কখনো ইতিহাস থমকে দাঁড়ালে
শাহ সাবরিনা মোয়াজ্জেম
রোদের বিলি কেটে
অদলবদল হয়— ঘর দুয়ার!
তোমার বাড়ি আমার —গাঁয়ে
আমার বাড়ি তোমার —গাঁয়ে!
আমার অস্তিত্ব ধরে যখন টান দেয়
দিগন্তের — হাওয়া!
তখন দুঃখজাত অগ্নি- তেজ হয়!
কাণ্ডমূলে শুদ্ধ হওয়া যায়না —
তবুও ঘর দোর বদল হয়!
" বউমা, মাথায় কাপড় দাও। উঠোনে
বেটা ছাওয়াল, মা সুন্দর করে মাথায় কাপড় দিয়ে দেয়।"
আমার মহাশূন্যে — বাতাসের শিঁঙ্গা।
" মা, চুড়ি পরো। খালি হাতে স্বামীকে কিছু দিতে নেই, স্বামীর আয়ু কমে।"
আমার মাথা ধরে দিচ্ছে উদগত মস্তিষ্ক — রুদ্ধশ্বাস স্ফুরিত
স্ফুলিঙ্গ! কেননা আয়ুর গোলক ধাঁধাঁ ঈশ্বরের হাতে—! আমার হাতে চুড়ি পরার সাথে সম্পর্ক কি—?
" মা ভাশুড়ের নাম নিতে হয়না"
উত্থাপিত উত্থানের আয়োজনে
জীবনের পোড় খাওয়া শিখার পাড়ে দাঁড়িয়ে আমি — নারী!
তাই পারিজাত আবডালে কথিত ভাশুরের নাম কখনো কখনো নিয়ে ফেলি! কেননা আরাম কেদারায় বসতে দিলে শোয়ার চাটাই শূন্যে দোলে।তখন কখনো কখনো নারীর কোল হয় ভাশুরের কোল বালিশ!
এখন দেবরথ ভাশুর দেবরা কোথায় — শ্রদ্ধেয় জননী? ( শ্বাশুড়ি)
"মা — তোমার শ্বশুরের ভয়ে আমি কখনো উঠোনে যেতে পারিনি। ভীষণ ভয় পেতাম তাকে।" হয়তো যেতো আড়ালে আবডালে কারণ পুরুষতান্ত্রিকদের ভয়ে অন্তিম কাল অব্ধি নারী ভয়ে ভীত!
তখন মাঝে মাঝে মনেহতোঃ
এ কেমন অতীত বিক্রম
উত্থানের আয়োজনে জীবনের জয়ধ্বনি দেবে! নাকি —নারী মাত্র- ই পরজীবি? নাকি বটবৃক্ষকে আঁকড়ে থাকা! জীবিকার ভয়ে চুপষে থাকা!
" মা — তোমার শ্বশুর আমায় ভীষণ ভালোবাসতো।"
তাইতো — চৌদ্দ সন্তানের শৌর্য্যে বীর্যে আজ বড় অনাদরে কাটে দিন। কিছু টাকা দিয়েই খালাস। পুত্র বধুদের নাকে কাপড়! কই মাছের প্রাণ বুড়ির! বুড়ি বড্ড চিঁচকাঁদুনে!
উদিয়মান বিষন্ন প্রত্যুষে
হাসনাহেনার ছায়ায় গেরস্থ বন্দনা করি গত প্রজন্মের মায়েদের — প্রার্থনা করি — যে নারী বুনেছিলো — স্বপ্নের বীজ সন্তান সংসার ঘীরে!
এই কষ্টের জনপদে
অনুকূল হাওয়ায় — প্রতিকূল স্রোতে
তার জীবন কখনো ধন্য হয়নি!
কেননা — সে সংসারের আরতি জ্বেলেছিলো — অশ্রুতপুর্ব জোনাকজ্বলা
রাতে — রাক্ষস খোক্ষসের কেচ্ছা শুনিয়ে।
এখন তার পঞ্চভূত আগুন — প্রভবিত-
অশ্রুর কাহিনী!
এখন সে — পরজীবি হয়ে বাঁচে
ওয়েষ্টবক্স ঘীরে!
আমি বলি,
যদি কখনো — পতনের সর্বশেষ ঢালে
ইতিহাস থমকে দাঁড়ায়
তখন সব মা — আর মা হবেনা
সন্তান নামক — অসুর বদের দূর্গা হবে!
সেদিন হয়তো — বেশী দূরে নয়!
কারণ—
" তোমাকে বধিবে যেজন... গোকুলে বাড়িছে সেজন।"
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.