শাহীন শিকদারঃ
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে অভিযান চালায়। অভিযানে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসে। সেই অভিযানের পর থেকেই সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
এছাড়া অভিযোগ উঠেছে, গণমাধ্যমকর্মীদেরও অফিসে প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, সাংবাদিকদের ভেতরে ঢুকতে না দিয়ে সংস্থার বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি গোপন করার চেষ্টা চলছে।
প্রবেশে জটিলতা
সেবাগ্রহীতা ও সাধারণ দর্শনার্থীদের অভিযোগ, এখন অফিসে প্রবেশ করতে গেলেই মূল গেটে আটকানো হচ্ছে। প্রহরীরা জিজ্ঞেস করছেন—কে আসছেন, কেন আসছেন, কোন কাজের জন্য আসছেন। সঠিক ব্যাখ্যা না দিতে পারলেই ভেতরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। অনেকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে বিপাকে পড়ছেন সেবাগ্রহীতারা, যারা প্রতিদিন নানা প্রয়োজনে এ কার্যালয়ে আসেন।
সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ
ভুক্তভোগীরা বলছেন, একটি সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে গেট বন্ধ রেখে প্রবেশে বাধা দেওয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। জনগণ কর দেয় রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য, আর সেই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অফিসে প্রবেশ করতে গিয়ে যদি গেটে আটকে থাকতে হয়, তবে সেটি জনগণের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
বিশেষজ্ঞ মত
নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন, এটি মূলত দুর্নীতির সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ। দুর্নীতিবাজরা সবসময় চায় তাদের কর্মকাণ্ড আড়ালে রাখতে। এজন্য তারা অফিসকে তালাবদ্ধ গেট ও প্রহরীর কড়া নজরদারির আড়ালে রাখতে চায়। অথচ একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে মানুষের প্রবেশাধিকার সহজ হওয়াই উচিত।
সরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব
সচেতন মহলের প্রশ্ন—জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত একটি অফিসে যদি সাধারণ মানুষের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়, তবে সেটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ? স্বচ্ছতা বাড়ানোর পরিবর্তে এ ধরনের কড়াকড়ি দুর্নীতি আড়াল করারই ইঙ্গিত দেয়।
উপসংহার
অভিযোগ উঠেছে, দুদকের অভিযানের ভয় থেকে এই ধরনের কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। কিন্তু জনগণের প্রশ্ন—“যাদের অপকর্ম আছে তারা ভয় পাচ্ছে, অথচ এর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও গণমাধ্যমকর্মীদের।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.