উচ্চমানে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ (বিআরআই) যৌথ নির্মাণ সহযোগিতার অগ্রাধিকার হিসেবে, চীনের ‘ছোট ও সুন্দর’ বিদেশি সাহায্য প্রকল্পগুলো বাস্তবসম্মত, জনপ্রিয়, কম খরচের এবং টেকসই। এটি বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে বৈশ্বিক দক্ষিণে, শিকড় গেড়েছে এবং চীনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য একটি উজ্জ্বল ব্যবসায়িক কার্ড হয়ে উঠেছে।
চীন সাহায্য গ্রহীতা দেশগুলোর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী তাদের কৃষি শিল্প ও চিকিত্সা উন্নয়নে সাহায্য দিয়ে থাকে।
লেহেতোতে চীনের সহায়তায় ১০ বর্গমিটার খড় মাশরুম চাষের ক্ষেত্র নির্মিত হয়। এর ফলে জমির অভাবগ্রস্ত কৃষকরা বছরে ১.২ টন তাজা খড় মাশরুম উৎপাদন করতে পারেন, যা তাদের জীবিকা নিশ্চিত করেছে। চীন থেকে হাইব্রিড চাল আমদানির পর বুরকিনা ফাসোর শস্য উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দেশটি মূলত চালের ‘শূন্য আমদানি’ বাস্তবায়ন করেছে। মাদাগাস্কারে চীন দেশের প্রধান ডিম উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোকে সংযুক্ত করে ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি মহাসড়ক নির্মাণে সহায়তা করেছে, যার ফলে স্থানীয় কৃষকদের জন্য ডিম পরিবহনের অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে এবং ডিম ভাঙার হার ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। স্থানীয়রা এটিকে প্রীতির সঙ্গে ‘ডিম রোড’ বলে ডাকে।
চীন আর্টেমিসিনিনকে মূল ভূমিকায় রেখে বৃহৎ পরিসরে আন্তর্জাতিক ম্যালেরিয়া-বিরোধী সহায়তা প্রদান করেছে, কোটি কোটি ডোজ আর্টেমিসিনিন ওষুধ সরবরাহ করেছে, যার ফলে শুধুমাত্র সাব-সাহারান আফ্রিকার প্রায় ২৪ কোটি মানুষ উপকৃত হয়েছে।
এদিকে চীনের সহায়তায় নির্মিত তানজানিয়ার ব্রডব্যান্ড প্রকল্পে টেলিফোন চার্জ ৫৮ শতাংশ এবং ইন্টারনেট চার্জ ৭৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। চীন-আফ্রিকা উপগ্রহ রিমোট সেন্সিং অ্যাপ্লিকেশন কোপারেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা ত্বরান্বিত, দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রশমন ক্ষমতা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ডিজিটাল প্রযুক্তি বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে চীন। পাকিস্তান, লাওস ও মিশরসহ ১৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার জন্য ডিজিটাল অবকাঠামো প্রকল্প তৈরিতে সহায়তা করে চীন। এতে ওয়েবসাইট, ই-গভর্নমেন্ট ও বুদ্ধিমান পরিবহন অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০২৫ সালে চীনের ‘ছোট ও সুন্দর’ বিদেশী সাহায্য প্রকল্পগুলোর নতুন অগ্রগতি কী কী?
চীনের বিজ্ঞানগত প্রযুক্তির মান উন্নীত করার পাশাপাশি ডিজিটাল অর্থনীতি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মহাকাশ ও নীল অর্থনীতির ব্যাপক আকর্ষণ রয়েছে।
এখন আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের লুবান ওয়ার্কশপের স্নাতকরা আছেন। চীনের জাতীয় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা ২০২৫ সালের মধ্যে ২০০০টিরও বেশি বিদেশি সাহায্য প্রশিক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং ৫০ হাজারেরও বেশি লোককে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা করে, যা জাতিসংঘের ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডার ১৭টি লক্ষ্য পূরণ করবে। ভবিষ্যতে, চীন তিনটি প্রধান বৈশ্বিক উদ্যোগের চারপাশে ঘনিষ্ঠভাবে প্রকল্পগুলো উন্নয়ন করবে এবং গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর জন্য ১০ লাখ প্রশিক্ষণের সুযোগ প্রদান করবে।
বর্তমানে, চীন তহবিলের কাঠামোর মধ্যে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং শিল্প উন্নয়ন সংস্থাসহ ২০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সহযোগিতা করছে। চীন বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে উৎসাহিত করবে এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নতুন প্রেরণা যোগাবে।
সূত্র:ছাই-হাশিম-ওয়াং হাইমান,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.