সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:
কালিকচ্ছ ইউনিয়নের নন্দী পাড়ায় অবস্থিত ভারতবর্ষের অন্যতম ব্রাহ্মমন্দির-(আনন্দ আশ্রম) এর দেবোত্তর সম্পত্তি এখন ভূমিদস্যুদের দখলে।
গত (২৩জুলাই) রোববার মন্দিরটি পরিদর্শন করেন জেলা, উপজেলার উদিচী শিল্প গোষ্ঠীর নেতাকর্মী ও কবি সাহিত্যিক ও সংবাদ কর্মীরা।
রোববার মন্দিরটি পরিদর্শনে যান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কবি পরিষদের সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, জেলা উদিচী শিল্প গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস রহমান, সরাইল উপজেলা উদিচী শিল্প গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক সুমন পারভেজ, জেলা উদিচী শিল্প গোষ্ঠীর সদস্য রোকেয়া বেগম। এছাড়াও এসময় উপস্থিত ছিলেন, আনন্দ আশ্রমের নবগঠিত সাধারণ সম্পাদক দুর্গা চরন দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মৃধা, সদস্য শাহীনুর মৃধা প্রমুখ।
জানা যায়, সিএস খতিয়ানে ব্রাহ্মমন্দিরের ২৪.৯৯ একর বা প্রায় ৭৫ বিঘা জমি দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে রেকর্ড রয়েছে। এর চারপাশের মন্দিরের জায়গা টুকু ছাড়া বেশির ভাগ জমি নামে বেনামে দখল করে বসতি স্থাপন করে রেখেছেন স্থানীয়রা। যদিও এই দেবোত্তর সম্পত্তি বিক্রি করা যায় না। বছরের পর বছর এই সম্পত্তি নিজেদের দখলে রেখে এখন তাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি বলে দাবি করছেন প্রভাবশালীরা।
সম্প্রতি ৭জুলাই ২০২৩ আনন্দ আশ্রম মন্দিরের দেবোত্তর সম্পত্তি থেকে আনন্দ ধামের নবগঠিত সভাপতি দুলাল রায় (নন্দী) আশ্রমের ১৮ শতাংশ সম্পত্তি ৪২,০০০০০ (বিয়াল্লিশ) লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছেন। যদিও তিনি পৈত্রিক সূত্রে এই জমির মালিক বলে দাবি করছেন। যতদুর জানা যায় দেবোত্তর সম্পত্তি কখনো ব্যক্তি মালিকানায় হয় না।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে ইতিহাস -ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যানারে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কবি পরিষদের সভাপতি কবি জয়দুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা উদিচী'র সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. বাহারুল ইসলাম মোল্লা, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.মনির হোসেন, উদীচী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংসদের সহ-সভাপতি ফারুক আহমেদ ভূঁইয়া, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সদস্য সচিব এটিএম ফয়েজুল কবির, সম্মিলিত সাংস্কৃতিকজোটের সাধারণ সম্পাদক -সন্জীব ভট্টাচার্য, খেলাঘর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার, অংকুর শিশু কিশোর সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আনিছুল হক রিপন, সরাইল কালীকচ্ছ আনন্দ আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক দুর্গাচরণ দাস প্রমুখ।
বক্তারা বলেন - ব্রাহ্মমন্দিরের ২৪.৯৯ একর বা প্রায় ৭৫ বিঘা জমি দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে সিএস খতিয়ানে রেকর্ড রয়েছে। আর এই দেবোত্তর সম্পত্তি কোন ভাবেই বিক্রি করা যায় না। কিছু দিন আগে মন্দির কমিটির বর্তমান সভাপতি নিজেই মন্দিরের জায়গা থেকে ১৮ শতাংশ জায়গা বিক্রি করে দিয়েছেন যা সম্পুর্ণ বেয়াইনী। বক্তারা আরও বলেন, দেখা যাচ্ছে রক্ষকই ভক্ষকের ভূমিকা নিয়েছেন যা কারোরই কাম্য নয়। সভাপতিকে অবিলম্বে তার পদ থেকে বহিষ্কার ও মন্দিরের ২৪.৯৯ একর বা প্রায় ৭৫ বিঘা দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধারেরও দাবি জানান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.