মোঃ আল আমিন, বিশেষ প্রতিনিধি
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মধ্যরামচন্দ্রপুর (নয়াপাড়া) গ্রামে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ ও কালী মন্দির। বিশাল এ মন্দিরে স্থাপন করা হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় ৩০ ফুট উচ্চতার শিব বিগ্রহসহ ১৪৪টি দেব-দেবীর প্রতিমা। নান্দনিক কারুকাজে সজ্জিত এই মন্দির ইতোমধ্যেই দেশ-বিদেশের ভক্ত ও দর্শনার্থীদের কাছে এক জনপ্রিয় তীর্থস্থান ও মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
মন্দিরে প্রবেশের শুরুতেই চোখে পড়বে খালের ওপর আধুনিক নকশার সেতু ও আকর্ষণীয় প্রবেশদ্বার। ভেতরে প্রবেশ করলেই দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাচ্ছে বিশাল শিব বিগ্রহ। শুধু শিব নয়, কৃষ্ণ, দেবী কালী, লোকনাথ বাবা, শিব-পার্বতী, রাধা-কৃষ্ণসহ অসংখ্য প্রতিমা এখানে শোভা পাচ্ছে। প্রতিমা নির্মাণ কাজ এখনো চলমান রয়েছে।
মন্দির চত্বরজুড়ে রয়েছে হরিনাম কীর্তনের স্থান, রঙিন ফুলের বাগান, আধুনিক কারুকাজ, শিশুদের জন্য সুইমিং পুল ও খোলা পরিবেশে বিনোদনের ব্যবস্থা। বিশেষ আকর্ষণ কালী মন্দিরের সিঁড়িতে ব্যতিক্রমী ঝর্ণাধারা। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে পানির ঝর্ণায় ভিজে ভক্তরা পৌঁছে যাচ্ছেন দেবতার সান্নিধ্যে।
প্রতিদিন হাজারো মানুষ মন্দির প্রাঙ্গণে ভিড় করছেন। সবার জন্য রয়েছে প্রসাদের বিশেষ ব্যবস্থা। সারাদিন ধরে শত শত ভক্তকে একসঙ্গে প্রসাদ গ্রহণ করতে দেখা যায়, যা এক অনন্য দৃশ্য।
দর্শনার্থী নওগাঁর সঞ্জয় কর্মকার বলেন, “এখানে এসেই মন ভরে গেছে। প্রতিমাগুলো এত সুন্দরভাবে তৈরি করা হয়েছে যে কেউ দেখলে মুগ্ধ হবে। এটা নিঃসন্দেহে এক তীর্থস্থান।”
আরেক দর্শনার্থী ময়না রায় জানান, “মন্দিরটি দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। সবচেয়ে ভালো লাগে বারবার মাইকে বলা হচ্ছে—‘প্রসাদ না নিয়ে কোনো ভক্তবৃন্দ যাবেন না।’”
মন্দির প্রতিষ্ঠাতা শ্রী হরিদাস বাবু জানান, শুধু উপাসনালয় নয়, এখানে তৈরি করা হবে বৃদ্ধাশ্রম, আবাসিক ব্যবস্থা, ধর্মীয় শিক্ষালয় ও মেডিকেল কলেজ। এতে মন্দির ধর্মীয় উপাসনার পাশাপাশি সামাজিক কেন্দ্রবিন্দুতেও পরিণত হবে।
তিনি আরও জানান, নিজের জীবনের সব আয় ব্যয় করে সমাজ ও ধর্মের জন্য কিছু রেখে যেতে চান বলেই এমন মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন। ২১৭ শতক জমির ওপর সাত মাস আগে শুরু হওয়া এই বিশাল মন্দির সম্পূর্ণভাবে তার ব্যক্তিগত অর্থায়নেই নির্মিত হচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.