মোঃ আরিফুল ইসলাম, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বীর নিবাস নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রকল্পের সুবিধাভোগী পাঁচজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজের গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যেই তদন্ত কাজ শুরু করেছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, চলতি অর্থ বছরে উপজেলায় ৩৬ জন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য বীর নিবাস নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি বীর নিবাস নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা। ৬ টি লটে ৩৬টি বীর নিবাস নির্মাণের জন্য আলাদা আলাদা ৬ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন ৫ নম্বর লটের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। লটটির ঠিকাদার হারুন অর রশিদ হারুন।
অভিযোগকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক ব্যাপারী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দয়া করে আমারমত গরীব মুক্তিযোদ্ধার জন্য ঘরের বাজেট দিয়েছেন। কিন্তু ঠিকাদার হারুন অর রশিদ কাজ নিয়ে আমাদের সাথে টালবাহানা শুরু করেছে। আমার ঘর নির্মাণের জন্য যে ইট, খোয়া ও বালু এনেছে, সেগুলো নিম্নমানের। আমি এ কারণে অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর প্রতিকার চাই। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমার এখানে ঠিকাদার যে মালামাল এনেছে সব নিম্নমানের। যে স্টিমেটে কাজ করার কথা, তার চেয়ে অনেক কম করে কাজ করছে। তাই আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা হানিফ উদ্দিন ব্যাপারী বলেন, আমার ঘর নির্মাণে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। হারুন ঠিকাদার কাজ শুরু করেছে। কাজের মান একেবারে ভালো না। আমি কাজ বন্ধ করতে বলেছি। ঠিকাদার হারুন আমাকে হুমকি দিয়ে বলে বাধা দিলে কাজ বন্ধ করে দিব। আপনার আর ঘর হবে না। আমি এর বিচার চাই। এছাড়াও ৫ নং লটের অপর দুই মুক্তিযোদ্ধাও নির্মাণ কাজে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। এখনো একজন মুক্তিযোদ্ধার বীর নিবাস নির্মাণকাজ শুরু করাই হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ বলেন, বীর নিবাস নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পেয়েছি। মুক্তিযোদ্ধাগণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.