শাহিনুর রহমান পিন্টু, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মঙ্গলপৈতা বাজারের ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকে এক প্রবাসীর পাঠানো ১৫ লাখ টাকা ঐ ব্যাংকের ইনচার্জ বিল্লাল হোসেন প্রতারনার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইনচার্জ বিল্লাল হোসেন মঙ্গলপৈতা বাজারের পাশে ফরিয়াদকাটি গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে। প্রতারনার শিকার প্রবাসী জসিম উদ্দিন পারখিদ্দা গ্রামের শুকুর আলী জর্দ্দারের ছেলে।
জসিম উদ্দিনের ছোট ভাই সুজন রহমান জানায়, আমার ভাই সাড়ে ৭ বছর আগে সংসারের একটু সুখের আশায় মালয়েশিয়া পাড়ি জমায়। সেখানে কঠোর পরিশ্রম করে স্থানীয় মঙ্গলপৈতা বাজারের ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকে টাকা পাঠায়। বিদেশ যাওয়ার সময় টাকা পাঠানোর জন্য ব্যাংকের ইনচার্জ বিল্লাল হোসেনের মাধ্যমে একটি একাউন্ট করে। একাউন্ট করার সময় যে মোবাইল নং দেওয়া হয় সেই সিম কার্ড আমার ভাইকে ভূল বোঝায়ে মোবাইলের সিমকার্ড বিল্লাল নিজের কাছে রেখে দেয়। আমার ভাই এ পর্যন্ত ৩৩ লাখ ঐ ব্যাংকে পাঠিয়েছে, এরমধ্যে আমরা উত্তোলন করেছি ১৮ লাখ টাকা। আমাদের ঐ একাউন্টে বর্তমান ১৫ লাখ ২২ হাজার টাকা থাকার কথা কিন্তু গত ৯ জুলাই তারিখে ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে ব্যাংক থেকে আমাকে জানায় আপনাদের একাউন্টে মাত্র ২২ হাজার টাকা জমা আছে। এটা শোনার আমার মনে হলো আকাশ ভেঙে মাথায় পড়লো। এরপর ব্যাংকের ট্রানজিশন পেপার চেক করলে দেখা যায় ইনচার্জ বিল্লাল ঐ সিম কার্ড এবং নিজের ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবহার করে ১৫ লাখ টাকা বিল্লাল নিজে আত্মসাৎ করার বিষয়টি আমরা জানতে পারি।
ঘটনাটা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করলে একটি সালিশি বৈঠকে বিল্লাল এবং তার পরিবারের লোকজন উপস্থিত হয়ে টাকা তুলে নেওয়ার বিষয়টি স্বিকার করে। এবং ৩ মাসের মধ্যে ১৫ টাকা ফেরৎ দিবেন এই মর্মে ২০০ টাকার ষ্ট্যাস্পে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু এখন সে টাকা না দিবে না বলে বিভিন্ন রকম তালবাহনা করছে। আমরা আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এই ঘটনার বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে মঙ্গলপৈতা ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট জসিম উদ্দিন জানায়, ইনচার্জ বিল্লাল আমার পূর্ব পরিচিত এবং তাকে খুব বিশ^াস করে। ব্যাংকের ইনচার্জের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। কিন্তু সে এমন ন্যাক্কারজনক কাজ করবে আমি ভাবতে পারিনি। সে শালিসি বৈঠকে সবার সামনে স্বিকার করেও এখন টাকা না দেওয়ার পায়তারা করছে। সে আমার এবং আমার এজেন্ট ব্যাংকের দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম নষ্ট করেছে আমি এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি।
বিষয়টি জানতে অভিযুক্ত ইনচার্জ বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে গেলে সে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে থাকে এবং সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার এক ঘন্টা পর ঘর থেকে বেরিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বিকার করে। এবং বলে আমি গত ২ মাস আগে ব্যাংকের চাকুরি ছেড়ে দিয়েছি। কে টাকা নিয়েছে আমি জানিনা। ব্যাংকের ট্রানজিশন সিটে তার টাকা উত্তোলনের কথা বললে সে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ শাখার ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার শেখ তরিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। উপজেলার মঙ্গলপৈতা এজেন্ট ব্যাংকে গিয়ে প্রাথমিক তদন্তে প্রমানিত হয়েছে যে সেখাকার আগের ইনচার্জ প্রবাসী ১৫ লাখ টাকা সে নিজে উত্তোলন করেছেন। এসময় ইনচার্জ বিল্লাল হোসেনকে ব্যাংকে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত হননি। আমি এ বিষয়টি হেড অফিসে জানিয়েছি এবং তদন্ত চলমান রয়েছে। টাকা উত্তোলনের বিষয়টি পুরোপুরি প্রমানিত হলে হেট অফিস ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.