাখা হয়েছে জহির শেখ, তহির শেখ ও হাজরা বেগম। তিন সন্তানকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে আমার বড় বোন। তাই আমাকে তাদের বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। টাকার অভাবে খুব সমস্যা হচ্ছে। ঠিকমতো বাইরের দুধ ও ওষুধপত্র কিনতে পারছি না।

খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু)ডা. আজিজুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন আগে নিউমোনিয়া নিয়ে একসঙ্গে তিন সন্তান জন্ম দেওয়া জননী হাসপাতালে ভর্তি হয়। তিন সন্তানের মধ্যে একজনের অবস্থা খুবই জটিল ছিল। কিন্তু এখন তারা চিকিৎসা শেষে মোটামুটি সুস্থ। তাদের হাসপাতাল থেকে গত ২৫’ তারিখে তাদের সন্তান দের রিলিজ দেওয়া হয়েছে। তিন শিশুর দৈনিক প্রায় ২৫০০ টাকা করে ওষুধপত্র লেগেছে। যা হাসপাতাল থেকেই সরবরাহ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, নাজমুল শেখের পরিবারটি একেবারেই গরিব-অসহায়। নাজমুল শেখের কিছুই নাই বললেই চলে। হাতে খাটে – পেটে খায়, এমন অবস্থা। এক ছেলের পর একসাথে তিন সন্তান হওয়া তার কাছে মরার উপর খাড়ার ঘা। নাজমুল শেখ আমাদের কাছে এসেছিল, কিছু আর্থিক সাহায্যের জন্য। কিন্তু আমাদের করনীয় তেমন কিছু নেই। তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’সহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের কাছে নাজমুল শেখ ও তার তিন সন্তানের জন্য সহযোগীতা কামনা করেন।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কোনালের সঙ্গে বিপ্লব সাহার গান ‘তোমার চোখে চোখ পড়তেই’

SBN

SBN

এক ছেলের পর একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়ে বিপাকে দিনমজুর নাজমুল শেখ

আপডেট সময় ০৭:২৮:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩

অতনু চৌধুরী (রাজু)
বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি

অন্যের জমিতে কাজ করে কোনো রকম সংসার চলে নাজমুল শেখের। ঘরে একটি ৪ বছর বয়সী ছেলে রয়েছেন। এরই মাঝে নাজমুল শেখ – ঝুমুর বেগম দম্পতির ঘর আলো করে একসঙ্গে দুই পুত্র সন্তান ও এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়েছে। তাদের আগমনে পরিবারে খুশির আমেজের পরিবর্তে দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে।
নাজমুল শেখ (৩১) মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাঁশতলার রুচুমারি গ্রামের মোহাম্মদ আনসার শেখের ছেলে। তার স্ত্রী ঝুমুর বেগম (২৬) গত ৪ অক্টোবর রাতে খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে এক সঙ্গে দুই পুত্র সন্তান এক কন্যাসন্তান’সহ মোট তিন সন্তান প্রসব করেন।

জানা গেছে, সন্তানরা মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় ও জন্মের পর তাদের চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ করতে হয়েছে। ফলে দিনমজুর নাজমুল শেখের পক্ষে সংসার চালানোর পাশাপাশি তাদের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকালে নাজমুল শেখ – ঝুমুর বেগম দম্পতির সঙ্গে কথা হয়। তারা তিন সন্তানের চিকিৎসা শেষে খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরছিলেন। বাচ্চাদের ঠান্ডাজনিত সমস্যার কারণে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ২০দিন। এতে খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকার মতো। একসঙ্গে তিন সন্তানের ওষুধ কিনতে গিয়ে বিভিন্ন জনের কাছে ধারদেনা করতে হচ্ছে।

ঝুমুর বেগম বলেন, গত ২৫ দিন হয়েছেন ওদের জন্ম হয়েছে। খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি হওয়াতে কিছুটা সাশ্রয় হয়েছে। তানা হলে কি করতাম আল্লাহ ভালো জানেন। তিন বাচ্চা হওয়াতে ঠিকমতো দুধ পাচ্ছে না। টাকার অভাবে বাইরের কেনা দুধও খাওয়াতে পারছি না। আমরা গরিব-অসহায়, কেউ একটু সহযোগিতা করলে খুব উপকার হতো।

দিনমজুর নাজমুল শেখ বলেন, আমাদের কোনো জমি-জমা নেই। অন্যের জমিতে কৃষিকাজ ও মাটি কাটার কাজ করে সংসার চালাই। বড় এক ছেলে রয়েছে। তার বয়স ৪’বছর হওয়াতে কাজ করতে পারে না। ঠিকমতো সংসারই চালাতে পারি না। এর মধ্যে আরও তিন সন্তানের জন্ম দিয়ে বিপাকে পড়েছি। তাদের জন্য ঠিকমতো খাবার ও চিকিৎসা-ওষুধের ব্যবস্থা করতে পারছি না। ২০ দিনে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে ও ওষুধ কিনতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬০’হাজার টাকা।

ঝুমুর বেগম ছোট বোন লিমা খাতুন বলেন, একসঙ্গে জন্ম নেওয়া তিন সন্তানের নাম রাখা হয়েছে জহির শেখ, তহির শেখ ও হাজরা বেগম। তিন সন্তানকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে আমার বড় বোন। তাই আমাকে তাদের বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। টাকার অভাবে খুব সমস্যা হচ্ছে। ঠিকমতো বাইরের দুধ ও ওষুধপত্র কিনতে পারছি না।

খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু)ডা. আজিজুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন আগে নিউমোনিয়া নিয়ে একসঙ্গে তিন সন্তান জন্ম দেওয়া জননী হাসপাতালে ভর্তি হয়। তিন সন্তানের মধ্যে একজনের অবস্থা খুবই জটিল ছিল। কিন্তু এখন তারা চিকিৎসা শেষে মোটামুটি সুস্থ। তাদের হাসপাতাল থেকে গত ২৫’ তারিখে তাদের সন্তান দের রিলিজ দেওয়া হয়েছে। তিন শিশুর দৈনিক প্রায় ২৫০০ টাকা করে ওষুধপত্র লেগেছে। যা হাসপাতাল থেকেই সরবরাহ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, নাজমুল শেখের পরিবারটি একেবারেই গরিব-অসহায়। নাজমুল শেখের কিছুই নাই বললেই চলে। হাতে খাটে – পেটে খায়, এমন অবস্থা। এক ছেলের পর একসাথে তিন সন্তান হওয়া তার কাছে মরার উপর খাড়ার ঘা। নাজমুল শেখ আমাদের কাছে এসেছিল, কিছু আর্থিক সাহায্যের জন্য। কিন্তু আমাদের করনীয় তেমন কিছু নেই। তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’সহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের কাছে নাজমুল শেখ ও তার তিন সন্তানের জন্য সহযোগীতা কামনা করেন।