বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গুলিবিদ্ধ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের স্কুল ছাত্র সামীরের ঘটনায় ৮২ জনকে আসামী করে অজ্ঞানামা ২০০/৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গত ০২ আগস্ট ঢাকার রমনা থানায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আশ্রাফুল ইসলাম ইমরান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন (যাহার নং ০৮,তাং ০২/০৯/২০২৪ইং)।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে কমপক্ষে ৭৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। এসব ব্যক্তিদের মধ্যে শিক্ষার্থী, নারী, শিশু, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ রয়েছে। ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার বনশ্রীতে গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহত হয়েছেন স্কুল ছাত্র আ,ন,ম সামীর (১৫)। ঢাকার রামপুরা বনশ্রী এলাকার ই- ব্লকের ১ নাম্বার রোডের ৩ নাম্বার বাড়ীর বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম ইমরানের ছেলে আ,ন,ম সামীর বনশ্রী আদর্শ বিদ্যানিকেতন স্কুলের একজন মেধাবী ছাত্র। গত সোমবার (২৬ আগস্ট) চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ স্কুল ছাত্র সামীর। ঢাকার কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হসপিটালে অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি সামীর এখন আশঙ্কামুক্ত ও ভালো আছেন বলে তার পরিবার সূত্র জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানা গেছে, গত ২০ শে জুলাই রামপুরা বনশ্রী এলাকার এ ব্লকের গলির মাথায় রাস্তার উপরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে, ছাত্র জনতাকে টার্গেট করে পুলিশ এবং আওয়ামী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে নিরস্ত্র শত শত ছাত্র জনতা ও সাধারণ পথচারী আহত হয়। পুলিশ এবং সন্ত্রাসীদের নিক্ষেপ করা গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তাৎক্ষণিক রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে স্কুল ছাত্র সামীর। এক পর্যায়ে রক্তমাখা সামীরকে স্থানীয় লোকজন দ্রুত আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে পূর্ব থেকেই দেশীয় অস্ত্র হাতে থাকা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের ধাওয়া খেয়ে, এম্বুলেন্স যোগে আহত সামীরের জীবন রক্ষার জন্য ঢাকার কাকরাইল ইসলামিক ব্যাংক সেন্ট্রাল হসপিটালে ভর্তি করে। আহত সামীরের অবস্থার অবনতি হলে গত ২২ শে জুলাই বিকেলে কর্তব্যরত ডাক্তারের পরামর্শে, অক্সিজেন সাপোর্টে আহত সামীরকে আইসিইউতে রেফার করে। গত ২৪ শে জুলাই সোমবার আহত সামিরের পিঠের ডান পাশে প্রবেশ করা গুলি পাঁজরের হাঁড় ভেঙ্গে, লাঞ্চ ভেদ করে লিভারের শেষাংশে প্রবেশ করায় উক্ত গুলিটি অস্ত্রপচারের মাধ্যমে বের করা হয়। বর্তমানে স্কুলছাত্র স্বামীর আশঙ্কা মুক্ত।
স্থানীয়রা জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ডান কাঁধে গুলিবদ্ধ হন এবং তার ডান কাঁধের হাড় ও ধমনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জরুরি ভিত্তিতে ঢাকার কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হসপিটালে তার অপারেশন করা হয়। পরে কিছু জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে দীর্ঘ সময় চিকিৎসাধীন রাখা হয়। বর্তমানে সামীর আশঙ্কামুক্ত। উল্লেখ্য, আহত স্কুল ছাত্র সামির কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়ন কোমাল্লা গ্রামের সাবেক ছাত্র নেতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব আশরাফুল ইসলাম ইমরানের দ্বিতীয় সন্তান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2024 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.