ঢাকা ০৪:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo গাইবান্ধায় আগুনে পুড়লো ৫ দোকান; ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি Logo চট্টগ্রামে বিপুল পরিমান দেশি-বিদেশী মাদক ও ২ টি দেশীয় অস্ত্র জব্দ Logo আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে চাঁদপুরে এক আইনজীবীর সনদ স্থগিত Logo জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ পেলেন মুহাম্মদ আবু আবিদ Logo লবণচরা প্রেসক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন Logo মুরাদনগরে এসএসসি পরীক্ষায় নকল সরবরাহে যুবকের কারাদণ্ড Logo কর্ণফুলী শিল্প বিল্ডার্স থেকে অধিকমূল্যে জাহাজ ক্রয় ও ড্রেজার নির্মাণে অভিযোগে Logo ১৫ বছর পর ঢাকায় বৈঠকে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিবরা Logo সিলেটে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েই শঙ্কা Logo কক্সবাজারে আধুনিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র নির্মাণ সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

রাকিবুল ইসলাম রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার তারাবো উত্তরপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের মাঝে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলি-ককটেল বিস্ফোরণ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

৩০মে বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার বিভিন্ন দোকানপাট ও বসতবাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে ঘরে থাকা টিভি, ফ্রিজ, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুটপাট করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় তারাবো কাজীপাড়া গ্রামের ইয়াছিন মিয়ার ছেলে লালুমিয়া(২৪) গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় হৃদয় খাঁন (২৫) নামের এক জনকে আটক করেছে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাদক ও কিশোরগ্যাংকে কেন্দ্র করে রোবেল, আকবর বাদশা ও শ্রাবণ বাহিনী মাদক ও কিশোরগ্যাংকে কেন্দ্র করে কিছু দিন পরপর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের দোকান, ঘরবাড়ি ভাংচুর করে লুটপাট চালায়। এ বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এখানে চুরি, ছিনতাই, রোড ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধের সঙ্গে দুইটি কিশোর গ্যাংয়ের বাহিনী জড়িত।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ওই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা বকুল ভূইয়ার ছেলেকে তুচ্ছ ঘটনা কে কেন্দ্র করে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে ওই বাহিনীর সদস্যরা। সেই বাহিনীর নেতৃত্ব দেয় তারাবো এলাকার, রোবেল মিয়া, শ্রাবণ ও আকবর বাদশা। তাদের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে শিমুলকে মারধর করেন রোবেল মিয়া, শ্রাবণ ও আকবর বাদশা বাহিনীর লোকজন।

এ নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে চনপাড়া পূনরবাসন কেন্দ্র এলাকা থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের সদস্যরা রামদা, চাপাতি, পিস্তলসহ নানা ধরণের অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাত ১০টার দিকে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ফাঁকা গুলি বর্ষণ, ককটেল বিস্ফোরণ ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সংঘর্ষে পথচারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কহিনুর বেগম, বাদল মিয়া ও গুলিবিদ্ধ রাকিবসহ তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পরে উভয় পক্ষের সন্ত্রাসীরা তারাবো পৌরসভার তারাবো উত্তরপাড়া ভুঁইয়া বাড়ি এলাকার মোতাহার, আরজু ভুইয়া, মেহের ভুইয়ার ঘরবাড়ি ভাংচুর করে। প্রতিবন্ধি ফরহাদ বানুকে মারধর করে বাড়ি ভাংচুর করে ১ ভরি স্বর্ণের চেইন ও ৮আনা কানের দুল লুটপাট করে। নজরুল ইসলাম চৌধুরীর বাড়ি ও অফিস ভাংচুর করে , মোজাম্মেল চৌধুরী, সুরুজ প্রধানের, হাসেম ভুইয়ার, মনসুর আলী, আমিনুল প্রধানের ঘরবাড়ি ভাংচুর করে। দক্ষিণ তারাবো এলাকার মনসুর আলীর ভাড়াটিয়াদের ১০ ভড়ি স্বর্ণালংকার, ১৫টি ফ্রিজ, ১০ টি টিভি, নগদ ৫লাখ টাকা লুটে নেয়, বাজারে থাকা আব্দুল সাত্তারের মুদিমনোহরী দোকানে হামলা চালিয়ে ফ্রিজ ভাংচুর ও মালামাল লুট করে। পান ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদের পান লুট করে, আমিনুল ইসলামের মালিকানাধীন সাদিয়া ট্রেডার্স নামক প্রতিষ্ঠান থেকে টিন ও টাকা লুট করে, রফিক মিয়ার মালিকানাধীন দোকান থেকে ফল লুট করা হয়।

লুট হয় কোরবান আলীর ভ্যারাইটিজ দোকানঘর, বিকাশ ও মোবাইল ব্যবসায়ী রাসেল মিয়ার গলায় ছুড়ি ধরে ১০টি মোবাইল লুট করে, শাওন মিয়ার মালিকানাধীন ইলেট্রনিক্স দোকান থেকে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়, নিরীহ কবির ভুইয়া, হাজী তোফাজ্জল হোসেন, তামিম মিয়া, হাশে ভুইয়া, শামিম প্রধান, সুরুজ প্রধান, তাবেল, হাবু ভুইয়ার বসতঘরে প্রবেশ করে হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে লুটপাট করে সন্ত্রাসীরা। শুধু তাই নয়, তারাব বাজারে অবস্থিত সাপ্তাহিক রূপকন্ঠ পত্রিকা অফিস ভবনের গøাস ভাংচুর চালায় সন্ত্রাসীরা। হামলা চালায় তারাবো পৌরসভার চারবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর আমির হোসেনের মুদি দোকানে।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ হৃদয় খাঁন নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)সহ থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গাইবান্ধায় আগুনে পুড়লো ৫ দোকান; ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি

SBN

SBN

রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

আপডেট সময় ১০:২৩:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪

রাকিবুল ইসলাম রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার তারাবো উত্তরপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের মাঝে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলি-ককটেল বিস্ফোরণ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

৩০মে বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার বিভিন্ন দোকানপাট ও বসতবাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে ঘরে থাকা টিভি, ফ্রিজ, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুটপাট করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় তারাবো কাজীপাড়া গ্রামের ইয়াছিন মিয়ার ছেলে লালুমিয়া(২৪) গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় হৃদয় খাঁন (২৫) নামের এক জনকে আটক করেছে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাদক ও কিশোরগ্যাংকে কেন্দ্র করে রোবেল, আকবর বাদশা ও শ্রাবণ বাহিনী মাদক ও কিশোরগ্যাংকে কেন্দ্র করে কিছু দিন পরপর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের দোকান, ঘরবাড়ি ভাংচুর করে লুটপাট চালায়। এ বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এখানে চুরি, ছিনতাই, রোড ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধের সঙ্গে দুইটি কিশোর গ্যাংয়ের বাহিনী জড়িত।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ওই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা বকুল ভূইয়ার ছেলেকে তুচ্ছ ঘটনা কে কেন্দ্র করে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে ওই বাহিনীর সদস্যরা। সেই বাহিনীর নেতৃত্ব দেয় তারাবো এলাকার, রোবেল মিয়া, শ্রাবণ ও আকবর বাদশা। তাদের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে শিমুলকে মারধর করেন রোবেল মিয়া, শ্রাবণ ও আকবর বাদশা বাহিনীর লোকজন।

এ নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে চনপাড়া পূনরবাসন কেন্দ্র এলাকা থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের সদস্যরা রামদা, চাপাতি, পিস্তলসহ নানা ধরণের অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাত ১০টার দিকে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ফাঁকা গুলি বর্ষণ, ককটেল বিস্ফোরণ ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সংঘর্ষে পথচারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কহিনুর বেগম, বাদল মিয়া ও গুলিবিদ্ধ রাকিবসহ তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পরে উভয় পক্ষের সন্ত্রাসীরা তারাবো পৌরসভার তারাবো উত্তরপাড়া ভুঁইয়া বাড়ি এলাকার মোতাহার, আরজু ভুইয়া, মেহের ভুইয়ার ঘরবাড়ি ভাংচুর করে। প্রতিবন্ধি ফরহাদ বানুকে মারধর করে বাড়ি ভাংচুর করে ১ ভরি স্বর্ণের চেইন ও ৮আনা কানের দুল লুটপাট করে। নজরুল ইসলাম চৌধুরীর বাড়ি ও অফিস ভাংচুর করে , মোজাম্মেল চৌধুরী, সুরুজ প্রধানের, হাসেম ভুইয়ার, মনসুর আলী, আমিনুল প্রধানের ঘরবাড়ি ভাংচুর করে। দক্ষিণ তারাবো এলাকার মনসুর আলীর ভাড়াটিয়াদের ১০ ভড়ি স্বর্ণালংকার, ১৫টি ফ্রিজ, ১০ টি টিভি, নগদ ৫লাখ টাকা লুটে নেয়, বাজারে থাকা আব্দুল সাত্তারের মুদিমনোহরী দোকানে হামলা চালিয়ে ফ্রিজ ভাংচুর ও মালামাল লুট করে। পান ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদের পান লুট করে, আমিনুল ইসলামের মালিকানাধীন সাদিয়া ট্রেডার্স নামক প্রতিষ্ঠান থেকে টিন ও টাকা লুট করে, রফিক মিয়ার মালিকানাধীন দোকান থেকে ফল লুট করা হয়।

লুট হয় কোরবান আলীর ভ্যারাইটিজ দোকানঘর, বিকাশ ও মোবাইল ব্যবসায়ী রাসেল মিয়ার গলায় ছুড়ি ধরে ১০টি মোবাইল লুট করে, শাওন মিয়ার মালিকানাধীন ইলেট্রনিক্স দোকান থেকে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়, নিরীহ কবির ভুইয়া, হাজী তোফাজ্জল হোসেন, তামিম মিয়া, হাশে ভুইয়া, শামিম প্রধান, সুরুজ প্রধান, তাবেল, হাবু ভুইয়ার বসতঘরে প্রবেশ করে হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে লুটপাট করে সন্ত্রাসীরা। শুধু তাই নয়, তারাব বাজারে অবস্থিত সাপ্তাহিক রূপকন্ঠ পত্রিকা অফিস ভবনের গøাস ভাংচুর চালায় সন্ত্রাসীরা। হামলা চালায় তারাবো পৌরসভার চারবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর আমির হোসেনের মুদি দোকানে।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ হৃদয় খাঁন নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)সহ থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।