মোঃ ওয়াহিদ : অর্থের বিনিময়ে বিএনপি ও প্রশাসনের কেউ কেউ আওয়ামিলীগকে পুনর্বাসন করছে /গণহত্যাকারীদের বিচার না করতে পারলে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে / গণহত্যার বিচার ও আওয়ামিলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ডিসিকে স্মারকলিপি প্রদান / জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে
/ভারতের সহযোগিতায় দিল্লিতে বসে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে - আবু হানিফ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি সেই বাংলাদেশে এখনো আমরা দেখছি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, যারা আমাদের ভাইরের উপরে গুলি চালিয়েছিল, যারা আমাদের ছাত্র জনতার উপর নির্মমভাবে হামলা করেছিল তারা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই আপনাদের ৬ মাস হয়ে গেছে, আপনাদের ‘হানিমুন পিরিয়ড’ শেষ হয়েছে। কিন্তু আপনারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের হামলায় জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নিতে পারেন নাই। অর্থের বিনিময়ে বিএনপি ও প্রশাসনের কেউ কেউ আওয়ামিলীগকে পুনর্বাসন করছে। আমরা স্পষ্ট বলছি গণহত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কিশোরগঞ্জে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণহত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।
প্রধান অতিথির বক্তব্য আবু হানিফ আরও বলেন, যারা পুলিশ, র্যাব, বিজিবিকে ব্যবহার করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্ররা-জনতার উপর হামলা চালিয়েছিল। গণহত্যাকারীদের বিচার না করতে পারলে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে । আপনাদেরকে বলছি অনতিবিলম্বে গণহত্যার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসুন। শেখ হাসিনার দোসররা এখনো সক্রিয়, কিন্তু প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি বিএনপি'র কতিপয় সদস্য ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর কতিপয় সদস্যরা আওয়ামী লীগের গুন্ডা বাহিনীর কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে এলাকায় রক্ষা করার দায়িত্ব নিয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ১৬ বছরে আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগের শাসন ব্যবস্থা কিভাবে ৩৬ দিনে ভেঙে পড়েছে। আপনারা যদি নিজেদেরকে নব্য ফ্যাসিবাদের জায়গায় অবতীর্ণ করতে চান, তাহলে শেখ হাসিনার পতনের কথা আপনাদেরকে স্মরণ করতে হবে। বাংলাদেশের গত তিনটি অবৈধ নির্বাচনকে ভারত সমর্থন দিয়েছে। গত ১৫ বছর দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা ভারতের গোলামি করেছে। শেখ হাসিনা ভারতে বসে দিল্লির সহযোগিতায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য দেশের সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
আবু হানিফ তার বক্তব্য আরও বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টা রয়েছেন যারা সরকারি সহযোগিতায় কিংস পার্টি গঠনের চেষ্টা করছে এটা কষ্ট তুই জুলাই আন্দোলনের সাথে বেইমানি। যারা আওয়ামী লীগের ভোট পাওয়ার জন্য এবং আওয়ামী লীগের অবৈধ টাকার ভাগ পাওয়ার তাদেরকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছেন তারাদের পরিণত অব ভয়াবহ হবে।
তিনি তার বক্তব্য আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি এবং বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সাথে বিএনপি'র নেতাকর্মীদের এক ধরনের যোগসাজসে হয়েছে। আমরা স্পষ্ট বলছি শেখ হাসিনার অপকর্মের বিরুদ্ধে বুক চেতিয়ে লড়াই করেছি কোন অন্যায়ের সাথে আপোষ করার জন্য নয়। সুতরাং যারা নব্য দখলদার এবং বালু ব্যবসার জন্য অবৈধ অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন আপনাদেরকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি ভবিষ্যতে যদি এগুলো করতে থাকেন আমরা রাজপথে থেকে এর প্রতিবাদ করব।
গণঅধিকার পরিষদের কিশোরগঞ্জ জেলার সভাপতি মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে যুগ্ম-আহবায়ক শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব আকন্দ মোহাম্মদ উজ্জ্বল, যুগ্ম আহবায়ক অভি চৌধুরী,কটিয়াদি উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের নেতা মহসিন, যুব অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সুমন তালুকদার, জেলা সভাপতি সোহাগ মিয়া, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা পায়েল চৌধুরী প্রমুখ।