১ মুখের ভাষা আমতা
রাত গভীরে শিশিরে ভিজে
কাঁপছে শীতে দেহ
গরম পোষাক কাছে নেই
দান করেনি কেহ।
দিন যায়গো খাবার খুঁজে
এটাই দিনে নামতা
শরীর জুড়ে শুধুই জ্বালা
মুখের ভাষা আমতা।
পথের শিশু এমনি করে
শীতের দিনে তে কাবু
সুট বুটেতে যায়গো যারা
ওদের বলেগো বাবু।
ইট পাথরে দালাল কোঠা
পালঙ্কে রাতের ঘুম
সেই শিশুর মাথার ছাদ
চাঁদ তারাদের ধুম।
কেউতো বোঝেনা তার কষ্ট
কিভাবে রাতটা কাটে
আসবে কখন ভোরে রবি
জীবন বাঁচাতে হাটে।
২ . মা আছে পাশে
বলি শোন ও মাগো মা
কি দেখি আজ
লক্ষ্মী ছেলের এই পা
কে মহা রাজ।
চুপ করে যাও তুমি
ঐ হাসি মুখে
ধুপ করে পড়ো সুমি
সে মন দুঃখে।
কোন দেশে মন বাও
কি আছে রাসে
কার সুখ পেতে চাও
মা আছে পাশে।
দুষ্টু সোনা চুপ কত
নেই কি কথা
মাকে পেলে সুখ যত
যায় সে ব্যথা।
৪. রাগ ভুলে হাসি মুখ
রাগ ভুলে হাসি মুখ
পেয়েছে খানা
গোয়ালার নেই সুখ
নেয়নি ছানা
দুধ দিয়ে হবে দই
ঘোলের পানা
মাঠা তুলে সাধ লই
মাখন টানা
ভোরে শীত কন কনে
গায়ে কালো কোট
দুধে বল সব রনে
ভেজালের ঘোঁট।
ঘরে গোমূত্র গোচনা
ছিঁটে ফোঁটা লাগে
সাধ গন্ধের রচনা
জিভে চাটে আগে।
চুপ কথায় থাকেনা
কে পাকায় ঘোঁট
নজরে সব রাখেনা
যোগ ফল মোট।
দুধ ফুটিয়ে ঢাকেনা
তুলবে সে সর
সব বায়না থাকেনা
শুধু বলে জ্বর।
৩. দুঃখীর খুশির চল
লুকিয়ে লুচি রেখেছে খুশি
দোষটা দিয়েছে কার
ভোজের পাতে রাগের ঘুষি
টেবিল ভেঙেছে তার।
হলোনা কিছু খাওয়া তার
মনেতে পেয়েছে কষ্ট
সামনে পেলে ভাঙতো ঘাড়
আগুন চোখটা পষ্ট।
দেখছে খুশি মুখের শব্দ
বির বির করে বলে
লুকানো লুচি বাসন শুদ্ধ
ঝিল পারে নিয়ে চলে।
পেয়েছে গন্ধ পথে কুকুর
তার পিছু যায় চলে
জঙ্গলে হানা সেই দুপুর
সাধের ভোজন বলে।
ভয়েতে খুশি মুখ খোলেনা
সব কিছু রসাতলে
খিদের জ্বালা লুচি পেলো না
চুপ করে ঘরে চলে।
দুষ্টু নজর ঠিক রেখেছে
ঐ কুকুরের উৎপাত
খুশি কেনো লুকিয়ে চলছে
ওর কোথায় আঘাত।
মুখে লড়াই লালু ভুলুর
চেনা বাসনের কাছে
গরম লুচি খেয়ে ফতুর
মনের আনন্দে আছে।
খুশির কাছে উৎসব রাজ
দুঃখীর চোখেতে জল
একম কেনো জীবন সাজ
দুঃখীর খুশির চল।
৬. জনম ভিটায় মায়ের দিশা
মায়ের ভিটায় জনম দিশা
পুত্র কন্যার রাজ
স্বর্গ ভেবেই আগলে চলা
অন্তর দিয়ে সাজ।
কত পাহাড় দেশের মাঝে
স্রোতের নদী বাই
রূপের ঢেউ সাগর বাহার
বালুর চরা পাই ।
মাঠে ফসল মোদের শস্য
লালন পালনে পাই
জন্ম মৃত্যুর সাধের দেহ
তোমার বুকেই ঠাই।
মা মা বলেই তোমায় চুমি
সবুজ ছায়ায় এসে
শান্ত বলয়ে ঘুমিয়ে থাকি
এমন স্বপন রসে।
মায়ের ভাষা এমন খাসা
কত আনন্দে গাই
এমন জাদু ছন্দের ধারা
কোন তুলনা নাই।
৫. বিশ্রাম চাইছে রথ
শান্তির মঠ গঙ্গার তীরে
বইছে বাতাস কাছে
দিনের ক্লান্তি ছায়ায় ভিড়ে
বিশ্রাম চাইছে গাছে।
অবনীন্দ্রনাথ চেয়ে থাকে
ঘুরে ফিরে এই পথে
মায়ার গাছ ছায়ায় ডাকে
মন ছোঁয়া নাও রথে।
ক্লান্তি দূর শান্তি নিয়ে যাও
ফুটন্ত রঙিন ফুলে
মন দোলা সুখ চেয়ে নাও
চাঁদের হাটের কুলে।
কদম গাছের পাতা নড়ে
নদী ঢেউয়ের তালে
বনের পাখি গগনে ওরে
ফিরেই বসবে ডালে।
মনের কোণে এরূপ লয়ে
দেখেছি পরন্ত বেলা
বলয়ে আগুন রূপ হয়ে
পুড়ছে মেঘের ভেলা।
রূপ কালো ছাইয়ের ধুলো
লালের স্বরূপ মুখ
সূর্যের রশ্মি তলিয়ে গেলো
মিলবে চাঁদের সুখ।
একলা বসে ভাবছি মিছে
শিশু দের কোলাহল
নির্জন স্থানে মনের বিছে
দ্বার খোলা মনোবল।
৭. অভিমান
বলছি কইরে মেয়ে
মনে এতো রাগ
বুঝিনা কিছুই চেয়ে
এই রূপ ভাগ।
বন্দিনী জীবন কেনো
কে দিয়েছে গাল
ভিষণ জেদটা যেনো
কি রূপের তাল।
আনন্দ রূপের নেশা
কেন অভিমান
সবেই দেখিছি মেশা
ছন্দ রূপে টান।
হারিয়ে ফেলেছে হাসি
ভাব রূপ শূন্য
মধুর রাগের বাঁশি
ঐ দরজা ভিন্ন।
এমন দরজা জুড়ে
ঘুরে বেড়া দোরে
মনের আকাশ দূরে
ডাক দাও জোরে।
পাখিরা গাইছে সুরে
ফুল ফোটে ভোরে
রাতের শিশিরে মুড়ে
স্বপ্ন আসে ঘোরে।
আয় ফিরে আয় ঘরে
রাগ যাবে ছেড়ে
কত গাই গান ধরে
স্বপ নাহি ফেরে।
৮. ভেবোনা অকর্মা কালা
শুকনো পথ অযাথা করে কাঁদা
এটাই তার স্বভাব
দুই কান কাঁটা তুমি ভাবো হাঁদা
কি আছে ওর অভাব।
তুমি চাইছো শুকনো পথে চলা
এটাই শরীরে জ্বালা
ও আছোলা বাঁশের নজর ফলা
ভেবোনা অকর্মা কালা।
সে চায়না কখনো কারোর ভালো
নিজের হয়না সুখ
কি ভাবনায় দেখে মনের আলো
শুকিয়ে রয়েছে মুখ।
পাগল ভাবলে নিজে হবে বোকা
ষোল আনা পরিপাটি
ঘরেতে বোঝাও তবু দেবে ধোঁকা
ও নয়তো চুনোপুটি।
স্বভাব এমন দেখতে পারেনা
সমাজ থাকুন ভালো
কষ্টের জীবন যন্ত্রনা ছাড়েনা
এমন রূপের কালো।
এমন জীবকে সমাজ চায়না
তবুও সমাজে দেখি
এড়িয়ে চললে জীবন বাঁচেনা
চলনে রাখবে আঁখি।
সে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত
অন্যের জীবন নষ্ট
এদের পিছনে কারো আছে অস্ত্র
এটাই বোঝায় পষ্ট।
৯. অদ্ভুত এক স্বপ্ন
অদ্ভুত এক স্বপ্ন তাড়া করে
কিছুই বুঝতে পারিনা
দিনের শেষে সারা রাতের ঘুম
কে যে এসে কারে জানিনা।
স্বপ্নের গভীরতা ঐ অতলে
অজানার ছবি সামনে
শরীর ঘামে ভিজেছে বিফলে
তবুও পিপাসা সন্মানে।
জলের কষ্ট সন্ধানে চলেছি
দুটি পা যেন বেঁকে যায়
কে ধরেছে চেপে টেনে বলছি
ছাড়াতে পারছিনা ঠাঁয়।
পারিনা গো পালাতে কিছুতেই
বিথাই চেষ্টা নানা শ্রম
গোঙানির ঐ শব্দ চলছেই
দম বন্ধ নিঃশ্বাস থম।
যেন কেড়ে নেবে এই জীবন
সব দম কি যাবে ছুঁটে
কার বাগানে পেরেছি জামন
পারিনি পালাতে লুটে।
আম বাগানে ছিলাম কজন
বন্ধুর কথা মত মিলে
ওরা যে পালিয়ে গেলো কখন
সকল দোষ মোরে দিলে।
রইলাম ভয়েতে কাঁটা হয়ে
বোকা হাঁদা আমি ছিলাম
গাছে উপরে একা রাম জয়ে
আক্কেল সেলামি নিলাম ।
গাছের নিচে বাকিরা মই ধরে
তুলে ছিল ওরাই গাছে
মালিক হুঙ্কারে চিৎকার করে
ফাঁদে পড়েছি তার কাছে।
যত দোষ ঐ নন্দ ঘোষ আমি
দিলাম এক ঝাঁপ জলে
পুকুরেই ডুব সাঁতারে নামি
যত ভয়ের রূপ স্থলে।
বালিশ ছিঁড়ে মশারির টান
গেল ছিঁড়ে দেখি ঐ দড়ি
মায়ের হাতটা মুললো কান
সচল হয়ে নিজে নড়ি।
ভেঙেছে স্বপ্ন মা বুঝেছে আগে
জড়িয়ে ধরে নিজ বুকে
ভেজা ঘাম মুছিয়ে দেয় রাগে
ভয় তারায় দেহ ঠুকে।
১০. ভোরের কুয়াশা
ঘুম ভাঙা ভরের আকাশ
স্বপ্ন দেখছি চোখে
অন্ধকার রূপের আবাস
পাখির ডাক মুখে।
ভোরের পাখি ঐ আওয়াজ
শীত কুয়াশা ঢাকা
মেলতে চাইছে সূর্য তেজ
ঘোলা ধোঁয়ায় আঁকা।
বইছে গঙ্গা আপন বেশ
আলোর রশ্মি টেনে
সঙ্কট ঘিরেই প্রাণ শেষ
হিমেল ছোঁয়া মেনে।
ঘোলা মেঘের জোগানো জল
আঁধার করে খেলে
দূরে ঐ নদীর যত ছল
বিশ্বাস কোথা গেলে।
হিরের জ্যোতি কল্প দূরে
রয়েছে ভেসে ছায়া
সামনে ঢেউ ঘূর্ণিতে ঘোরে
ঢেউয়ে ঝাঁপ মাপা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.