মো: নাজমুল হোসেন ইমন, মহানগর প্রতিনিধি, ঢাকা: ফাঁকা বাসা-বাড়ি আগে থেকে রেকি করত চক্রটি। পরে সময়-সুযোগ বুঝে ফাঁকা বাসার গ্রিল কেটে ও তালা ভেঙে রুমে ঢুকে ল্যাপটপ, মোবাইল, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করতে তারা। এভাবে চক্রটি গত দুই বছর ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক চুরি করেছে। চোরাই ল্যাপটপ, মোবাইল ও স্বর্ণালংকার বিক্রি করা হত রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন মার্কেটে। সম্প্রতি রাজধানীর লালবাগের একটি ভবনের ফাঁকা তিনটি বাসা থেকে দুটি ল্যাপটপ, মোবাইল, নগদ ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনা তদন্তে নেমে এই চক্রের সন্ধপন পেয়েছে পুলিশ। সেইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চক্রের সাত সদস্যকেও।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. সঞ্জীব (২৪), মো. হেলাল উদ্দিন (২৪), মো. রনি (৩০), মো. রিপন (৩২), মো. তরিকুল ইসলাম (৩০), মো. শামীম (২৩) ও মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩৩)। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্রান্ডের ৪৮টি ল্যাপটপ ৫টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়ে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের ডিসি মো. জাফর হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রথমে একটি বাসা রেকি করে। বাসা ফাঁকা থাকলে সেই বাসায় টার্গেট করে চুরি করে। মূলত যে বাসাগুলোতে সিকিউরিটি থাকে না।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে চোর চক্রের চারজনকে শনাক্ত করা হয়। এরপর চুরি যাওয়া একটি মোবাইলের সূত্র ধরে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের একটি দোকানে চোরাই ল্যাপটপ কেনাবেচার কথা জানা যায়। সেখানে অভিযান চালিয়ে চুরি যাওয়া দুটি ল্যাপটপসহ চোরাই ৪৮টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। দোকানদার সুমন গ্রেপ্তার রনির কাছ থেকে কম দামে চোরাই ল্যাপটপ কেনেন।
ডিসি জাফর হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা শনির আখড়ায় একটি কারখানায় কাজ করতেন। সেখান থেকেই এভাবে চুরি করার জন্য একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হন। রাজধানীর কদমতলী, সূত্রাপুর, কলাবাগ, লালবাগ ও ওয়ারীসহ বিভিন্ন থানায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারও হয়েছে।
বাসা-বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগালে এমন চুরি থেকে কিছু রেহাই মিলতে পারে অথবা চুরি হলেও সহজেই চোরদের ধরা যাবে বলে জানান তিনি।
ল্যাপটপ চুরির পর কারও ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও কিংবা তথ্য ফাঁস করে দিত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে লালবাগ বিভাগের ডিসি বলেন, বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের দোকানটি চোরাই ল্যাপটপ কম দামে কিনতো। এরপর সেগুলো ফরম্যাট দেয়ার পর উইন্ডোজ দিয়ে বিক্রি করে দিত। তারা গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস কিংবা ফাঁসের হুমকি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতো না।
উদ্ধার ৪৮ ল্যাপটপের মালিকানার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিআইডির ল্যাবে ফরেনসিক করে ল্যাপটপের মালিকানার তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এরপর প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.