এম.ডি.এন.মাইকেল
বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার কারণে,দেশের সরকারি, আধা সরকারি,স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতি মরণব্যাধি ক্যান্সার এর রূপ ধারণ করেছিল।
বিগত সরকারের সময়ে জন্ম নেওয়া মহা দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী, এমপি, আমলা, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির মূল হোতা সালমান এফ রহমান, ব্যাংক কেলেঙ্কারির হোতা এস আলম গ্রুপ এর মালিক শামসুল আলম, ছাগল কাণ্ডে আলোচিত এনবিআর এর সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান, বন খেকো মোশারফ, বিসিএস প্রশ্ন ফাঁস কেলেঙ্কারির হোতা আবেদ আলী, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ, সিআইডি সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া গংদের অনিয়ম দুর্নীতির ফিরিস্তি একে একে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে আসার পর এইবার বেরিয়ে আসলো সাবেক রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদ'র মেয়ের জামাতা মাহমুদু-উজ জামান'র প্রধান সহযোগী কর ফাঁকিবাজদের পৃষ্ঠপোষকতাকারী কর অঞ্চল-১৯ এর কর পরিদর্শক সাঈদূর রহমান'র নাম।
বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায় কর পরিদর্শক সাঈদূর রহমান, পিতাঃমরহুম ফজলুল হক, গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলায়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন কর অঞ্চল-এ উচ্চমান সহকারী পদে চাকরি জীবন শুরু করেন। চাকরি জীবনে শুরুতেই তিনি অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষকে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কাজে পৃষ্ঠপোষকতা করে সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক শত কোটি টাকা।
কর পরিদর্শক সাঈদূর রহমান'র নজিরবিহীন অনিয়ম দুর্নীতির প্রধান পৃষ্ঠপোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদ এর একমাত্র মেয়ের জামাতা জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার মাহমুদ-উজ-জামান, উল্লেখ মাহমুদ-উজ-জামান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা। সাবেক রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদ এর এক মাত্র মেয়ের জামাতা হওয়ায় মাহমুদ-উজ-জামানের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর আওতাধীন কর অঞ্চল গুলোতে সাইদুর রহমান গংদের মাধ্যমে অনিয়ম ও দুর্নীতির জন্য তৈরি করেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট।
এই সিন্ডিকেটের মূল কাজই ছিল বড় বড় কোম্পানিগুলোকে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার জন্য নানাবিধ অবৈধ পন্থার মাধ্যমে নিজেদের সিন্ডিকেট সদস্যদের কোষাগারে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা আর সরকার রাজস্ব হারিয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। এছাড়াও বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতিবাজ অসংখ্য মন্ত্রী, এমপি, আমলা, রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ সদস্য, সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের দুর্নীতির টাকা বৈধতা পাইয়ে দেওয়ার পৃষ্ঠপোষকতাকারী ছিলেন সাঈদূর রহমান গংরা।
দীর্ঘদিন কর অঞ্চল-৫ এ উচ্চমান সহকারী পদে চাকরির পর কর পরিদর্শক'র পদোন্নতি নিয়ে বর্তমানে কর অঞ্চল-১৯ কর্মরত।দীর্ঘ অনুসন্ধানে কর পরিদর্শক সাঈদূর রহমান'র সাবেক কর্মস্থল কর অঞ্চল-৫ ও বর্তমান কর্মস্থল কর অঞ্চল-১৯ এর তার কয়েকজন সহকর্মীদের সাথে কথা বলতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন নাজির, উচ্চমান, সহকারী ও কর পরিদর্শক পদমর্যাদার ব্যক্তি বলেন সাঈদূর রহমান সাহেব বিগত সরকারের আমলে আরবান প্রপাটি, আমিন মোহাম্মদ হাউজিং সহ বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানি গুলোকে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ স্যার এর একমাত্র মেয়ের জামাতা মাহমুদ-উজ-জামানের স্যারের প্রধান পৃষ্ঠপোষকতায় সেই সুবাদে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক শত কোটি টাকা।
তারা আরও বলেন শুধুমাত্র হাউজিং কোম্পানি গুলোকে সরকারি রাজস্ব (কর)ফাঁকি দেওয়ার কাজ করেই ক্ষান্ত হননি, বিগত সরকারের আমলের মহা দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী, এমপি, রাজনৈতিক নেতা, আমলা, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী, পুলিশ সদস্যদের অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত টাকা গুলো বৈধতা করিয়ে দেওয়ার (ইনকাম ট্যাক্স ফাইল) নামে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক শত কোটি টাকা।
আর এই সকল অনিয়ম দুর্নীতির টাকায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ও গ্রামের বাড়ি জামালপুরের মাদারগঞ্জ এবং জামালপুর শহরে গড়েছেন বিপুল সম্পদ।সহকর্মীরা আরো বলেন বিগত সরকারের আমলে সাঈদূর রহমান এতই ক্ষমতাধর ব্যক্তি ছিলেন যেই কারণে তিনি একই সাথে দুইটি কর অঞ্চলে সুপারভাইজারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন যাহা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা।
বিগত সরকারের আমলের কর অঞ্চল গুলোর পদোন্নতি বদলি থেকে শুরু করে সবকিছুই হতো তার ইশারায়। ৫ই আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার বিতাড়িত হওয়ার পর সাঈদূর রহমান তার অফিসের সহকর্মীদের বলে বেড়ান দুদক থেকে শুরু করে প্রভাবশালী আমলা এবং বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের সাথে আমার গভীর সম্পর্ক রয়েছে তাই কেউ আমার কিছুই করতে পারবে না, আর সাংবাদিকরা বিগত সরকারের আমলের আমার অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশিত করলেও কিছুই হবে না কারণ সম্পাদকদের সাথে আমার গভীর সম্পর্ক দীর্ঘ বছর থেকে যাহা এখনো চলমান।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায় কর পরিদর্শক সাঈদূর রহমানের নজিরবিহীন অনিয়ম দুর্নীতির টাকা আদায় করে বেগুনবাগিচার বাসা এবং ঢাকা উদ্যানের বাসায় পৌঁছে দেয়ার কাজে সর্বক্ষণ নিয়োজিত আপন খালাতো ভাই রাসেল। কর পরিদর্শক সাঈদূর রহমান অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের চুম্বক অংশ অর্থ উপদেষ্টা, অর্থ সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পাঠকদের মাঝে তুলে ধরা হলো, রাজধানী ঢাকার সেগুন বাগিচার ইস্টান হাউসিং অ্যাপার্টমেন্টে রয়েছে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের আলিশান ফ্ল্যাট। রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যানে ২৮০০ স্কয়ার ফিটের বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, উক্ত ফ্ল্যাটের সাজসজ্জায় কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করে লাগিয়েছেন সম্পূর্ণ ইউরোপিয়ান ফিটিংস।
রাজধানী ঢাকার পূর্বাচলে রয়েছে বিলাসবহুল দুটি রিসোর্টস, এবং ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়ে পূর্বাচল ক্লাবের সদস্য পদ বাগিয়ে নেন।২০ লক্ষ টাকায় নিজ জন্মস্থান জামালপুর এর রিক্রিয়েশন ক্লাবের সদস্য পদ নেন। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য রয়েছে দুটি বিলাসবহুল গাড়ি ও একটি মোটরসাইকেল। বিলাসবহুল গাড়ি দুটির মধ্যে একটির মূল্য ৯৫ লক্ষ টাকা।এছাড়াও জামালপুর সদর ও উপজেলা মাদারগঞ্জে রয়েছে বিলাসবহুল বাড়ি এবং কয়েক কোটি টাকার সম্পদ সহ বিভিন্ন ব্যাংকে কয়েক কোটি টাকার এফডিআর ও সঞ্চয়পত্র।
বিবাহিত জীবনে সাঈদূর রহমান দুইবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, কিন্তু মাদক (ইয়াবা) সেবন ও শারীরিক নির্যাতনের কারণে প্রথম স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। দ্বিতীয় স্ত্রী বর্তমানে কর পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। নজিরবিহীন অনিয়ম দুর্নীতির বিষয় জানতে কর ফাঁকিবাজদের পৃষ্ঠপোষকতাকারী কর পরিদর্শক সাঈদূর রহমানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন ও খুদেবার্তা পাঠানো হলেও কোন প্রকার সাড়া পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে কয়েকবার তার কর্মস্থল কর অঞ্চল-১৯ গিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে অফিস থেকে জানানো হয় সাঈদূর রহমান অফিসে নেই।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কর ফাঁকিবাজদের পৃষ্ঠপোষকতাকারী সাঈদূর রহমানের অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত বাকি সম্পদের অনুসন্ধান চলমান,,,,,,,,
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.