চীনা ড্রাগন বর্ষ বসন্ত উৎসব দ্রুত আসছে। বিশ্বব্যাপী বসন্ত উৎসবের পরিবেশ দিন দিন জোরালো হচ্ছে। বর্তমানে, বিশ্বের প্রায় ২০টি দেশ বসন্ত উৎসবকে ছুটির দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছে। বিশ্বের প্রায় এক পঞ্চমাংশ জনসংখ্যা নানা পদ্ধতিতে চন্দ্র নববর্ষ উদযাপন করেন। সম্প্রতি ব্রিটেনে এক ব্যক্তির নববর্ষের পণ্য কেনার ভিডিও সাড়া জাগিয়েছে নেট-দুনিয়ায়। একজন মাদাম চীনা ব্র্যান্ডের বৈদ্যুতিক গাড়ি তাঁর বড় ভাইয়ের জন্য উপহার হিসেবে কিনতে চান। চীনের আলিবাবা গ্রুপের ক্রস বর্ডার ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের তথ্যে দেখা যায়, চন্দ্র নববর্ষ উপলক্ষ্যে, বসন্ত উৎসবের শ্লোক ও চাইনিজ নট-সহ নানা চীনা পণ্য বিশ্বের শতাধিক দেশে বিক্রি হচ্ছে।
চীনা পণ্য বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হয়েছে, আসলে শুধু বসন্ত উৎসবের সময়ই নয়। গত বছরের ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে চীনা পণ্য দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপক পরিমাণে কেনা হয়। অনেক দেশের তরুণতরুণী চীনা চা-সহ নানা চীনা পণ্যের উপর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এসবের পিছনের কারণ কি?
ভোক্তার জন্য পণ্যের উচ্চ গুণগত মান হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চীনের উৎপাদিত বৈদ্যুতিক গাড়ি একটি উদাহরণ। এ বছরের নববর্ষ থেকে, যুক্তরাষ্ট্রে চীনের তৈরি বৈদ্যুতিক ট্রিসাইকেল বিক্রির পরিমাণ অনেক বেড়েছে। কারণ ভোক্তারা মনে করেন, তা অত্যন্ত সুবিধাজনক। সুবিধাজনক, উচ্চ গুণগত মানের, নির্ভরশীল প্রযুক্তি , চীনা পণ্যের জনপ্রিয়তার কারণ হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী সুষ্ঠু শিল্প চেইন ও সরবরাহ চেইন।
এসব সুবিধার কারণে চীনা পণ্য উচ্চ গুণগত মানের এবং তুলনামূলক সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ অনুসারে, দক্ষিণ কোরিয়ায় দুধের দাম অনেক বেড়েছে। এজন্য অনেকে সয়া-মিল্ক পান করা শুরু করেন। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার ব্র্যান্ডগুলোর সয়া-মিল্ক প্রস্তুতকারক যন্ত্রের দাম চীনা ব্র্যান্ডের দামের চেয়ে ২ বা ৩ গুণ বেশি। এ অবস্থায় চীনা সয়া-মিল্ক প্রস্তুতের যন্ত্র দক্ষিণ কোরিয়ায় বিক্রির পরিমাণ একটি ঐতিহাসিক নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।
এ ছাড়া, চীনা পণ্য কেনার সুষ্ঠু অভিজ্ঞতার উপর আন্তর্জাতিক ভোক্তারা ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছেন। সিঙ্গাপুরের ‘লিয়ান হ্য চাও পাও’ পত্রিকার একটি প্রবন্ধে বলা হয়, ভিয়েতনামের একজন ভোক্তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে চীন থেকে একটি বৈদ্যুতিক কেতলি কিনেছেন। কিন্তু চীন থেকে পাঠানো পণ্য পরিবহনের টাকা ভিয়েতনামের অভ্যন্তরীণ পরিবহন খরচের চেয়েও কম!
চীনা পণ্যের স্মার্ট বৈশিষ্ট্যময় সুবিধাও আন্তর্জাতিক ভোক্তাদের নজর কেড়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার একজন গৃহিণী সম্প্রতি একটি চীনা স্মার্ট রেফ্রিজারেটর কিনেছেন, যাতে তিনি অনেক সন্তুষ্ট। কারণ, তা পরিবার সদস্যদের জন্য শতাধিক রেসিপি’র পরামর্শ দেয়। পাশাপাশি, কোনদিন কি কি খাবার কেনা দরকার, সেই তথ্যও চীনা স্মার্ট রেফ্রিজারেটর পরিবারের সদস্যদেরকে জানায়।
অব্যাহতভাবে উদ্ভাবনী ও গবেষণার দক্ষতা এবং স্থানীয় ভোক্তা চাহিদাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়ার কারণে, চীনা পণ্য বিশ্বের ভোক্তাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতাও বয়ে এনেছে।
বর্তমানে, অনেক চীনা পণ্যে চীনের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক উপাদানও রয়েছে। চীনা ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি হচ্ছে চীনা পণ্যের সবচেয়ে মৌলিক জিন।
চীনা পণ্য বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে জনপ্রিয় হয়েছে। এটা শুধু বিশ্ব বাণিজ্যের সমৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়াই নয়, বরং তা সভ্যতার বিনিময় ও পারস্পরিক শিক্ষাও এগিয়ে নেয়। যা বিশ্বকে ইতিবাচক চীনা শক্তি প্রদান করেছে।
সূত্র: চায়না মিডিয়া গ্রুপ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2024 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.