মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার, কুমিল্লা
জাতীয় গ্রিডের চট্টগ্রামের আনোয়ারা-ফৌজদারহাট লাইনে পাইপ ফেটে যাওয়ায় কুমিল্লায় গ্যাসসংকট দেখা দিয়েছে। এতে রান্না করতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কুমিল্লা নগরবাসী।
নগরের রেস্তোরাঁগুলোতে বেড়েছে মানুষের ভিড়। অনেক বাসাবাড়িতে ব্যবহার করা হচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাস। কোথাও কোথাও মাটির চুলায় রান্না করতে দেখা গেছে।
কুমিল্লা নগরীর ৯০ শতাংশ এলাকায় গ্যাস নেই, ভোগান্তি চরম কুমিল্লা নগরী ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
কুমিল্লা নগরী ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ৯০ শতাংশ এলাকায় গ্যাস নেই। গ্যাস সংকটে বাসায় রান্না করতে না পেরে হোটেল থেকে খাবার এনে খেতে হচ্ছে।
গ্রাহকদের অভিযোগ, নোটিশ কিংবা মাইকিং ছাড়াই গত দুদিন ধরে নগরীতে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
বুধবার (১০ জুলাই) বেলা পৌনে ১১টার দিকে হঠাৎ গ্যাসের চাপ কমে যায়। বিকেল ৩টার দিকে স্বাভাবিক হলেও বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল থেকে আবারও কমতে থাকে গ্যাসের চাপ।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি চাঁপাপুর কার্যালয়ের ইঞ্জিয়ারিং সার্ভিস বিভাগের ব্যবস্থাপক মীর ফজলে রাব্বী জানান, গ্যাস সরবরাহ লাইনে সমস্যা এবং মেরামত কাজের জন্য হঠাৎ করে কুমিল্লা নগরীসহ আশপাশের এলাকায় গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে।
নগরীর চর্থা চৌমুহনী এলাকার বাসিন্দা গৃহিণী খাদিজা আক্তার বলেন, ‘বুধবার রান্নার মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ গ্যাস সংকট দেখা দেয়। ওই গ্যাসে রান্না সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। পরে সব খাবার ফেলে দিয়ে হোটেল থেকে খাবার কিনে খেয়েছি।’
হাউজিং এস্টেট এলাকার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাসা থেকে ফোন আসে গ্যাস চলে গেছে। দুপুরে বাসায় যাওয়ার সময় হোটেল থেকে খাবার নিয়ে যেতে বলে। গত দুদিন ধরে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সমস্যা ও সমাধানের বিষয়টি গ্রাহকদের জানানো।’
ঝাউতলা এলাকার বাসিন্দা মাজেদা বেগম। তিনি বলেন, ‘গত দুদিন ধরে গ্যাস সমস্যার মধ্যে আছি। কবে নাগাদ ঠিক হবে তাও জানি না। এভাবে চলতে থাকলেতো দিন দিন কষ্ট বেড়ে যাবে। বিষয়টি সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
স্বপ্নাহার বেগম নামের এক গৃহিণী বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে জানলাম গ্যাস থাকবে না। পরে চুলা জ্বালিয়ে দেখি গ্যাস কম। আগুনের যে তাপ রয়েছে তাতে একটি ডিম ভাজি করতে অন্তত ২০ মিনিট সময় লাগবে। ঘরে শিশুসন্তান থাকায় খুবই ভোগান্তিতে আছি।’
এ বিষয়ে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি চাঁপাপুর কার্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস বিভাগের ব্যবস্থাপক মীর ফজলে রাব্বী বলেন, চট্টগ্রামের আনোয়ারা এলাকায় গ্যাস সরবরাহ পাইপলাইনে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেটি মেরামতের কাজ চলছে। এ ঘটনায় কুমিল্লাসহ আশপাশের ৯০ শতাংশ এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। প্রাকৃতিক কোনো সমস্যা না দেখা দিলে শুক্রবার দুপুরের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে ইনশাআল্লাহ।
উচ্চচাপ বিশিষ্ট সঞ্চালন পাইপ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও তিতাস গ্রাসের অধীন এলাকায় গ্যাসের স্বল্প চাপ বিরাজ করছে। এ অবস্থায় কুমিল্লা নগরীসহ আশেপাশের এলাকায় গ্যাস না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকেরা। বিশেষ করে কুমিল্লা ইপিজেডে বাখরাবাদ গ্যাস নির্ভর অনেক প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে বাসাবাড়ির দৈনন্দিন রান্নার কাজও।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.