চাঁদপুরের কচুুয়ায় মোবাইল ব্যবসায়ীকে মারধর করে মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে কিশোর গ্যাং নেতা শাকিল সাকেরকে গ্রেপ্তার করেছে কচুয়া থানা পুলিশ। গত ১৭ এপ্রিল রাতে ডুমুরিয়া গ্রামে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আহত ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন কচুয়া উপজেলার ৯ নং কড়ইয়া ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের মৃত হাফেজ মোঃ ছাদেক এর ছেলে।
সৃষ্ট ঘটনায় ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেনের বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে কিশোর গ্যাং নেতা শাকিল সাকের’কে (৪৩) আসামী করে কচুয়া থানায় একটি লিখিত এজহার দায়ের করেন। শাকিল সাকের একই গ্রামের মজুমদার বাড়ির মো. দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। সে ওই এলাকায় কিশোর গ্যাং এর নেতা হিসেবে ব্যাপক পরিচিত।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, শাকিল সাকের এলাকার উঠতি বয়সের ছেলেদের নিয়ে কিশোর গ্যাং তৈরি করেছে। তারা মাদক, ছিনতাই, মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী।
এজহার সুত্রে জানা যায়, গত ১৭ এপ্রিল রাতে ডুমুরিয়া গ্রামের ফরহাদ হোসেন মজুমদারের মুরগী ফার্মের সামনে রাস্তার উপর দোকান বন্ধ করে যাওয়ার পথে রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে কিশোর গ্যাং নেতা শাকিল সাকের নেতৃত্বে অজ্ঞাত নামা আরো ২/৩ জন দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বিল্লাল হোসেনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। শাকিলের হাতে থাকা কাঠের রুয়া দিয়ে বিল্লালের মাথায়, নাকে, মুখে এলোপাথাড়ী ভাবে পিঠিয়ে মুখের উপরের মাড়ির ১টি দাঁত ও নিচের মাড়ির ৩টি দাঁত ভেঙ্গে মারাত্মক ভাবে রক্তাক্ত জখম করে এবং বিল্লাল হোসেনের সাথে থাকা নগদ ৪ লক্ষ টাকা, বিকাশ, নগদ, রকেট ও ফ্লেক্সিলোডে ব্যবহৃত ২টি এন্ড্রোয়েড মোবাইল এবং ৩টি বাটন মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায় তারা। বিল্লাল হোসেনের ডাক চিৎকারে আশে পাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে মুম‚র্ষু অবস্থায় গ্রামবাসী তাকে উদ্ধার করে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিল্লাল হোসেনকে কুমিল্লা সরকারি মেডিকেল কলেজ হসপিটালে প্রেরণ করা হয়।
বিল্লাল হোসেনের বড় ভাই এই এজহারের বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম জানান, আমার ভাই দীর্ঘদিন যাবৎ মোবাইল, বিকাশ, নগদ, রকেট ও ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করে আসছে। গত ১৭ তারিখ রাত সাড়ে ৮টার সময় দোকান বন্ধ করে নিজ বাড়িতে যাওয়ার সময় শাকিল সাকের তার পথরোধ করে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে এবং সঙ্গে থাকা ৪ লক্ষ টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায় এবং ভবিষৎতে আমার ছোট ভাইকে এখানে ব্যবসা করতে দিবে না বলে হুমকি দেয় তারা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইব্রাহীম খলীল বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেছে। ফলে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। যার ফলে আসামী শাকিল সাকেরকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলা নং-১২/৯৩
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিল্লালের উপর হামলাকারীদের বিচারের দাবীতে ডুমুরিয়া বাজারে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেন।