অতনু চৌধুরী (রাজু), বাগেরহাট
নদীতে আমার সব চলে গেইছে, ছোট্ট একটু ঘর বাকি আছে তাও যায় যায় অবস্থা।
আমাদের দেহার কেউ নেই, সরকার আশে সরকার যায় আমাদের দুঃখ কেউ দেহে না।
অনেকবার চেয়ারম্যান আইছে দেইহে গেছে, বাগেরহাট থেকেও বড় স্যার আইছিল,
বাঁধ দিয়ে দেবেনে কইছিল আজও দিল না। ছোট ছোট পোলাপান নিয়ে রাতে ভয়ে ভয়ে
ঘুমাই কখন জানি নদীতে চলে যাই। এভাবেই কথা বলছিলেন বাগেরহাটের রামপাল
উপজেলার পেড়িখালী দ ইউনিয়নের রোমজয়পুর গ্রামের বাসিন্দা আঃ গফ্ফার মোল্লা।
এ কথাগুলো মূলত রামপালের একার কথা না, এ রকম হাজারো গফ্ফার আছে যাদের শেষ আশ্রয়স্থলটুকু নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আর বিষয়গুলোকে বিবেচনা করে বাগেরহাটে "নদীর তীরে, জীবন জ্বলে” শিরোনামে নাটক প্রদর্শনী ও বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার উড়ুবুনিয়া থেকে রোমজয়পুর পর্যন্ত টেকসই বেড়িবাঁধের দাবীতে সিগনেচার ক্যাম্পেইন ও এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে বাগেরহাট শহরের পুরনো শিল্পকলা একাডেমির (এসিলাহ মিলনায়তনে) রামপাল ও বাগেরহাটের এ্যাক্টিভিস্টার উদ্যোগে এবং বাঁধন মানব উন্নয়ন সংস্থা ও একশনএইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় একশন ফর ট্রান্সফরমেশন প্রকল্পের আওতায় এটি
অনুষ্ঠিত হয়।
বাঁধন মানব উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এএসএম মঞ্জুরুল হাসান মিলনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বেরুনী।
এ সভায় বক্তারা বলেন, রামপাল উপজেলা এমনিতেই লবনাক্ত এলাকা চিংড়ি চাষের
অযুহাতে প্রতিবছর হাজার হাজার হেক্টর কৃষি জমি অনাবাদি হয়ে পরে থাকে।
কিছু অসাধু প্রভাবশালীরা চিংড়ি চাষের জন্য এই এলাকায় লবন পানি প্রবেশের চেষ্টা করে এবং এছাড়া কিছু অসাধু প্রভাবশালীরা রামপাল মোংলা ঘসিয়াখালি চ্যানেল দখল করে বালু উত্তোলন করে যার কারনে উড়ুবুনিয়া থেকে রোমজয়পুর পর্যন্ত নদী তীরবর্তী হওয়ায় প্রতিনিয়ত বাঙ্গনের মধ্যে পরছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে উড়ুবুনিয়া থেকে রোমজয়পুর পর্যন্ত হাজারো মানুষ গৃহহীন হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, অমি ইতিমধ্যে রামপালের রোমজয়পুর গিয়েছি। আমি বুঝতে পারছি এখানে একটি টেকসই বেড়িবাঁধ দরকার। আমি আপনাদেরই লোক, আমি আপনাদের সমস্যার কথা বুঝি। আমি আপনাদের আবেদন পত্র পেয়েছি । আমি খুব তাড়াতাড়ি আমার উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কাছে আপনাদের দাবীর বিষয়ে আবেদন পাঠাবো।
এসময় অন্যন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বাগেরহাটের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোঃ ওমর ফারুক, মৎষ অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক রাজ কুমার বিশ্বাস, পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাটের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হোসনেয়ারা জামিল সুমানা, একশন এইড বাংলাদেশের ইন্সপাইরেটর সুইট খান, সাংবাদিক সৈয়দ শওকত হোসেন, এসএস শোহান, আব্দুলাহ আল ইমরান, এছাড়া সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বাঁধনের বিভিন্ন ইয়ুথ গ্রুপের অর্ধশতাধিক প্রতিনিধি এতে অংশগ্রহন করে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2024 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.