শাহিনুর রহমান পিন্টু, ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর বাজারের হাট চাঁদনীর নিচে মাছ বাজারে ঢুকলেই দেখা যাবে আশরাফুল ইসলাম নামের একজন মাছ ব্যবসায়ীকে। যিনি কখনো বড় বটিতে বসে মাছ কাটছেন আবার কখনো মাছের কাঁচা আঁশ বিভিন্ন মাছের দোকান থেকে সংগ্রহ করছেন। আশরাফুল তার সংগৃহীত মাছের কাঁচা আঁশ বস্তা ভরে তিনি হাট চাঁদনীর ছাদে নিয়ে রোদে শুকাতে দিচ্ছেন। মাছের এই কাঁচা আঁশ রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে তা বস্তা ভরে ওজন করে যশোর এবং খুলনা থেকে আসা মাছের আঁশ ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করে বাড়তি টাকা আয় করছেন। মাছের আঁশ থেকে বাড়তি আয়ের জন্য আশরাফুল ইসলাম প্রতিদিন এভাবেই তার কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন।
তিনি ২০ বছর যাবত মাছ ব্যবসার সাথে জড়িত।পাশাপাশি তিনি ১০ টাকা কেজি মূল্যে মাছ কাটা এবং মাছের কাঁচা আঁশ সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে তিনি বাড়তি আয় রোজগার করে থাকেন। দৈনন্দিন জীবনে মানুষের ফেলে দেওয়া একটি আবর্জনা হলো মাছের আঁশ। বর্সেতমানে সেই মাছের আঁশ রোদে শুকিয়ে তা শুকনো আঁশ হিসেবে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। এই ফেলে দেওয়া আঁশ বিক্রি করেই বাড়তি আয় করছেন উপজেলার ফারাসপুর গ্রামের শাখের আলী বিশ্বাসের ছেলে আশরাফুল ইসলাম।
তিনি প্রতিদিন মাছ বাজার থেকে ১০ থেকে ১৫ কেজি মাছের কাঁচা আঁশ সংগ্রহ করে থাকেন। এরপর তা ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে বাস্তা ভর্তি করেন। এভাবে মাসে প্রায় ৩০০ কেজি মাছের কাঁচা আঁশ তিনি সংগ্রহ করে থাকেন। যা রোদে শুকিয়ে প্রায় ১৭০ কেজি হয়। প্রতি কেজি শুকনা মাছের আঁশ বাজার অনুযায়ী ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে যশোর এবং খুলনা থেকে আগত আঁশ ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করে থাকেন।আর এভাবে তিনি মাসে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা বাড়তি আয় করেন।
মাছ ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে জানান, আগে তো মাছের আঁশ আমরা ফেলে দিতাম। যখন শুনলাম এটি রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণপরবর্তী বিক্রি করে টাকা আয় করা যায়, তখন থেকে প্রতিদিনের কাজের পাশাপাশি আঁশ সংগ্রহ করে তা শুকিয়ে বিক্রি করে থাকি । আর এই টাকা আমার ব্যক্তিগত ও সংসারের কাজে লাগছে। কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসান সাজ্জাদ বলেন, বাংলাদেশ থেকে চীনে আঁশ রফতানি হয়। সেখানে মাছের আঁশ থেকে কোলাজেন ও জিলেটিন তৈরি করা হয়।
ওষুধ, প্রসাধন সামগ্রী, ফুড সাপ্লিমেন্ট তৈরিতে মাছের আঁশ ব্যবহৃত হয়।তাই এটিকে সম্ভাবনাময় একটি খাত বলা যায়। কালীগঞ্জ মাছ বাজারে কেউ এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন তা আমার জানা ছিল না। আমি মাছ বাজারে যেয়ে তাদের সাথে কথা বলব এবং এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিব।মাছের আঁশ সংগ্রহের উপর তাদেরকে কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় কিনা; সে ব্যাপারেও আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলব।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.