জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং অন্যান্য সংস্থার সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬৭.৩ কোটি মানুষ ক্ষুধার সঙ্গে সংগ্রাম করেছে। জাতিসংঘের ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় প্রস্তাবিত ‘জিরো হাঙ্গার’ বা ‘শূন্য ক্ষুধা’ ভিশন বাস্তবায়নের পথ এখনও অনেক দীর্ঘ।
এ প্রসঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন চিয়ান মঙ্গলবার বেইজিংয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষায় চীন সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং জাতিসংঘের ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা দ্রুত বাস্তবায়ন ও একটি উন্নত বিশ্ব গঠনে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
লিন চিয়ান বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা মানবজাতির অস্তিত্বের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশ্বের বৃহত্তম খাদ্য উত্পাদনকারী দেশ হিসেবে বিশ্বের ৯ শতাংশেরও কম চাষযোগ্য জমি নিয়ে চীন ১৪০ কোটিরও বেশি মানুষের খাদ্যের যোগান দিচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের খাদ্য উত্পাদনের সামগ্রিক ক্ষমতা অবিচ্ছিন্নভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বে প্রতি ৫ কেজি শস্যের মধ্যে ১ কেজিরও বেশি চীন থেকে উত্পাদিত হয়। বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষায় চীন অসাধারণ অবদান রেখেছে।
লিন চিয়ান জোর দিয়ে বলেন, “বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তার পরিস্থিতি উন্নত করতে এবং বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে চীন সবসময় আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ (জিডিআই) প্রস্তাব করেন, যেখানে খাদ্য নিরাপত্তাকে আটটি গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতার ক্ষেত্রের মধ্যে একটি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের নিজস্ব প্রচেষ্টার মাধ্যমে, এফএও’র প্রযুক্তিগত সাহায্য প্রাপ্ত দেশ থেকে এর মূল অবদানকারীতে পরিণত হয়েছি। এফএও’র দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা কাঠামোর অধীনে চীনই হলো সবচেয়ে বেশি তহবিল সহায়তা প্রদানকারী, সবচেয়ে বেশি বিশেষজ্ঞ প্রেরণকারী এবং সবচেয়ে বেশি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী উন্নয়নশীল দেশ।”
চীন ১৪০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে কৃষি ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ১ হাজারেরও বেশি কৃষি প্রযুক্তি হস্তান্তর করেছে। এ ছাড়া ১৪ হাজারেরও বেশি হাইব্রিড ধান বিশেষজ্ঞ প্রযুক্তিবিদকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। চীন তার বাস্তব কর্মের মাধ্যমে গ্লোবাল সাউথের খাদ্য সংকট সমাধানে সহায়তা করছে এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গিকে ধীরে ধীরে বাস্তবে পরিণত করছে।
লিন চিয়ান বলেন, নিজেদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উত্পাদনের সক্ষমতা থেকে শুরু করে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান পর্যন্ত, বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষায় চীন সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। জাতিসংঘের ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা দ্রুত বাস্তবায়ন ও একটি উন্নত বিশ্ব গঠনে চীন নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
সূত্র:স্বর্ণা-হাশিম-লিলি,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.