এম.ডি.এন.মাইকেল
বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার কারণে, দেশের সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতি মরণব্যাধি ক্যান্সার এর রূপ ধারণ করেছিল।বিগত সরকারের সময়ে জন্ম নেওয়া মহা দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী, এমপি, আমলা, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির মূল হোতা সালমান এফ রহমান, ব্যাংক কেলেঙ্কারির হোতা এস আলম গ্রুপ এর মালিক শামসুল আলম,ছাগল কাণ্ডে আলোচিত এনবিআর এর সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান, বন খেকো মোশারফ, বিসিএস প্রশ্ন ফাঁস কেলেঙ্কারির হোতা আবেদ আলী, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ,সিআইডি সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া গংদের অনিয়ম দুর্নীতির ফিরিস্তি একে একে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে আসার পর এইবার বেরিয়ে আসলো বিআরটিএ ইকুরিয়াস্থ ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করা নৈশ প্রহরী দুর্নীতিবাজ শামীম গুলজার'র নাম। ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পরীক্ষা দেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায়। বিআরটিএ ঢাকা জেলা সার্কেলের আওতাধীন ইকুরিয়াস্থ ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার সময় নৈশ প্রহরী শামীম গুলজার দীর্ঘদিন থেকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা উৎকোচ আদায় করে চলছেন এডি ও পরিদর্শকের আস্কারায়।
যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের অন্যতম একটি জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান-বাংলাদেশ রোডস টান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটি)।
যার আপদোমস্তকে দুর্নীতির দূর্গন্ধ নতুন কিছু নয়। তবে সময়ের ব্যবধানে,নানা কারণে ক্ষেত্র বিশেষে কিছু হেরফের ঘটলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা যেন অমোচনীয় তথা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। আর তার অন্যতম “ড্রাইভিং লাইসেন্সিং সিস্টেম”। গ্রাহক সেবা নামধারী এ সিস্টেমের ঘাটে ঘাটেই গ্রাহক নামের ওই সংখ্যা গরিষ্ঠ নিম্ন আয়ের মানুষের রক্ত চোষার ফাঁদ পাতা রয়েছে। যার কলাকুশলি পরীক্ষার বোর্ড সংশ্লিষ্টরা হলেও সুবিধাভোগী স্তরে স্তরে। ওই ফাঁদে আটকে খেটে খাওয়া ওই স্বশিক্ষিত বা কম শিক্ষিত ‘লাইসেন্স’ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়টা যেন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। আর এভাবেই শুধু ওই শ্রেণীটির রক্ত চুষে এক-একটি সার্কেলে দিন, সপ্তাহ, মাসান্তে চলছে-লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত ভাগাভাগি।
কলাকুশলিরা ওই অবৈধ লাখ লাখ থেকে কোটি টাকার পদাধিকার আনুপাতের ভাগে বিত্তবৈভবের আট-ঘাট বেধে নির্বিঘ্নে রয়েছেন-সক্রিয়। যা নতুন কোন গল্প নয়,চলে আসছে দেড় যুগের বেশী সময় ধরে। অনুসন্ধানে আরো জানা যায় বিআরটিএ ইকুরিয়া সার্কেলে দীর্ঘদিন থেকে চলছে নৈশ প্রহরী শামীম গুলজার ও ইকুরিয়া জামে মসজিদের মোয়াজ্জেম হাফিজুর গংদের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে অনিয়ম দুর্নীতির শক্তিশালী সিন্ডিকেট।ইকুরিয়া জামে মসজিদের মোয়াজ্জেন হাফিজুর অনিয়ম দুর্নীতির টাকায় ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার ভাড়া করে বিবাহ করিতে যাওয়ার পরে এলাকায় আঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। একজন সরকারি জামে মসজিদের মোয়াজ্জেম হয়ে কিভাবে হেলিকপ্টার ভাড়া করে বিবাহ করতে কনে পক্ষের বাড়ি যায় এই প্রশ্ন থেকেই যায়।
অনুসন্ধানী আরও জানা যায় বিআরটিএ ইকুরিয়াস্থ ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সফল ভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও পরীক্ষার্থীদের বাড়তি গুনতে হয় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা।যেই সকল পরীক্ষার্থী তিন ধাপে তিন পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও নৈশ প্রহরী শামীম গুলজার ও ইকুরিয়া জামে মসজিদের মোয়াজ্জেম হাফিজুর সিন্ডিকেট গংদের তাদের চাহিদা মত ৩০০০/৩৫০০ টাকা উৎকোচ প্রদান না করা হয় তাহলে ওই সকল পরীক্ষার্থীদের ফেল করিয়ে দেয় দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট।(তিন ধাপের পরীক্ষা সফল ভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও ফেল করিয়ে দেওয়ার তথ্য প্রমাণ সংরক্ষিত) তাই প্রশ্ন জাগে বিআরটিএ ইকুরিয়ার নৈশ প্রহরী শামীম গুলজার ও মোয়াজ্জেম হাফিজুর গংদের খুঁটির জোর কোথায়? নৈশ প্রহরী শামীম গুলজার'র অনিয়ম দুর্নীতি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করা ও ইকুরিয়া জামে মসজিদের মোয়াজ্জেম হাফিজুর'র অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে জানতে বিআরটিএ ইকুরিয়া এডি নুরুল ইসলামের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে প্রথমে বলেন আমি কুরিয়ার নতুন আসছি অভিযোগ পাইলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এডি নুরুল ইসলামের এমন বক্তব্যে প্রতিবেদক এডি নুরুল ইসলামকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন ইকুরিয়ায় আপনি যোগদান করেছেন প্রায় পাঁচ মাস,এই পাঁচ মাসে নৈশ প্রহরী শামীম গুলজার ও মোয়াজ্জেম হাফিজুর গংদের মতো দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আপনি কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কি? প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে কোন সু'উত্তর না দিয়ে এডি নুরুল ইসলাম প্রতিবেদককে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান ইকুরিয়াস্থ অফিসে।
বিআরটিএ ইকুরিয়াস্থ ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় নৈশব প্রহরীকে দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া ও পরীক্ষা পরবর্তী সময়ে পরীক্ষার্থীদের থেকে ৩০০০/৩৫০০ টাকা উৎকোচ নেওয়ার বিষয়ে সচেতন মহল বলেন এহেন দুর্নীতিবাজ দেশের জাতির শত্রু।বিআরটিএ ইকুরিয়াস্থ দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর মাধ্যমে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.