সম্প্রতি সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মাহমুদ চায়না মিডিয়া গ্রুপকে (সিএমজি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সোমালিয়া ও চীনের মধ্যে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান এবং দুই দেশ এই সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণ করবে।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সোমালিয়া ও চীনের বন্ধুত্বের ভিত্তি হলো পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আস্থা। স্বাধীনতার পর থেকেই চীন সবসময় সোমালিয়াকে সমর্থন দিয়ে আসছে। চীনের সহায়তায় নির্মিত হাসপাতাল, স্টেডিয়াম ও হাইওয়েগুলো আজও সোমালিয়ার জনগণের সেবা করে যাচ্ছে। সোমালিয়া ও চীন বর্তমানে কৌশলগত অংশীদার। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, একসময় গৃহযুদ্ধ ও অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের কারণে চীনের সঙ্গে সোমালিয়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। ঠিক সেই সময়েই চীন অভাবনীয় উন্নয়ন সাধন করেছে। তবে সোমালিয়া সেই সুযোগগুলো হারালেও এখন আবার দ্রুত গতিতে সহযোগিতা পুনরুদ্ধার করছে।
প্রেসিডেন্ট মাহমুদ চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে একজন অত্যন্ত শক্তিশালী ও দূরদর্শী নেতা হিসেবে অভিহিত করেন। প্রেসিডেন্ট সি’র সঙ্গে দুই বার দেখা করতে পেরে তিনি খুব গর্ব বোধ করছেন। বাস্তবতা প্রমাণ করেছে যে, তাঁর নেতৃত্বে চীন সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে, চীনা জনগণ বর্তমানের সুখী জীবন উপভোগ করছে। অনেক দেশ, বিশেষ করে অনুন্নত দেশের জন্য তা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাই তিনি বলেন, চীনের সাফল্য প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের নেতৃত্বে বাস্তবায়িত হয়েছে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা খাতে চীনের সমর্থনে তাঁর দেশ কৃতজ্ঞ বোধ করে।
এ ছাড়া ২০২৬ সালকে ‘সোমালিয়া-চীন মানবিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
দু’দেশের বিনিময় আরো জোরদার করার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ বলেন, দু’দেশের বিনিময়ের স্তর এবং বিষয় আরো সমৃদ্ধ হচ্ছে। সোমালিয়া ছাত্রদের চীনের দেওয়া বৃত্তি আরো বাড়ছে। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট ভবন ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা চীন সফর করেছেন। চীনের বড় শহর এবং দূরের পাহাড়ি এলাকায় গিয়ে চীনের উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছেন। বিশেষ করে কৃষি ও বিজ্ঞান ক্ষেত্রে চীনের উন্নয়নের সাফল্য শিক্ষণীয়।
চীন একটি অর্থনৈতিক মিরাকল তৈরি করেছে যা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে, দারিদ্র্য বিমোচন এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেছে। আফ্রিকান দেশগুলো তাদের নিজস্ব উন্নয়নের দিকে এগিয়ে চলেছে, চীন সোমালিয়াকে ধান চাষ প্রযুক্তি চালু করতে সহায়তা করেছে। আজ, ধান চাষ সোমালিয়ার অন্যতম প্রধান কৃষি শিল্পে পরিণত হয়েছে। নীল অর্থনীতি, যথা সামুদ্রিক ও মৎস্য খাত, সেইসাথে অবকাঠামো এবং শিক্ষার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল প্রযুক্তি, যেখানে চীন দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করেছে। আজ, সোমালিয়ার সমস্ত টেলিযোগাযোগ সংস্থা ইন্টারনেট এবং টেলিফোন থেকে শুরু করে অন্যান্য অনেক প্রযুক্তিতে ১০০% চীনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এই সত্যটি আফ্রিকার সাথে উন্নত প্রযুক্তি ভাগ করে নেওয়ার জন্য চীনের উন্মুক্ততা এবং ইচ্ছাকে প্রদর্শন করে। এটি বিশ্বের জন্য, বিশেষ করে আফ্রিকার জন্য সুযোগ প্রদান করে। চীনের উন্মুক্ততা আফ্রিকান দেশগুলোর জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন ক্ষেত্রে চীনের সাথে সহযোগিতা করার পরিস্থিতি তৈরি করেছে এবং আফ্রিকান দেশগুলোকে চীনের সাথে তাদের মিথস্ক্রিয়া এবং সহযোগিতা জোরদার করার জন্য উৎসাহিত করবে। সূত্র: চায়না মিডিয়া গ্রুপ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.