এরশাদুল হক, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ধোপাজান নদীতে অবৈধভাবে খনিজ বালি ও পাথর লুটপাট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীর পাড়ে পুলিশের চেকপোস্ট থাকা সত্ত্বেও চোরাকারবারীরা বোঝাই করা বালি নিয়ে অনায়াসে বেরিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষ করে রাতের আঁধারে এই লুটপাটের মহোৎসব চললেও জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা বন্ধে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
জানা যায়, ধোপাজান-চলতি নদী বালুমহালটি দীর্ঘদিন ধরে ইজারা না হওয়ায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র অবৈধ ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে নদী থেকে বালি ও পাথর উত্তোলন করছে। স্থানীয়রা জানান, দিনের বেলায় কিছু ক্ষেত্রে প্রশাসনের তৎপরতা দেখা গেলেও, রাত নামলেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তখন শত শত বালুবাহী নৌযান ও ট্রলি বোঝাই করে বালি পাচার হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, "নদীর পাড়ে পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজনকে দেখি, কিন্তু তারা চোখের সামনে দিয়ে বালিভর্তি নৌকা চলে যেতে দেখেও কিছু বলে না। রাতের বেলা তো আরও ভয়াবহ অবস্থা। মনে হয় যেন এখানে প্রশাসনের কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই।"
স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন, এই অবৈধ বালি উত্তোলনের কারণে নদীর ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। নদীর দুই তীর ও আশপাশের বহু স্থাপনা ভাঙনের মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে অনেক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার এবং রাতের বেলা নজরদারি আরও বাড়ানোর আশ্বাস দেন।
তবে স্থানীয়দের দাবি, শুধুমাত্র লোক দেখানো অভিযান বা চেকপোস্ট নয়, এই অবৈধ চক্রকে সম্পূর্ণরূপে দমন করতে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের আরও কঠোর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
পরিবেশবিদরা মনে করছেন, অবিলম্বে এই লুটপাট বন্ধ করা না হলে ধোপাজান নদীর প্রতিবেশ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে, যা ভবিষ্যতে পুরো অঞ্চলের পরিবেশের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.