সৌরভ মাহমুদ হারুন, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা)
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় মেজর গনি সড়কের পাশে মধুমতী হাসপাতালের উত্তর পাশে সরকারি খাস জমিতে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে তীব্র দুর্গন্ধ, যা জনস্বাস্থ্য এবং চলাচলকারী পথচারীদের জন্য তৈরি করেছে চরম ভোগান্তি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্দিষ্ট কোনো বর্জ্য ফেলার স্থান না থাকায় বাধ্য হয়ে লোকজন এখানে ময়লা ফেলছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রাহ্মণপাড়া সদর বাজারের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত এই জায়গাটি একসময় সিএনজি স্টেশন হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তৎকালীন ইউএনও সোহেল রানা এটি প্রস্তুত করেছিলেন। তবে পরে স্টেশনটি পূর্বের স্থানে স্থানান্তর করা হলে জায়গাটি অনাদরে পড়ে থাকে। এরপর থেকেই এলাকাবাসী এখানে ময়লা ফেলতে শুরু করে। বর্তমানে এটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
ব্রাহ্মণপাড়া বাজারের আড়ৎ ও কাঁচাবাজারের প্রতিদিনের বর্জ্য ভ্যানগাড়িতে করে এনে এখানেই ফেলা হচ্ছে। ফলে রাস্তাঘাট ও আশপাশের এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রাজু আহমেদ বলেন, “আমার দোকান আলতাফ আলী মার্কেটে। প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করি। হাসপাতালের সামনে দিয়ে হাঁটার সময় এত দুর্গন্ধ লাগে যে বমি চলে আসে। মুখ-নাক ঢেকে কোনোরকমে পার হতে হয়।”
আরেক ব্যবসায়ী মনির হোসেন জানান, “মধুমতী হাসপাতালের পাশেই এই ময়লার ভাগাড় এখন জনদুর্ভোগের কেন্দ্রবিন্দু। দুর্গন্ধে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বসবাস করা দিন দিন কষ্টকর হয়ে উঠছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।”
বাজারের কাঁচামালের ব্যবসায়ী আবু কালাম বলেন, “বিক্রির পর অবশিষ্ট বর্জ্য ফেলার কোনো নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়েই এখানে ফেলি।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, “এই জায়গাটি দীর্ঘদিন খোলা পড়ে আছে। তাই আমরা এখানে ময়লা ফেলি। বিকল্প কোনো ডাম্পিং জায়গা না থাকায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।”
একজন স্থানীয় দোকানি বলেন, “বৃষ্টির দিনে এখানকার দুর্গন্ধ আরও তীব্র হয়। সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, আশপাশের ব্যবসায়ী ও রোগীরাও খুব কষ্টে থাকে। দ্রুত এই ময়লার ভাগাড় অপসারণ করা উচিত।”
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শেখ মো. হাসিবুর রেজা বলেন, “দুর্গন্ধদূষণের ফলে মানুষের স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, বাড়তে পারে শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, ও অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি। শিশু ও বয়স্কদের জন্য এটি খুবই ক্ষতিকর। তাই দ্রুত এই বর্জ্য অপসারণ করা প্রয়োজন।”
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা জাহান বলেন, “বাজার পরিচালনা কমিটির সঙ্গে কথা বলবো যাতে সরকারি খাস জায়গায় কেউ ময়লা না ফেলে। এই জায়গায় ময়লা ফেলার কোনো এখতিয়ার কারো নেই। জনগণকে সচেতন করতে শিগগিরই সাইনবোর্ড স্থাপন করা হবে।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.