টি. আর. দিদার, চান্দিনা (কুমিল্লা)
চান্দিনায় জামায়াতে ইসলামীর গণমিছিলে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে । সোমবার (২৭ অক্টোবর) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা বাস স্টেশন এলাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা উত্তর জেলা আয়োজিত গণমিছিলে ওই ঘটনা ঘটে ।
জামায়াতে ইসলামীর চান্দিনা উপজেলার নায়েবে আমীর মাওলানা মোশাররফ হোসেন এর মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে । ফলে চান্দিনা জামাতের দুটি গ্রুপের সৃষ্টি হয় । অবশেষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা উত্তর জেলা আয়োজিত এক গণমিছিলে তা প্রকাশ্যে রূপ নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাওলানা মোশাররফ হোসেন বক্তব্য শুরু করলে একটি অংশের নেতাকর্মীরা তার হাত থেকে মাইক কেড়ে নেয়। তারা অভিযোগ তোলেন, মাওলানা মোশাররফ আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ মহলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ সময় কয়েকজন কর্মী “দল বিক্রি চলবে না”, “আওয়ামী দোসর প্রার্থী মানি না” স্লোগান দিতে থাকেন। মুহূর্তেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে উভয় পক্ষের কর্মীরা মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দলীয় শৃঙ্খলা কমিটির নেতারা হিমশিম খায় । এঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
দলীয় সূত্র জানায়, মাওলানা মোশাররফ হোসেন সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান তপন বকশীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দলের একাংশে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। তাদের দাবি, জেলা আমীর আব্দুল মতিন ও জেলা সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম শহীদ অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
চান্দিনা উপজেলা শিবিরের সাবেক সভাপতি সাজিদ আল আমিন সোহাগ বলেন, “জেলা আমীর মতিন ও সেক্রেটারি শহীদ টাকা খেয়ে মোশাররফকে প্রার্থী করেছে। সে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য প্রাণ গোপাল দত্ত ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান তপন বকশীর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে। সে আওয়ামী লীগের দোসর। জেলা সংগঠন একজন আওয়ামী লীগের দালালকে জামায়াতের ব্যানারে নরমালাইজ করতে চায়।
জামায়াতে ইসলামীর চান্দিনা উপজেলার নায়েবে আমীর ও জামায়াত মনোনীত মাওলানা মোশাররফ হোসেন বলেন, দলীয় নেতা-কর্মীরা এখন দুই ভাগে বিভক্ত। যার পক্ষে মিছিল হচ্ছে, অন্য পক্ষ তার বিরুদ্ধে মাঠে আছে। আমি কোনো রাজনৈতিক আপস করিনি। স্থানীয় উন্নয়নমূলক আলোচনায় অংশ নেওয়াকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কারণ আমি একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান, যে দলই ক্ষমতায় আসুক দাওয়াত দিলে আমাকে সেখানে যেতে হয়। তাছাড়া উন্নয়নমূলক কাজে আমাকে অংশ নিতে হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে দলের জেলা সেক্রেটারি শহীদ কে, একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল কেটে দেন, কল রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে দলটির কুমিল্লা জেলা আমীর আব্দুল মতিন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান করছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.