জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে গ্রাহকদেরর পাঁচ কোটিরও বেশি টাকা নিয়ে গ্রামীণ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের এনজিও কর্মকর্তা চন্দ্রলাল রবিদাস উধাও হয়েছেন। ফলে বিপাকে পড়েছে শত শত গ্রাহক।
স্থানীয়রা জানান, এনজিওটি ২০১৩ সালে উপজেলা সমবায় কর্তৃক নিবন্ধন নিয়ে উপজেলার কৃষি ব্যাংক মোড় সংলগ্ন ভবনের দ্বিতীয় তলায় অফিস ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। চারজন আদায়কারী নিয়োগ করে এলাকায় ডিপিএসে ১৫ শতাংশ এবং এফডিআরে দ্বিগুণ লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ শুরু করে।
তাদের বিশ্বাস করে এলাকার অনেক মানুষ ডিপিএস, এফডিআর ও সঞ্চয় করেন। এরই মধ্যে কিছু গ্রাহক সঞ্চয় ফেরত চাইলে এনজিও কর্মকর্তা চন্দ্রলাল রবিদাস টালবাহানা করতে থাকেন।
উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের নাফিজুর রহমান নাহিদ বলেন, আমার মায়ের পেনশনের ১২ লাখ টাকা এফডিআর হিসাবে জমা রাখি। মাসে ১ হাজার ৫০০ টাকা লভ্যাংশ দেয়ার কথা থাকলেও এক টাকাও পাইনি। এখন দেখছি সমিতি উধাও। আমার মা এই চিন্তায় শয্যাশায়ী।
গনেশপুর গ্রামের আদিবাসী সাঙ্গাল উড়াও বলেন, জমি বিক্রির চার লাখ টাকা জমা করি। এখন অফিসে দেখছি তালা। আমি এখন কী করে খাব?
শিমুলতলী গ্রামের রুনা মার্জিয়া বানু জানান, লাভের আশায় সমিতিতে চার লাখ টাকা জমা রাখি। অফিস উধাওয়ের খবরে সংসার এখন ভাঙনের মুখে।
সমিতির মাঠ কর্মকর্তা রাশেদ মণ্ডল বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী ১০ লাখ টাকা জামানত দিয়ে ২২ হাজার টাকা মাসিক বেতনে চাকরি নিই। নিজের নামে চার লাখ এবং স্ত্রীর নামেও তিন লাখ টাকা সঞ্চয় রাখি। তবে অনেক দিন থেকে সেখানে বেতন দেয় না। এখন ছেলেমেয়ে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
পাঁচবিবি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সমাজকর্মী এস কে হক, ব্যবসায়ী আহসানুল হক বিপ্লবসহ এলাকাবাসী বলেন, গ্রামীণ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড শত শত গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। আশা করি সমবায় অফিস এ সমিতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
এ বিষয়ে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা লুৎফুল কবীর বলেন, গ্রামীণ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের একটি সমিতি বন্ধের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। রিপোর্ট পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।