ঢাকা ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কোনালের সঙ্গে বিপ্লব সাহার গান ‘তোমার চোখে চোখ পড়তেই’ Logo বরুড়ায় থাইল্যান্ড প্রবাসী নিহত আনোয়ার হোসেনের পরিবারের পাশে ইউএনও Logo গোদাগাড়ীতে ভিজিএফের ৮৮ বস্তা চাউল সহ দুইজন গ্রেফতার Logo বরুড়ায় জামায়াতে ইসলামীর ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo বুড়িচংয়ে সোলালী ব্যাংকে ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ দিয়ে গ্রাহককের টাকা ছিনতাই Logo কবরস্থানের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দে চাচাতো ভাইয়ের ঘুষিতে আ’লীগ নেতার মৃত্যু Logo বরুড়ায় বন কর্মকর্তার যোগসাজশে কাটা হচ্ছে রামমোহন হরিপুর সড়কের গাছ Logo ঈদে ১০ নাটক নিয়ে নির্মাতা এস.আই.সোহেল Logo রাঙ্গামাটিতে যৌথ উদ্যোগে ঈদ উপহার বিতরণ Logo চলচ্চিত্রের সাথে চীন ভ্রমণ : সিয়াংইয়াং থাংছেং ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বেস

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস পালন

মোহাম্মদ আজগার আলী, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের ব্যানারে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ১৭তম ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস পালন করা হয়েছে।

(২৬ আগস্ট) শনিবার সকাল থেকেই ছোট-বড় সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে, কালোব্যাচ ধারন, শোক র‌্যালী, শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ অর্পনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করছেন ফুলবাড়ীর সর্বস্তরের জনগণ। সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের ব্যানারে একটি শোকর‌্যালী বের করে ফুলবাড়ীবাসী। র‌্যালীটি শহর প্রদক্ষিন করে ২০০৬ সালের নিহতদের শহীদ স্মৃতিস্তমে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ বেদীতে পুস্পার্ঘ অর্পন ও শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। শপথবাক্য পাঠে নেতৃত্বদেন ফুলবাড়ী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও ফুলবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র মুরতুজা সরকার মানিক।

অপরদিকে তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ এর নেতৃত্বে একটি শোক র‌্যালী শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে ২৬ আগস্ট নিহতদের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করেন। এসময় গন সংহতির সমন্বয়ক জুনাইদ সাকি, কেন্দ্রিয় জাতীয় গনফ্রন্ট এর সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার সদস্য সচিব সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মোশারফ হোসেন নান্নু, বাংলাদেশ সাম্যবাদি আন্দোলন, দিনাজপুর জেলা শাখার সমন্বয়ক মনিরুজ্জামান প্রমূখ।

এদিকে ফুলবাড়ী পৌর মেয়র মোঃ মাহমুদ আলম লিটনের নেতৃত্বে ফুলবাড়ীবাসীর পক্ষে একটি শোক র‌্যালী বের করা হয় । র‌্যালী শেষে পৌর মেয়র ২৬ আগস্ট নিহতদের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করেন। এসময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোহাম্মদ আলী, প্যানেল মেয়র-২ হারান দত্তসহ পৌসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য যে, ২০০৬ সালের ২৬ আগষ্ট। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল, জাতীয় সম্পদ রক্ষা এবং বিদেশী কোম্পানী এশিয়া এনার্জীকে ফুলবাড়ী থেকে প্রত্যাহারের দাবীতে সকাল থেকেই ফুলবাড়ীর ঢাকা মোড়ে ফুলবাড়ী, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ ও পার্বতীপুর উপজেলার হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হতে থাকে। দুপুর ২টার দিকে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ও ফুলবাড়ী রক্ষা কমিটির নেতৃত্বে বিশাল প্রতিবাদ মিছিলটি এশিয়া এনার্জীর অফিসের দিকে এগুতে থাকলে স্থানীয় নিমতলা মোড়ে প্রথমে পুলিশ বাধা প্রদান করে। পুলিশের বাঁধা পেয়ে বিশাল মিছিলটিতে অংশ নেওয়া হাজার হাজার জনগণ আরো বেশি প্রতিবাদি হয়ে উঠে। তারা পুলিশ-বিডিআর-এর বেড়িকেট ভেঙ্গে সামনে এগুতে থাকলে মিছিলটি দ্বিতীয়বার ছোট যমুনা ব্রীজে পুলিশ ও বিডিআরের যৌথবাঁধার সামনে থেমে যায়। এসময় আন্দোলনকারী স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে প্রশাসনের আলাপ আলোচনা মাধ্যমে কর্মসূচি প্রত্যাহার ঘোষনা করার পূর্ব মুহুর্তে আন্দোলনকারীদের উপর অতর্কিত টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়। বিডিআরের গুলিতে এসময় নিহত হয় আল আমিন, সালেকীন ও তরিকুল। আহত হয় ২ শতাধিক আন্দোলনকারী জনতা। এরপর ফুলবাড়ীবাসী ধর্মঘটের মাধ্যমে এলাকায় অচলাবস্থা সৃষ্টি করে। বাধ্য হয়ে তৎকালীন সরকার ফুলবাড়ীবাসীর সাথে এশিয়া এনার্জিকে দেশ থেকে বহিস্কার, দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা হবে না সহ ৬ দফা চুক্তি করলে এলাকাবাসী ধর্মঘট প্রত্যাহার করে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কোনালের সঙ্গে বিপ্লব সাহার গান ‘তোমার চোখে চোখ পড়তেই’

SBN

SBN

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস পালন

আপডেট সময় ০৩:৫০:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৩

মোহাম্মদ আজগার আলী, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের ব্যানারে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ১৭তম ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস পালন করা হয়েছে।

(২৬ আগস্ট) শনিবার সকাল থেকেই ছোট-বড় সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে, কালোব্যাচ ধারন, শোক র‌্যালী, শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ অর্পনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করছেন ফুলবাড়ীর সর্বস্তরের জনগণ। সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের ব্যানারে একটি শোকর‌্যালী বের করে ফুলবাড়ীবাসী। র‌্যালীটি শহর প্রদক্ষিন করে ২০০৬ সালের নিহতদের শহীদ স্মৃতিস্তমে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ বেদীতে পুস্পার্ঘ অর্পন ও শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। শপথবাক্য পাঠে নেতৃত্বদেন ফুলবাড়ী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও ফুলবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র মুরতুজা সরকার মানিক।

অপরদিকে তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ এর নেতৃত্বে একটি শোক র‌্যালী শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে ২৬ আগস্ট নিহতদের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করেন। এসময় গন সংহতির সমন্বয়ক জুনাইদ সাকি, কেন্দ্রিয় জাতীয় গনফ্রন্ট এর সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার সদস্য সচিব সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মোশারফ হোসেন নান্নু, বাংলাদেশ সাম্যবাদি আন্দোলন, দিনাজপুর জেলা শাখার সমন্বয়ক মনিরুজ্জামান প্রমূখ।

এদিকে ফুলবাড়ী পৌর মেয়র মোঃ মাহমুদ আলম লিটনের নেতৃত্বে ফুলবাড়ীবাসীর পক্ষে একটি শোক র‌্যালী বের করা হয় । র‌্যালী শেষে পৌর মেয়র ২৬ আগস্ট নিহতদের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করেন। এসময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোহাম্মদ আলী, প্যানেল মেয়র-২ হারান দত্তসহ পৌসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য যে, ২০০৬ সালের ২৬ আগষ্ট। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল, জাতীয় সম্পদ রক্ষা এবং বিদেশী কোম্পানী এশিয়া এনার্জীকে ফুলবাড়ী থেকে প্রত্যাহারের দাবীতে সকাল থেকেই ফুলবাড়ীর ঢাকা মোড়ে ফুলবাড়ী, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ ও পার্বতীপুর উপজেলার হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হতে থাকে। দুপুর ২টার দিকে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ও ফুলবাড়ী রক্ষা কমিটির নেতৃত্বে বিশাল প্রতিবাদ মিছিলটি এশিয়া এনার্জীর অফিসের দিকে এগুতে থাকলে স্থানীয় নিমতলা মোড়ে প্রথমে পুলিশ বাধা প্রদান করে। পুলিশের বাঁধা পেয়ে বিশাল মিছিলটিতে অংশ নেওয়া হাজার হাজার জনগণ আরো বেশি প্রতিবাদি হয়ে উঠে। তারা পুলিশ-বিডিআর-এর বেড়িকেট ভেঙ্গে সামনে এগুতে থাকলে মিছিলটি দ্বিতীয়বার ছোট যমুনা ব্রীজে পুলিশ ও বিডিআরের যৌথবাঁধার সামনে থেমে যায়। এসময় আন্দোলনকারী স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে প্রশাসনের আলাপ আলোচনা মাধ্যমে কর্মসূচি প্রত্যাহার ঘোষনা করার পূর্ব মুহুর্তে আন্দোলনকারীদের উপর অতর্কিত টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়। বিডিআরের গুলিতে এসময় নিহত হয় আল আমিন, সালেকীন ও তরিকুল। আহত হয় ২ শতাধিক আন্দোলনকারী জনতা। এরপর ফুলবাড়ীবাসী ধর্মঘটের মাধ্যমে এলাকায় অচলাবস্থা সৃষ্টি করে। বাধ্য হয়ে তৎকালীন সরকার ফুলবাড়ীবাসীর সাথে এশিয়া এনার্জিকে দেশ থেকে বহিস্কার, দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা হবে না সহ ৬ দফা চুক্তি করলে এলাকাবাসী ধর্মঘট প্রত্যাহার করে।