এ জে সোহেল, স্টাফ রিপোর্টার
আগামী ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪, কুমিল্লা-১১ চৌদ্দগ্রাম আসনে ৮জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহন করার কারণে দেখা দিয়েছে নানা ধরনের আলোচনা, সমালোচনা, সংশয় ও পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ।
ইতিমধ্যে, চৌদ্দগ্রামের সকল প্রার্থী নানা উপায়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটারদের দিচ্ছেন নানান রকম প্রতিশ্রুতি। এছাড়াও নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া নিয়মকে উপেক্ষা করে আচরণবিধি লঙ্ঘনের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা করে যাচ্ছেন অনেকে। এতে যেমন বিব্রত হচ্ছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, তেমন বিরক্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে আছে- নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের আগে ও পরে নানা প্রচার-প্রচারণা। মোটর সাইকেল শোডাউন, উচ্চস্বরে একাধিক মাইক দিয়ে প্রচার, রঙিন ফেস্টুন-ব্যানারসহ প্রচারণা। প্রার্থীরা একে অপরের উদ্দেশ্যে হিংসাত্মক বক্তব্য দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসন থেকে বর্তমান এমপি নৌকা প্রাথী আওয়ামী লীগ এর মুজিবুল হক মুজিব, ফুলকপি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রাথী সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান, নিজাম উদ্দিন এর ঈগল, গণফোরাম’র আবদুর রহমান জাহাঙ্গীর উদীয়মান সূর্য, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্ট-বিএনএফের টেলিভিশন প্রতীক জসিম উদ্দিন, তৃনমূল বিএনপি’র ইলিয়াস মজুমদার সোনালী আঁশ, জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) মোস্তফা কামাল ও ইসলামী ঐক্যজোট থেকে খোরশেদ আলম মিনার প্রতীকে নির্বাচন করছেন।
এ সকল প্রার্থীর মধ্যে মুজিবুল হক মুজিব ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান বছরের শুরু থেকে নৌকা’র পক্ষে বিভিন্ন সময় সভা সমাবেশ করেছেন। যে কারণে কুমিল্লা-১১(চৌদ্দগ্রাম) আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী মুজিবুল হক মুজিব (নৌকা), মিজানুর রহমান (ফুলকপি) ও ইসলামী ঐক্যজোট খোরশেদ( মিনার) এর মধ্যে ত্রিমুখী লড়াইয়ে’র সম্ভাবনা প্রবল। একদিকে ত্রিমুখী লড়াই ও অন্যদিকে দলীয় কোন্দল থাকার কারনে কুমিল্লা-১১ আসনে নৌকার প্রার্থী মুজিবুল হককে কোণঠাসা পরতে দেখা গেছে। দুই প্রার্থীর নেতা-কর্মীদের মাঝে যেন আতংক ছড়িয়েছে। স্থানীয় সূএে জানা যায় গত ২ বছর পূর্বে সাবেক রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নেতা কর্মীদের সাথে দলীয় কোন্দলে জড়িয়ে পরেন, সেজন্য এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চৌদ্দগ্রাম আসনে নৌকার প্রার্থী মুজিবুল হক’কে কোণঠাসা পরতে হচ্ছে বলে জানান। এদিকে ইসলামী ঐক্যজোট থেকে (মিনার প্রতীক) খোরশেদ আলম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (ফুলকপি) সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে উঠান বৈঠক করতে দেখা গেছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুজিবুল হক মুজিব বলেন, আমি উন্নয়নে বিশ্বাসী, আওয়ামী লীগে হাইব্রীড ও সন্ত্রাসীদের স্থান নেই। জনগনের ভোটে নৌকা প্রতীকের জয় নিশ্চিত হবে বলে ধারনা করছেন সাবেক রেলপথমন্ত্রী বর্তমান এমপি মুজিবুল হক মুজিব।
চৌদ্দগ্রামে ত্রিমুখী লড়াইয়ে নিজের জয় নিশ্চিত হবে বলে ধারনা করছেন-ফুলকপি প্রতীকের হেভিওয়েট প্রার্থী মিজানুর রহমান। কৃষক, শ্রমিক-দিনমুজুর হতে শুরু করে সকল পেশাজীবিদের সাথে রাত দিন কৌশল বিনিময় করছেন মিজানুর রহমান। তিনি বলেন-ভোট কেন্দ্রে কোন প্রকার ঝামেলা হবে না, আপনারা আনন্দে নির্ভয়ে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে নিজের ভোটদান সম্পন্ন করবেন। নির্বাচন কমিশন বেশ সংখ্যক প্রশাসন মাঠে উপস্থিত রেখেছেন। র্যাব,বিজিবি, সেনা বাহিনীর উপস্থিতি থাকবে কোন সন্ত্রাসীর হুমকি ধুমকি রেহাই পাবে না। ভোটাররা সরব এবং জেলা উপজেলা’র কর্মকর্তাদের’কে ভোট কেন্দ্রে শৃঙ্খলা বোধ বজায় রাখতে সহযোগিতা করবেন।
ত্রিমুখী লড়াইয়ে কুমিল্লা-১১ আসনে জয় পরাজয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এর ভোট ট্রাম্প কার্ড হতে পারে।
আওয়ামী ঘরানার দুই প্রাথীর কোন্দল চোখে পরার মত যার সুবিধা কিছুটা ইসলামী ঐক্য জোট এর মিনার প্রাথী খোরসেদ আলম পাবে বলে স্থানীয় সূত্রে ধারনা করছে সাধারন ভোটাররা।
এদিকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র মতে জানা যায়, ৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩ জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে জোড়ালো ভাবে রাত দিন ভোটারদের কাছে ভোট চেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। প্রচারণার দিক থেকে অন্য প্রার্থীগণ মাঠে তেমন সরব উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.