শাহিন আলম আশিক
অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে অধ্যাপক ডক্টর ইউনুস জাতির উদ্দেশ্যে প্রথম ভাষণ দেন ২০২৪ সালের ৮ আগষ্ট। বাংলাদেশের রাষ্টপতি ভবনে শপথ গ্রহণের পর তিনি এই ভাষণ দেন, যেখানে তিনি স্পষ্ট বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি দমন এবং রাষ্টীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন করে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন।তিনি আরও বলেন সব ধরনের অপরাধের বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেন।
দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্হা গ্রহণ এবং ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করা হবে, প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচন ব্যবস্থা,প্রশাসন, বিচার বিভাগ এবং আইনশৃঙ্খলার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে সংস্কারের ঘোষণা দেন। এবং ছাত্র - জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত গনতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার ওপর জোর দেন। অধ্যাপক ডক্টর ইউনুসের এই ভাষণটি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা, যেখানে তিনি একটি বৈষম্যহীন ও শোষণহীন সমাজ গড়ার স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেছিলেন দেশকে একটি বৈষম্যমুক্ত কাঠামোর ওপর দাঁড় করাবেন। বাংলাদেশের নবযাত্রার সূচনা করবেন। যার নাম " নতুন বাংলাদেশ "সে লক্ষেই কাজ করে চলেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস।
এ সরকারের নানা রকম ত্রুটিবিচ্যুতির পরও সাধারণ মানুষ ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি আস্থাশীল। সাধারণ মানুষ মনে করেন, ড. মুহাম্মদ ইউনুস এদেশের মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন এবং বৈষম্যহীন একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বিনির্মানের সংগ্রামে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হবেন। আর সে কারনেই দেশের মানুষের আস্থা, বিশ্বাস তাঁর ওপর এখনো অটুট আছে।
এ কথা অস্বীকার করবার উপায় নাই অন্তবর্তীকালীন সরকারের অনেক উপদেষ্টার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। অন্তবর্তী সরকারের অনেক কার্যক্রম নিয়েই জনমনে অসন্তোষ, বিতর্ক রয়েছে। যেসব উপদেষ্টা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন, অযোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন তাঁরা এখনো কেন স্বপদে বহাল রয়েছেন তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। তাদের নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। এ সরকারের অনেক কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, সরকার কে চালাচ্ছে সে রকম কথাও বলছেন সুশীল সমাজের কোনো কোনো প্রতিনিধি। এ সরকার কে শিশুতোষ সরকার হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন এক বুদ্ধিজীবী কিন্তু এ সব কিছু ছাপিয়ে সাধারণ মানুষ এখনো একটি বিষয়ে একমত তা হলো ড. মুহাম্মদ ইউনুস ই বাংলাদেশকে সংকটাপন্ন অবস্থা থেকে কাংখিত শান্তির অবস্থায় নিয়ে যেতে পারেন। আর এ কারনেই সরকারের নানান সমালোচনা স্বত্বেও ড. ইউনুসের প্রতি মানুষের আস্থা এবং বিশ্বাস অটুট রয়েছে।
বাংলাদেশ এখনো মহাসংকটে। আর এ সংকট উত্তরণের প্রধান উপায় হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে চলছে টালমাটাল অবস্থা। নানা মত,নানা পথে নির্বাচনের যাত্রাপথ বিলম্বিত করবার ষড়যন্ত্র চলছে। জাতির প্রত্যাশা দেশী-বিদেশী সব ষড়যন্ত্রের উর্ধ্বে থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনুস কথা রাখবেন।
প্রয়োজনীয় সংস্কার, দৃশ্যমান বিচার ও উল্লেখ্য সময়ে ই সুন্দর একটি নির্বাচন আয়োজন করবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.