৫ই সেপ্টেম্বর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বেইজিংয়ে চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের বেইজিং শীর্ষসম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘যৌথভাবে আধুনিকায়ন বেগবান করা এবং অভিন্ন স্বার্থের সমাজ গড়ে তোলা’ শিরোনামে মূল ভাষণ দিয়েছেন। গোটা আফ্রিকায় কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কৌশলগত সম্পর্কের পর্যায় উন্নীত করার মাধ্যমে চীন-আফ্রিকা সম্পর্কের অবস্থান নতুন যুগে সার্বক্ষণিক চীন-আফ্রিকা অভিন্ন কল্যাণের সমাজে উন্নীত করার কথা ঘোষণা করেন তিনি।
তিনি বলেছেন, চীন ও আফ্রিকার মৈত্রী সুদূর পাহাড় ও সমুদ্র অতিক্রম করেছে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সম্প্রসারিত হয়েছে। ২০০০ সালে চীন ও আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরাম প্রতিষ্ঠিত হয়, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ২৪ বছর ধরে বিশেষ করে নতুন যুগে চীন ও আফ্রিকান মানুষ আন্তরিকতার ভিত্তিতে যৌথভাবে সামনে এগিয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিবেশ পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে চীন ও আফ্রিকান দেশগুলো নিজের বৈধ অধিকার রক্ষায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনীতির বিশ্বায়নে চীন ও আফ্রিকান দেশগুলো অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে এবং ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মহামারী মোকাবিলায় চীন ও আফ্রিকান দেশগুলো যৌথভাবে সংগ্রাম ও প্রচেষ্টা চালিয়েছে, ব্যাপক মনোমুগ্ধকর গল্প রচনা করেছে। সবসময় পারস্পরিক সমর্থন ও সমঝোতার ভিত্তিতে এগিয়েছে। তাই চীন ও আফ্রিকার সহযোগিতা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, চীন-আফ্রিকা আধুনিকীকরণের স্বপ্ন অবশ্যই বিশ্বের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক আধুনিকীকরণ শুরু করবে এবং মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গঠনে নতুন অধ্যায় লিখবে। "ছয়টি আধুনিকীকরণ" প্রচারের জন্য চীন ও আফ্রিকার হাত মেলানো উচিত। সেগুলো হলো- ন্যায্য ও যুক্তিসঙ্গত আধুনিকীকরণ জোরদার করতে হবে, উন্মুক্ত ও জয়-জয়ের আধুনিকীকরণ এগিয়ে নিতে হবে, জনগণের আধুনিকীকরণ এগিয়ে নিতে হবে, বৈচিত্র্যময় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক আধুনিকীকরণের অগ্রগতি এগিয়ে নিতে হবে, পরিবেশবান্ধব আধুনিকীকরণ এগিয়ে নিতে হবে এবং অবশ্যই শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ আধুনিকীকরণ প্রচার করতে হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন, আগামী তিন বছরে দশটি কার্যক্রমে আফ্রিকার সঙ্গে কাজ করতে চায় চীন। সেগুলো হলো- আধুনিক সভ্যতার পারস্পরিক শিক্ষা, বাণিজ্য সমৃদ্ধির অংশীদারিত্ব, শিল্প চেইনের অংশীদারিত্ব, সংযোগের অংশীদারিত্ব, উন্নয়নের অংশীদারিত্ব, স্বাস্থ্য খাতে অংশীদারিত্ব, কৃষি ও কৃষকের সুবিধার জন্য অংশীদারিত্ব, মানবিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় অংশীদারিত্ব, সবুজ উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, নিরাপত্তার অংশীদারিত্ব। এর মাধ্যমে দু’পক্ষের সহযোগিতা সম্প্রসারণ করা যাবে বলে উল্লেখ করেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের আফ্রিকান দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার-প্রধান, প্রতিনিধি দলের নেতাসহ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর ৩২০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।
সূত্র: সুবর্ণা, শুয়েই ফেই ফেই, রুবি, প্রেমা, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2024 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.