এম.ডি.এন.মাইকেল
গত পনেরো বছরে যেই সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যবসায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সিবিএ নেতা গংরা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদের পাহাড়,একে একে বেরিয়ে আসছে তাদের সকল অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য প্রমাণ।
ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমান, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, পিএসসি প্রশ্ন ফাঁস চক্রের হোতা আবেদ আলী, বন খেকো মোশারফ এর পর আলোচনায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর মহা-দুর্নীতিবাজ সিবিএ সাধারণ সম্পাদক
সারোয়ার হোসাইন।অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নামে বেনাম গড়ে তুলেছেন রাজধানী ঢাকা ও গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে সম্পদের পাহাড়।
বিআইডব্লিউটিএ'র সিবিএ নেতা সারোয়ার হোসাইন। কর্তৃপক্ষও অজ্ঞাত কারণে সারোয়ার হোসাইনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না এই নিয়ে মতিঝিল বিআইডব্লিউটিএ'তে কর্মরত দেশ প্রেমিক সৎ কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তিনি পরিবার ও আত্নীয় স্বজনদের চাকরি দিয়ে নিজস্ব বলয় গড়ে তুলেছেন বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। সারোয়ার হোসাইন নিজেও একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। সিবিএ নেতা হবার বদৌলতে অসম্ভবকে সম্ভব করে সংস্থায় একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করেছেন মহা দুর্নীতিবাজ কুখ্যাত এই নেতা। তিনি এতোই ক্ষমতাধর যে, শ্যালকের চাকরির বয়স সীমা পেরিয়ে গেলেও তাকেও চাকরি দিতে সক্ষম হয়েছেন। স্ত্রী কামরুন নাহার মলি ট্রেসার পদে চাকরি করেন। কিন্তু স্বামী সিবিএ নেতা হওয়ায় তিনি অফিস না করেই শুধু হাজিরা খাতায় সই করে মাসিক বেতন ভাতা ভোগ করছেন বলে অভিযোগে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিএ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন বি ২১৭৬ এর সাধারণ সম্পাদক (মেয়াদ উত্তীর্ণ) হলেন সারোয়ার হোসাইন। এক বছর আগেই আবুল-সারোয়ার এর মেয়াদ শেষ হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে মামলা থাকার দোহাই দিয়ে ইলেকশন দিচ্ছেন না। সারোয়ার হোসাইন সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন প্রায় ১ বছর ধরে। এর আগে তিনি সংগঠনটির কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। সিবিএ'র প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন রফিকুল ইসলাম, তিনি অবসরে যাওয়ার পর সারোয়ার হোসাইন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেন। তাছাড়া এই জুটির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় প্রায় ১৮শ' কর্মচারীর অধিকাংশই তাদের উপর ক্ষুব্ধ। ইলেকশন দিলে সারোয়ার হোসাইন এই পদে আর বহাল থাকতে পারবেন না। কারণ তার দুর্নীতির পরিমাণ এতোই বেশি যে, যা কর্মচারীদের ভাবিয়ে তুলেছে। তবে উপরের স্যারদের সাথে মহা দুর্নীতিবাজ সারোয়ার হোসাইনের বেশ সখ্যতা থাকায় দুদক এর মামলা সহ সব অনিয়ম দুর্নীতি করেও বহাল তবিয়তেই আছেন। বিআইডব্লিটএ'র কর্মচারীদের প্রশ্ন,একজন সিবিএ নেতার নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা, ধন-সম্পদ এবং ব্যাংক ব্যালেন্স এর অভিযোগ। দুর্নীতিপরায়ণ এই ব্যক্তির নিকট থেকে সাধারণ কর্মচারীরা কি আশা করতে পারেন। তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। উপরন্তু সারোয়ার হোসাইন এর প্রতিনিয়ত ডিমান্ড বাড়ছেই বাড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ, বদলি এবং ইজারা ঘাট সহ বিভিন্ন তদবিরে মন্ত্রীর নাম ব্যবহারও করেন এই সিবিএ নেতা। যা মন্ত্রী নিজেও অবগত নন। তবে মন্ত্রীর একজন এপিএস তাকে সর্বদা সহযোগিতা করেন বলে এমন গুঞ্জন আছে মতিঝিলস্থ বিআইডব্লিউটিএ ভবনে। মন্ত্রীর ওই এপিএস বিআইডব্লিউটিএ ভবনে নিয়মিত যাতায়াত করেন বলে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী জানান।
রুপকথার মতো উত্থান এই দুর্নীতিবাজ স্বঘোষিত সিবিএ সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসাইন এর ওয়াকিবহাল একটি সূত্র থেকে এই খবর জানা গেছে। বিআইডব্লিউটিএ এর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেদককে জানান ড্রেজিং বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী রকিবুল ইসলাম তালুকদার এর সম্পর্কে মামাতো ভাই এই কুখ্যাত সিবিএ নেতার সকল অপকর্ম অনিয়ম দুর্নীতি বিরুদ্ধে সরকারের বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল এতে দেশ ও জাতীয় উপকৃত হবে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, প্রাণের শালি যুক্তরাজ্য প্রবাসী নুরুন্নাহার পারভিনের নামে রাজধানীর খিলগাঁও, চৌধুরীপাড়া, মাটির মসজিদ সংলগ্ন বি- ১০৮ নাম্বার বাড়ির ৭ম তলায় প্রায় কোটি টাকা খরচ ১৬ শ' বর্গফুটের ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন সারোয়ার। বর্তমানে সপরিবারে সেখানেই বসবাসা করেন তিনি। নিজের টাকায় কেনা এই অট্টালিকা ফ্ল্যাট টি শালিকার টাকায় ক্রয় করা হয়েছে বলে সারোয়ার হোসাইন এর দাবি। তিনি কেয়ারটেকার হিসেবে থাকেন শুধু। টাংগাইলের কাগ মাড়ায় (কাইয়্যামাড়া) কোটি টাকা খরচ করে জমি ক্রয় করেছেন তিনি। সেখানে 'সারোয়ার তাজমহল' নামে একটি অত্যাধুনিক বাড়ি করার সব সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সারোয়ার হোসাইন এর ধন-সম্পদের ফিরিস্তি আগামী পর্বে প্রকাশিত হবে।টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দেলডা গ্রামে সারোয়ার হোসাইন এর বাড়ি। সেখানে বাপ-দাদার আমল থেকেই বেশ জমা-জমি আছে। সারোয়ার হোসাইন এলাকার মানুষের কাছে দানবীর এবং জনদরদি হিসেবে পরিচিত। চাকরি সহ বিভিন্ন আর্থিক সহযোগিতা করে থাকেন সারোয়ার হোসাইন।
সিবিএ নেতা সারোয়ার হোসেন পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যাদের চাকরি দিয়েছেন তারা হলেন, স্ত্রী কামরুন নাহার মলি, পদবি -ট্রেসার। আপন ফুফাতো ভাই আব্বাস আলী। আপন মামাতো ভাই আশরাফ। আপন চাচাতো শ্যালক আহসানুল হক কাইয়ুম, পদবি-শুল্ক আদায়কারী। চাচাতো ভাই শামসুল আলম মনি।,আপন খালু আব্দুল জলিল, পদবি - শুল্ক আদায়কারী।ভাবি - নাজমা বেগম, পদবি -সহকারী। খালাতো ভাই - আনিসুর রহমান, পদবি -শুল্ক আদায়কারী। আপন ভাতিজির জামাই - তাইজুল, পদবি -ট্রেসার। আপন খালাতো ভাই আনু, পদবি -সহকারী। আপন মামা ইউসুফ। চাচাতো শ্যালক কাইয়ুমের স্ত্রী রুমে না আক্তার, পদবি -নিম্নমান সহকারী। আপন খালাতো ভাই নজরুল ইসলাম, পদবি -গাড়ি চালক। চাচাতো ভাই -মোজাফফর হোসেন, পদবি -অফিস সহায়ক। আপন খালাতো ভাতিজা আরশাদ, পদবি -অফিস সহায়ক। আপন ভাতিজা -আতিক হাসান, পদবি -অফিস সহায়ক। চাচাতো ভাতিজা -আতোয়ার রহমান, পদবি - অফিস সহায়ক। ভাতিজা শওকত আলী, পদবি -টার্মিনাল গার্ড। আপন ভাতিজা -জুয়েল রানা, পদবি -টিসি। ফুফাতো ভাই আজগর, পদবি -নিম্নমান সহকারী। ভাগিনা -আনারুল ইসলাম -রেকর্ড কিপার। ভাতিজা -সোহেল রানা, পদবি -পাইলট। চাচাতো ভাতিজা -আব্দুল মালেক -পদবি- লস্কর। ভাতিজা -হাসান, পদবি -অফিস সহায়ক। চাচাতো ভাতিজা -হজরত আলী, পদবি- টার্মিনাল গার্ড। চাচাতো ভাতিজা শান্ত, পদবি -লস্কর। ভাতিজা সবুজ শেখ, পদবি- লস্কর। ভাতিজা মশিউর রহমান, পদবি -গ্রিজার।
ভাতিজা হাফিজুল ইসলাম, পদবি -গ্রিজার। ভাতিজা ইমরান হাসান, পদবি -গ্রিজার। ভাতিজা -আতিকুর রহমান -পদবি -মার্ক ম্যান। ভাতিজা আল আমিন, পদবি মার্ক ম্যান।ভাতিজা জামাল, পদবি - অফিস সহায়ক। তিনি ,চেয়ারম্যানের দপ্তরে কর্মরত আছেন। ভাগিনা জিয়াউর রহমান, পদবি - নিম্নমান সহকারী। মামাতো ভাইয়ের ছেলে - আবদুল্লাহ, (অনিক), পদবি- সহকারী।
মামাতো ভাই আনিছুর রহমান, পদবি- শুল্ক প্রহরী এবং ভাগিনা শামিম, পদবি- ট্র্যাফিক। তিনি সুপারভাইজার পদে অবৈধভাবে অফিসে নিম্নমান সহকারী ডিউটি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও নোয়াখালী বেল্টের প্রায় দুই শত লোকের বেশি চাকরি দিয়েছেন সিবিএ নেতা সারোয়ার হোসেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০শ' লোকের উপরে চাকরি হয়েছে এই সিবিএ নেতার হস্তক্ষেপে। তার অনুসারীরা চাকরির বিষয়টি পজেটিভ দেখছেন। তবে এতো গুলো মানুষের চাকরি দিয়ে বিআইডব্লিটিএ তে নজির স্থাপন করেছেন সিবিএ নেতা সারোয়ার হোসাইন।তাই প্রশ্ন জাগে বিআইডব্লিউটিএ এর মহা দুর্নীতিবাজ সিবিএ সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসাইন এর এই সকল অনিয়ম দুর্নীতি রুখবে কে? ইতিপূর্বে বিআইডব্লিউটিএ এর কুখ্যাত মহা দুর্নীতিবাজ সিবিএ সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসাইনের অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সংবাদ প্রকাশিত হলেও তিনি এখনো বহাল তবিয়তে।
শ্রমিক ইউনিয়নের মেয়াদ শেষ ও আত্মীয় স্বজনসহ প্রায় ৫০০ লোকের চাকরি দেওয়া সহ তার সকল অনিয়ম দুর্নীতির বিষয় এ জানতে সারোয়ার হোসাইন এর ব্যবহৃত মুঠো ফোনে ফোন দিলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন আমি আগামী দিন ১৬-৭-০২৪ ইং তারিখে আপনার পত্রিকা অফিসে গিয়ে সাক্ষাতে বিস্তারিত জানাবো এই বলে মুঠো ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।পরবর্তীতে ১৬-৭-০২৪ ইং তারিখে জাতীয় দৈনিক মুক্তির লড়াই পত্রিকা অফিসে সারোয়ার হোসাইন একজন প্রতিনিধি পাঠান এবং প্রতিনিধির মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত না করার জন্য অনুরোধ করেন । বিগত পনেরো বছর ধরে তিনি যেই দুর্নীতি করে অডেল সম্পদের মালিক হয়েছে তার বিচার চায় দেশের সচেতন মানুষ। এহেন দুর্নীতিবাজ দেশ ও জাতির শত্রু।
অনুসন্ধান চলমান,,,,,,,,
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.