শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ
ঘুষ ছাড়া কাজ না করার অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মো. আলী আকবর ও তার অফিস সহায়ক রাজ্জাকের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি, হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন এই দুজনের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীরা আরও বলছেন, কেউ এর প্রতিবাদ করলে তাকে নানান ভাবে হয়রানি করেন এই ভূমি কর্মকর্তা।
জয়নগর এলাকার বাবুল হাওলাদার জানান, সম্প্রতি স্থানীয় ব্যবসায়ী বাসার মোল্লা জয়নগর বাজারে দোকান ঘর তুলতে গেলে তাকে বাধা দেন তহশিলদার আলী আকবর। পরে তার কাছ থেকে টাকা চাইলে এ নিয়ে আলী আকবরের সঙ্গে বাসার মোল্লার বাকবিতণ্ডা হয়।
এরপর বাসার মোল্লা, বাবুল হাওলাদারসহ চারজনের বিরুদ্ধে শরীয়তপুর আদালতে মামলা করেন তহশিলদার আলী আকবর। সেই মালায় চারজনই বর্তমানে জামিনে আছেন। তুচ্ছ ঘটনায় এভাবেই মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানান বাবুল হাওলাদার।
বড় গোপালপুর টেকেরকান্দি গ্রামের সেলিম ব্যাপারী বলেন, জমির খাজনা বাবদ আমার কাছ থেকে নগদ ২ হাজার টাকা নিয়ে ১ হাজার টাকার একটি রশিদ দেন তহশিলদার ও তার অফিস সহায়ক। কাগজপত্র সম্পর্কে আমার ধারনা নেই। আমি খাজনা দিয়ে বাড়িতে গেলে আমার ভাই বিষয়টি ধরতে পারেন।
জয়নগর মোল্লাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আবু বকর রনি বলেন, সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ভূমি অফিসে একটি কাগজের জন্য গেলে তহসিলদার আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এছাড়া তিনি কম টাকার রশিদ দিয়ে বাড়তি টাকা নিচ্ছেন।
ওই এলাকার আরও একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, জয়নগর ও বড় গোপালপুর ইউনিয়ন নিয়ে জয়নগর ইউনিয়ন ভূমি অফিস। সেই অফিসে মিউটেশন, খাজনা, পর্চা, খাসজমি বন্দোবস্ত, জমির খাজনা দিতে গেলে জয়নগরের তহসিলদার ও তার অফিস সহায়ক সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে দ্বিগুণ টাকা নিচ্ছেন।
তবে অভিযুক্ত মো. আলী আকবর টাকা নেয়ার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি জমির খাজনা বাবদ কারো কাছ থেকে বাড়তি কোন টাকা নিই না। আর আমি পর্চাতো দিই না।’
জাজিরা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেনু দাস এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তদন্ত করবো, অভিযোগ প্রমানিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসমাউল হুসনা লিজা এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’