
বিশেষ প্রতিনিধি
মাদারীপুর জেলার কালকিনিতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষি জমি ধ্বংস করে সড়ক নির্মানের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তোভোগীদের অভিযোগ, জমির ৩ দিক দিয়ে রাস্তা নির্মাণ বন্ধ করতে তারা কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর মেয়রের নিকট লিখিত আবেদন করে, তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো সুরাহা পান নাই। অনুসন্ধানে গিয়ে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের কৃষি জমির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মানের সঙ্গে জড়িত স্থানীয় প্রভাবশালীরা জমির মালিককে বিভিন্ন ভাবে ধামকি হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন কালকিনির উত্তর রাজদী হাসপাতাল রোড হইতে সেকান্দার বেপারী বাড়ী পর্যন্ত ৪৬৫ মিটার রাস্তা নির্মানের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়।
পরবর্তীতে ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ শুরু করে। তাতে দেখা গেছে আলতাফ হোসেন গং ও সাহানারা বকুলের ৬৬.৯১ শতাংশ কৃষি জমির ৩ দিক দিয়ে আঁকাবাঁকা রাস্তা নির্মাণ শুরু করেছে। তাতে তাদের কৃষি ও ভিটা জমি বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছে। জমির মালিকের ওয়ারিশ গংরা চাকরি সূত্রে ঢাকা ও প্রবাসে থাকায় তারা উক্ত বিষয়টি দেরিতে জানতে পেরেছেন বলে জানান।
উক্ত বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে তারা তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য,উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়রকে প্রথমে মৌখিকভাবে জানানোর পরে ও কোন প্রকাশ্য সুরাহা না হওয়ায়।
পরবর্তীতে লিখিত ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়রকে একই জমির তিন দিক দিয়ে রাস্তা নির্মাণ না করে এক দিক দিয়ে রাস্তা নির্মাণের জন্য অনুরোধ জানায়। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউই বিষয়টির সুরাহা করার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেনি। এদিকে, রাস্তা নির্মানকারী প্রভাবশালী ব্যক্তিরা উক্ত জমির ওয়ারিশ গংদের হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে জমির মালিকরা প্রভাবশালীদের হুমকির ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান।
ভুক্তভোগী জমির মালিকের একজন ওয়ারিশদার ইফতেখার আলম রাসেল জানান, আমরা দীর্ঘ দিন ধরে গ্রামে থাকি না। চাকরি সুবাদে ঢাকা ও দেশের বাইরে বসবাস করি। আমাদের জমির উপর দিয়ে ৩ পাশে রাস্তা নির্মাণের প্ল্যান করার বিষয়ে পৌরসভাসহ সরকারি সংস্থার কেউ আমাদেরকে কোনো প্রকার নোটিশ প্রদান করে নাই। হঠাৎ গ্রামের বাড়িতে এসে দেখি আমাদের কৃষি ও ভিটা জমির ৩ দিক দিয়ে রাস্তা নির্মাণ শুরু করেছে। তখন আমরা বাধা দেই। তাতে প্রভাবশালীরা আমাদের হুমকি দেয়। এখন ভয়ে আমরা গ্রামেও আসতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, আমরা রাস্তা দিতে অস্বীকার করছি না। তবে ৩ দিক দিকে রাস্তা নেয়ার কারণে আমাদের অনেক অপূরনীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। ক্ষতি হলেও আমরা চাই মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে আমাদের জমির এক পাশ দিয়ে রাস্তা নেওয়া হোক।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাস গণমাধ্যমকে জানান,স্থানীয় মেয়র ও চেয়ারম্যান কে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু পরবর্তীতে তারা এ বিষয়ে আর কোনো আপডেট জানায়নি।
মাদারীপুর জেলার কালকিনি পৌরসভার মেয়র এস এম হানিফ গণমাধ্যমকে জানান, আমি যখন রাস্তার জন্য মাপ দিয়েছি, প্ল্যান করেছি তখন তো কেউ বাধা দেয়নি। প্রতিবেদক মেয়ের এর কাছে জানতে চান যেহেতু জমির মালিকের ওয়ারিশ গংরা কর্মসূত্রে ঢাকায় এবং প্রবাসে থাকে সেহেতু আপনি বা আপনার দপ্তর পৌরসভা থেকে জমির ওয়ারিশ গংদের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল? প্রতিবেদকের প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে তিনি বলেন যেহেতু অভিযোগ করা হয়েছে,তাই বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করব।
অনুসন্ধান চলমান,,,