মোঃ ইলিয়াস আলী, ঠাকুরগাঁও
গম কেটে নেওয়ার পর জমিতে পড়ে থাকা অবশিষ্ট ডাটা জৈব সার তৈরির জন্য আগুন দিয়েছিল কৃষক আব্দুস সামাদ। চৈত্র মাসের প্রখর রোদ ও বাতাসে সেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পাশের গমক্ষেতে। একে একে ছয় কৃষকের প্রায় ৭ বিঘা জমির গমক্ষেত পুড়ে ভুস্মিভুত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের পশ্চিম সরলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গমক্ষেতের পাশাপাশি কচু ও পাটক্ষেতেরও ক্ষতি করেছে ওই আগুন।
প্রত্যক্ষদর্শী বৃদ্ধ এনায়েত হোসেন বলেন, হারভেস্টার মেশিন দিয়ে গম কেটে নেওয়ার পর ওই জমিতে পাটক্ষেত রোপনের জন্য গমের উচ্ছিষ্ট ডাটাতে আগুন দিয়েছিল কৃষক আব্দুস সামাদ। কিন্তু সেই আগুনের লেলিহান পাশের গমক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে। মাঠে থাকা লোকজন চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করলেও ৬ জন কৃষকের ৭ বিঘা জমি পুরে গেছে। এতে পায় দুই লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের। স্বপ্ন পুড়ছে ৬টি পরিবারের।
ক্ষতিগ্রস্ত গমচাষী এনামুল হক জানান, অনেক আশা করেছিলাম গম কেটে বিক্রি করে ঈদে ছেলে মেয়েদের কাপড় চোপড় কিনে দিবো। কিন্তু আগুন সব ধ্বংস করে দিলো। কৃষক সামাদের কাছে আমরা ক্ষতিপুরণ চেয়েছি। ক্ষতিপুরণ না দিলে মামলা করবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত কৃষক আব্দুস সামাদ বাড়ী থেকে পলাতক রয়েছে। তার পরিবারের লোকজনের দেওয়ার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
স্থানীয়রা জানায়, এই গরমে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। অসচেতনতার কারণেই আগুনে ৬টি কৃষকের স্বপ্ন পুড়ে গেছে। যত্রতত্র এভাবে আগুন দেওয়া বন্ধে স্থানীয় কৃষি অফিস ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।
বালিযাডাঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ সফিউল্লাহ বসুনিয়া বলেন, গমক্ষেতে আগুনের খবর শুনে আমরা গাড়ী নিয়ে পৌছানোর আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছে মাঠে থাকা লোকজন। আমরা মাঝ রাস্তা থেকে ফিরে এসেছি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন সোহেল জানান, গমক্ষেতে উচ্ছিষ্ট ডাটাতে আগুন দিলে পাশের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এটা যেন কৃষকরা না করে সে ব্যাপারে আমরা কৃষকদের সচেতন করার চেষ্টা করছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.