শাহিনুর রহমান পিন্টু, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ে ও এক কৃষক নিহত হয়েছে
নিহতরা হলো হরিনাকুন্ডু উপজেলার গোবরাপাড়া গ্রামের মরিয়ম বেগম (৬৫) ও তাসলিমা খাতুন (৩২) এবং কালীগঞ্জ উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামে কৃষক আব্দুল হালিম (৪৮)। পৃথক দু’টি ঘটনাই শনিবার সকাল ৭টার দিকে ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হরিনাকুন্ডু উপজেলার গোবরাপাড়া গ্রামের তাসলিমা বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘরের বারান্দায় তারের সাথে জড়িয়ে পড়ে ছিল। তা দেখে ঘর থেকে বেরিয়ে মেয়েকে বাঁচাতে তারে হাত দেন মা মরিয়ম। এতে ঘটনাস্থলেই তারও মৃত্যু হয়। বিষয়টি টের পেয়ে প্রতিবেশীরা বাঁশ দিয়ে মিটারের তার সরিয়ে মা ও মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে। প্রদিবেশিরা জানান, ৫ কন্যার জননী হতদরিদ্র মরিয়ম খাতুন স্বামীর মৃত্যুর পর নিজের বাড়িতেই থাকতেন। এদিকে ১৫ বছর আগে হরিনাকুন্ডু উপজেলার ভেড়াখালী গ্রামে সাপের কামড়ে স্বামীর মৃত্যুর পর তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে মায়ের কাছে চলে আসেন ছোট মেয়ে তাসলিমা। তাসলিমার ছেলে আল আমিন প্রায় দেড় বছর আগে সৌদি আরবে যান। সেখানে নানা জটিলতায় গত ১৮ দিন জেলে বন্দি রয়েছে। সন্তান বিদেশ যাওয়ার পর থেকে মা ও মেয়ে ওই বাড়িটিতেই থাকতেন। কোন রকমে কৃষি কাজ ও কাঁথা সেলাই থেকে রোজগারে চলতো তাদের সংসার।
তাদের প্রতিবেশী মিজানুর মোল্লা জানান, ঘরের বারান্দায় পড়ে ছিল মা ও মেয়ের মৃতদেহ। বিষয়টি খুবই হৃদয় বিদারক। এমন ঘটনা আসলেই সহ্য করার মত না। তাদের মৃত্যুতে বাড়িটি এখন শুন্য হয়ে গেল।
হরিনাকুন্ডু সোনাতনপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক নাজমুল হোসেন জানান, ঘটনার পর পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে কালীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আব্দুল হালিম (৪৮) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আব্দুল হামিদ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গোপিনাথপুর গ্রামের মজিবর বিশ্বাসের ছেলে।
শনিবাার সকাল ৭টার দিকে মাঠের একটি পুকুরের শিয়াল মারার জন্য ছড়িয়ে রাখা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সে মারা যায়। তবে, পুকুরের মালিক একই এলাকার খোারশেদ হোসেন বলছেন, শিয়াল ঠেকাতে একটি চিকন তার ছড়িয়ে রেখেছিলাম, এতে মানুষ মরার কথা নাা কিন্তু কিভাবে মারা গেল আমি বুঝতে পারছি না।
কালীগঞ্জ থানার তদন্ত অফিসার এসআই প্রকাশ কুমার জানান, ঘটনাস্থলে পৌছে সত্যতা পেয়েছি। এখন পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.