
এজে সোহেল স্টাফ রিপোর্টার
গত ১৭/৫/ ২৪ ইং তারিখ রোজ শুক্রবার টিকাচর এলাকার বাসিন্দা অটো রিক্সার ড্রাইভার পরান নিজ অটো নিয়ে সন্ধ্যা ছয়টার সময় বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। ।একই তারিখে ময়নামতি হাইওয়ে থানা পুলিশ কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানাধীন হারাতলী এলাকায় মহাসড়কে পৃষ্ঠ অবস্থায় একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে মৃতদেহটি অটো চালক পরানের বলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় পরনের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
বেশ কয়েক মাস যাবত কুমিল্লা মহানগরী সদর দক্ষিণ ও বুড়িচং এলাকায় একটি চক্র প্রায়ই অটো সিএনজি চুরি ঘটনা ঘটাচ্ছে, এটি জেলা পুলিশের নজরদারিতে আসে।
কুমিল্লার জেলা পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল ও জেলা ডিবি সমন্বয়ে একটি টিম গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় অটোচালক পরান হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত জাভেদকে গত ২৭ মে ২৪ ইং তারিখ রাত ৯:১৫ এর সময় কোতোয়ালির থানাধীন গোবিন্দপুর রেলগেট এলাকা হতে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে নিজে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং অন্যান্য সহযোগী আসামিদের নাম প্রকাশ করে ১/ মোঃ শহিদুল ইসলাম, আব্দুল শহিদ, জাবেদ হোসেন (২৬), পিতা মোঃ আব্দুল হাকিম মাতামৃত হাজরা বেগম গ্রাম শাকতলা ্যরাব অফিসের সামনে মুসলিম সরদারের বাড়ির সংলগ্ন নুরুমিয়া দ্বিতীয় তলা বাড়ি, সদর দক্ষিণ কুমিল্লা, মোহাম্মদ শরীফ( ২৫) পিতা মোঃ আব্দুর রব মাতা মৃত মনোয়ারা বেগম গ্রাম আম্বরপুর ৯ নং ওয়ার্ড মহিচাইল ইউনিয়ন পরিষদ সদর দক্ষিণ কুমিল্লা ২/ মোঃ রুবেল(২৮) পিতা দেলোয়ার হোসেন, মাতা দিলেরা বেগম, গ্রাম- শাকতলা, উত্তরপাড়া, মাস্টার বাড়ি , সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা ৩/আমির হোসেন (৩২) পিতা মৃত আরব রহমান, মাতা- মোসা: সানোয়ারা বেগম, গ্রাম- গোবিন্দপুর- নদীর পাড়, এক নং ওয়ার্ড, শুভপুর ইউপি, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্ল ৪/ মোঃ সোহাগ হোসেন, পিতা মৃত সুরুজ মিয়া, গ্রাম- গোবিন্দপুর উত্তরপাড়া মুন্সিবাড়ি, ১ নং ওয়ার্ড, শুভপুর ইউপি, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা।
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২৭ মে ২৪ ইং তারিখ রাত ১০ঃ৩০ মিনিটে অপর আসামি শরীফকে শাকতলা নিজ ভাড়া বাসা হতে গ্রেফতার করা হয়। সংশ্লিষ্ট অপর আসামি রুবেলকে ২৭ মে ২৪ ইং তারিখ ১১:৩০ মিনিটে আড়াইওরা সমিতি পাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ২৭ মে ২৪ ইং তারিখ ৩:৩০ মিনিটের সময় চৌদ্দগ্রাম থানাধীন শুভপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আমির হোসেনের গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে সাতটি অটো রিক্সা, চারটি অটোরিক্সার ব্যাটারি ও বেশ কিছু অটোরিকশা যন্ত্রাংশ উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। গ্যারেজ মালিক আমির হোসেন ও তার সহযোগী সোহাগকে গ্রেপ্তারপূর্বক জিজ্ঞাসা বাদে জানা যায় তারা দীর্ঘদিন যাবত চোরাই অটো রিক্সা কিনে তাৎক্ষণিকভাবে রং সহ নানা রকম পরিবর্তন ঘটিয়ে অন্যএ বিক্রয় করে আসছে। গত ১৭ই মে ২৪ ইং তারিখ হত্যাকাণ্ডের স্বীকার পরান এর অটোটিও আমির অন্য একটি মাধ্যম জাবেদের নিকট হতে ক্রয় করে মর্মে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় চক্রটি দীর্ঘদিন যাবত সন্ধ্যায় মহানগরীসহ আশপাশ এলাকা হতে কৌশলে অটো রিক্সা ভাড়া নিয়ে কৌশলে অটো রিক্সার ড্রাইভারকে বিশেষ উপায়ে তৈরি চেতনাশক মিশ্রিত বিস্কুট, কোমল পানীয় খাইয়ে মহাসড়কে ড্রাইভারকে পেলে অটোরিকশাটি নিয়ে চলে যায়। চেতনাহীন ড্রাইভার মহাসড়কের যানবাহনে পিষ্ঠ হয়ে মৃত্যুবরণ করে।
জিজ্ঞাসাবাদে চক্রটি বেশ কয়েকটি ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। অটো রিক্সা চুরির একজন দলনেতা সকলকে পরিচালনা ও দিক-নির্দেশনা প্রদান করে থাকে, খুব শীঘ্রই তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জেলা পুলিশ সুপার জানান।