মো. আল আমিন, বিশেষ প্রতিনিধি
গাইবান্ধা রেলস্টেশনের পাশের ছোট্ট একটি চত্বর, এক সময় যেটি ছিল ফাঁকা ও নির্জন প্রান্তর, আজ তা হয়ে উঠেছে শহরের প্রাণকেন্দ্র। স্থানীয়রা এই স্থানটিকে পরিচিত করে তুলেছেন “কাউয়া পয়েন্ট” নামে। গাইবান্ধার এই সজীব আড্ডাস্থল এখন শহরের সকল মানুষের মিলনমেলা, যেখানে প্রতিদিন সকালে থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নানান শ্রেণির মানুষ ভিড় জমায়। কেউ চা পান করতে আসেন, কেউ আবার নিজেদের ভাবনা ও গল্প শেয়ার করতে।
এখানে প্রতিদিন শহরের নানা পেশার মানুষ—সাংবাদিক, শিক্ষক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ কিংবা সাধারণ নাগরিক—সবাই একে অপরের সঙ্গে মত বিনিময় করে। এটি যেন এক মুক্ত মঞ্চ, যেখানে রাজনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি এবং কবিতা নিয়ে চলে প্রাণবন্ত আলোচনা। কখনো কেউ গেয়ে ওঠেন পুরনো দিনের গান, আবার কেউ জীবনের আনন্দ-বেদনা শেয়ার করেন। এমন এক বৈচিত্র্যময় আড্ডায় মিশে থাকে গাইবান্ধার সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না ও স্মৃতি।
কাউয়া পয়েন্টের চায়ের দোকানগুলো যেন এই আড্ডার প্রাণ। গরম চায়ের ঘ্রাণে মিশে থাকে বন্ধুত্ব, চিন্তা এবং ভাবনার উষ্ণতা। এটি অনেকের কাছে শুধু একটি চা-পানের স্থান নয়, বরং গাইবান্ধার একটি ক্ষুদ্র সামাজিক প্ল্যাটফর্ম।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আলাউদ্দিন (গামা) বলেন, “এটা গাইবান্ধার হৃদস্পন্দন। এখানে আসলে মনে হয় সময় থেমে গেছে—সবাই নিজের মতো করে হাসে, ভাবে আর গল্প করে।” গণমাধ্যমকর্মী আঃ রাজ্জাক সরকার জানান, “আমি প্রায় প্রতিদিন কিছু সময় এখানে কাটাই। মানুষের কথা, হাসি আর চিন্তার মধ্যে লুকিয়ে থাকে জীবনের গল্প। এটি এক জীবন্ত নিউজরুমের মতো।"
স্থানীয়দের মতে, একটু যত্ন ও উদ্যোগের মাধ্যমে “কাউয়া পয়েন্ট” গাইবান্ধার অন্যতম সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। এটি শুধু শহরের একটি চত্বর নয়, বরং শহরের সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার এক উজ্জ্বল প্রতীক হতে পারে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.