মুহাম্মাদ মনিরুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা অংশে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ।চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে মুখোমুখি অবস্থান নেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকায় উভয় মুখী লেনে যান চলাচল বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। ফলে সড়কের দুই পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটারের বেশি এলাকায় যানজট ছড়িয়েছে।সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে মুখোমুখি অবস্থান নেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাদের হাতে লাঠিসোঁটা ও রামদা-ছেনিসহ দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নেতা-কর্মীরা চৌদ্দগ্রাম বাজারের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গেটে মহাসড়কের উপর অবস্থান নিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় সেখানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের মাঠে দেখা গেছে।এ ছাড়া চৌদ্দগ্রাম বিসিক গেট এলাকায় একটি মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা জানায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে এবং জামায়াত-শিবিরের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ।চৌদ্দগ্রাম বিসিক গেট এলাকায় একটি মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এক সপ্তাহ আগে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা এই পক্ষের নেতৃত্ব আছেন আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এম. তমিজ উদ্দিন ভূঁইয়া সেলিম, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শাহজালাল মজুমদারসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী।এই পক্ষের নেতা-কর্মীরা সাবেক রেলমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের বিরোধী পক্ষ বলে জানান দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা।এক পর্যায়ে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে মুজিবুল হকের অনুসারীরা। এতেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এম. তমিজ উদ্দিন ভূঁইয়া সেলিম বলেন, “আমরা এক সপ্তাহ আগে কর্মসূচি ঘোষণা করেছি, আমাদেরকে প্রতিহত করতে তারা এই পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।এ প্রসঙ্গে জানতে সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের অনুসারী বলে পরিচিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রহমত উল্লা বাবুল সাংবাদিকদের বলেন, “তারা জামায়াত-শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এই ধরণের কর্মকাণ্ড করছে। চৌদ্দগ্রামের মানুষ তাদেরকে প্রতিহত করেছে। চৌদ্দগ্রামে মুজিবুল হকের বিকল্প নেই।”হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, “এরই মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশ কাজ করছে। আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.