মোঃ শরিফুল ইসলাম রাজু, ষ্টাফ রিপোর্টার, ফেনীঃ ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলায় ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ৮ গ্রামটি প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩ শতাধিক পরিবারের প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ। এ ছাড়া ১২০ হেক্টর রোপা আমন এবং ১০ হেক্টর বীজতলা পানির নিচে রয়েছে। নদীর পানি বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৮ আগষ্ট) ফেনী জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে গত ৪৮ ঘণ্টায় জেলায় (২৪+২৪) ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের দুইটি স্থান ভেঙে উত্তর বরইয়া, বিজয়পুর, কিসমত বিজয়পুর, দক্ষিণ বরইয়া, জগৎপুর, উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, বনিকপাড়াসহ অন্তত ৮ গ্রামের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়। নিচু স্থানের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শত শত মানুষ।
চলতি বর্ষা মৌসুমে মুহুরী,কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ২০ টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।
এরইমধ্যে মুহুরী নদীর ফুলগাজী উপজেলার উত্তর দৌলতপুর ও উত্তর বরইয়া অংশে অন্তত ১০ মিটার করে ভেঙে গেছে।
এ ছাড়া বন্যায় ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার প্রায় ১২০ হেক্টর রোপা আমন এবং ১০ হেক্টর বীজতলা পানির নিচে রয়েছে। এ ছাড়া মানুষের সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূইয়া ২০০ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন।
ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন বলেন, সোমবার (৭ আগস্ট) সকাল ৯টা পর্যন্ত ফুলগাজী ও পরশুরামে মুহুরী নদীতে বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছিল তবে (৮ আগস্ট) সকালে তা ৩৮ সেন্টিমিটারে নেমে আসে। দুপুরে আবার বিপদসীমার উপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা যায়।
তিনি আরো বলেন, টেকসই বাঁধ মেরামতের জন্য ৭৩১ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু হবে নিরীক্ষণ শেষে। নদীতে পানির প্রবাহ কিছুটা কমে আসলে ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামত করা হবে।
ফেনী জেলা প্রশাসক মোছাম্মত শাহীনা আক্তার বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে নিয়মিত মনিটর করা হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে তাদের জন্য ২ লাখ টাকা ও সাড়ে তিন মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দিয়েছি। পানিবন্দী মানুষের জন্য শুকনো খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের সাথে সমন্বয় করে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.