সেন্টু রঞ্জন চক্রবর্তী
আমি
এ স্তব্ধ অসহনীয় মানবতা ও মনুষত্ব বর্জিত সময়ের কথা বলছি
আমি সে সব অকৃতজ্ঞ অমানুষদের কথা বলছি
যারা এক নদী রক্ত দিয়ে নিজস্ব পতাকা পেয়েও ভিনদেশি পতাকা উড়িয়ে উল্লাস করে,
বীরাঙ্গনাদের লুন্ঠিত সম্ভ্রমকে অপমানিত করতে দ্বিধা করেনা
যারা হারানোর কষ্ট ভুলে গিয়ে শালিকের মতো ডানা ঝাপটিয়ে ঘরে ফিরে যায়
যারা ধর্ম দিয়ে হাজারো বছরের ভ্রাতৃত্বকে বিভাজন করে
উঠানে দাগ কেটে দেয়
ঘৃণাভরে আমি সে সব পশু ও পশুবৃত্তির কথাই বলছি।
বন্ধুরা
পৃথিবীর সর্বত্র এখন অদ্ভুত এক অসুখ ছড়িয়ে আছে বিকৃত রুচির সুবিন্যস্ত বিন্যাস দেখে আমি লজ্জাবোধ করি,
অপমানে মাথা লুকানোর ঠাঁই খুঁজে না পেয়ে
ভীষণ বিব্রতবোধ করছি আমি,
সারাটা পৃথিবী এখন জরাজীর্ণ সময়ের হাতে বন্দি সভ্যতাকে জলে ও ডাঙায় খাবলে ধরেছে হায়েনার বিষাক্ত নখ
বিভীষিকাময় এ ক্রান্তিকাল কবে জানি শেষ হবে
বেবুঝের মতো সবারই মুখে মুখে ঘুরপাক খাচ্ছে একই কঠিন প্রশ্ন।
জনপদ নিষ্প্রাণ স্তব্ধ হয়ে গেছে কবে থেকেই
সাধুবেশে ভন্ডদের আস্ফালন দেখে
সুশীলদের নির্বাকতা দেখে
ভরষাহীন বুকে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কোটি কোটি নিরীহ অসহায় মানুষ,
ঘাড়ের উপর দুষ্কৃতিরা ফেলছে গরম নিঃশ্বাস
অকারণে মৃত্যুভয় দেখাচ্ছে নগ্ন উল্লাস
এমন বিপর্যয় পৃথিবী কোনোদিন দেখেনি আগে।
পরাস্ত মানবতা হাঁটু গেড়ে
পৃথিবীর কাছে আত্মরক্ষার প্রার্থনায় নিমগ্ন,
ভগবান বর্জিত এ কঠিন সময়ে প্রলয়ের পূর্বাভাস চারিদিকে
দ্রুত ছুটে আসছে উন্মাদ অশ্বারোহী
তার খুরের শব্দে জনপদ আতঙ্কিত
বিরামহীন ব্যস্ততায় ছুটে চলেছে দিগবিদিক উদ্দেশ্যহীন,
বর্ণনাহীন এ অস্থির কঠিন সময়ের কথা
পশু বৃত্তির এ উল্লঙ্ঘন কাল আরেকটা বালিয়ারী ঝড়ে ধূলিস্যাৎ হয়ে যাক
এ মহা বিনাশ সময়ে আমি এই প্রার্থনাই করছি।
(আগরতলা ২৮/১১/২৩)
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.