
গুজব ভাইরাসের মত মানুষ হতে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। প্রত্যেকটি গুজব বা মিথ্যা খবরের পিছনে কিছু দুষ্ট ও বিকৃতি মানসিকতার মানুষ জড়িত থাকে। তারা অত্যান্ত সুকৌশলে উদ্যেশ্য মুলক ভাবে এর সুচনা করে। অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই এটি সৃষ্টিকারীদের সঠিক ভাবে সনাক্ত করা সম্ভব হয় না। তবে এটি দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরে আসলে তারা প্রকৃত রটনাকারীদের সহজেই সনাক্ত করতে পারেন।
মানুষ যখন অনিশ্চয়তার মধে থাকে, হতাশায় ভোগে ভীত সন্ত্রস্ত থাকে তখন তথ্য বা খবর গুরুত্বপুর্ন হয়ে ওঠে। যা গুজব সৃষ্টিকারীদের জন্য অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করে। যে সকল গুজব বা মিথ্যা খবর মানুষের জীবন ও আয় রোজগারের সাথে সম্পর্কিত সে সব তথ্য বা মিথ্যা খবর দ্রুত ছড়ায়। অনেক সময় মানুষের প্রয়োজনীয় তথ্যের প্রবাহ বন্দ হয়ে গেলে ইহা সৃষ্টিকারীরা মিথ্যা বা আজগবি খবর প্রচার করে মানুষের তথ্যের চাহিদা পুরন করে। আবার অনেকে তার নিজেস্ব মত বা বিশ্বাসের সাথে মিলে যাওয়া গুজবগুলি দ্রুত ছড়িয়ে দেয় অন্যের মাঝে। অনেক ক্ষেত্রে ফুলিয়ে ফাঁফিয়ে তা প্রচার করে। অসৎ উদ্যেশ্য হাসিলের জন্য।
স্বার্থন্বেষী মহল বা কোন গ্রুপ তাদের চাহিদার জন্য এটি ছড়িয়ে থাকে। নির্বাচন, দলাদলি বা অবৈধভাবে ব্যাবসায়ীক লাভের জন্য বা অন্য কোন সংকির্ন কারনে এটি ছড়িয়ে মহল বিশেষ সুবিধা অর্জনের চেষ্টা করে। দুঃস্কৃতকারী ও সন্ত্রাসীরা ত্রাস সৃষ্টির জন্য এটি রটিয়ে থাকে। সাধারনত সন্ত্রাসিদের দল ছোট থাকে তাই ব্যাপক মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টির মধ্যে এটি রটায়। আমাদের দেশে ঘৃণ্য উদ্যেশ্য চরিতার্থ করতে অনেক ক্ষেত্রে ধর্মের অপবাবহার এর মাধ্যমে, রাজনিতির আবারনে বা দক্ষলদারিত্বের লক্ষে অনেক মতলববাজ গ্রুপ গুজব সৃষ্টি করে সমাজ কে ভীত সন্ত্রস্ত করার চেষ্টা করতে পারে।
সবচেয়ে বেশী গুজব সৃষ্টি হয় কোন জনগুরুত্বপুর্ন বিষয়ে আগাম সতর্কতা নিয়ে। বিশেষ করে দুর্যোগ- দুর্বিপাক অথবা মহামারি দুর্ভিক্ষের সময় বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাপক গুজব প্রচারিত হয়। গুজবের কোন বিষয়ে জনগনের ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হতে পারে। যেমন কোভিড-১৯ কালে বিভিন্ন ভুয়া ও টোটকা অপচিকিৎসার পরামর্শ ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল।
গুজব সমাজের জন্য অতান্ত ক্ষতিকর। ইহা সমাজে অনেক সমস্যা সৃষ্টি করে। যেমন সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি বিনষ্ট করে এতে কোন বেক্তি বা গোষ্টি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগস্থ হতে পারে। এর ফলে বাজারে দৈনন্দিন বা জীবন রর্ক্ষাকারী সামগ্রির সংকট সৃষ্টি করে কিছু বেক্তি লাভবান হয়। এটি অনেক সময় উৎপাদকের পন্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যার ফলে পন্যের সাভাবিক উৎপাদন ও সরবারাহ ব্যাহত হয়। এটি অনেক সময় সহজ সরল ও আবেগ প্রবন মানুষদের নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটায়। এতে সমাজের মধ্যে অনেক অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। এটি বিশ্বাস করে অনেক মানুষ স্থাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন পরিবার এবং সমাজে ভাইরাসের সংক্রমন বাড়াতে পারে।
এই গুজব কে প্রতিরোধ করে, সমাজ কে রক্ষা করার দায়িত্ব প্রত্যেকটি সচেতন সুনাগরিকের। সমাজের সচেতন নাগরিকরা এটি বন্ধে বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ গ্রহন করতে পারে। এটি প্রতিরোধের জন্য বর্তমান ও ভবিষ্যত নেতাকর্মীদের সব সময় সজাগ এবং সতর্ক থাকতে হবে। ইহার মূল তথ্য ও উদ্যেশ্য সম্পর্কে জানতে হবে। প্রয়োজনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কে আগে থেকে জানানো যেতে পারে। এতে গুজবের ডালপালা বিস্তারের আগেই তা উম্মোচন করা সম্ভব হবে।
কোন বিষয়ে গুজব বা মিথ্যা সম্পর্কে জানলে চুপ করে বসে না থেকে এর বিরুদ্ধে প্রচার করতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ ভাবে এটি প্রতিরোধ করতে হবে।
সমাজের প্রত্যেকটি সুনাগরিক কে দায়িত্ব নিয়ে গুজব এবং মিথ্যা সংবাদ প্রতিরোধ করতে হবে তাহলে সমাজে শান্তি ও স্বস্তি প্রতিষ্টা হবে। গুবব কে না বলুন সমাজে শান্তি – ও স্বস্তি প্রতিষ্ঠা করুন।