মাহফুজুর রহমান, মুরাদনগর (কুমিল্লা)
দূর থেকে প্রথম দেখায় মনে হতে পারে এটি কোনো বড় ডোবা। একপাশে সারি সারি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান, অন্যপাশে বহুতল তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দালান। অথচ বাস্তবে এটি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার একমাত্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় দূর্গা রাম পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ।
প্রতি বছর বর্ষা এলেই মাঠটির করুণ দশা যেন পুরনো দৃশ্যপটের পুনরাবৃত্তি। সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠ তলিয়ে যায় পানিতে। জলাবদ্ধতার কারণে দীর্ঘ সময় মাঠটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে খেলাধুলার সুযোগ হারাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও ক্রীড়ামোদীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠটির চারপাশে বাজার ও ঘনবসতি থাকলেও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের কোনো উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে পানি জমে থেকে পুরো মাঠ কার্যত অচল হয়ে গেছে। স্থানীয়দের মতে, এটি উপজেলা সদরের একমাত্র উন্মুক্ত ক্রীড়াক্ষেত্র হওয়ায় সবার জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিদ্যালয়ের পাশেই দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত সিনেমা হল ও ছাত্রাবাসে সারা বছর ময়লা-আবর্জনা জমে থাকে। বর্ষায় সেই নোংরা পানি মাঠে মিশে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাঠের জমে থাকা নোংরা পানি এডিস মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে।
এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিবছর একই অবস্থা। মাঠের কারণে শিশুরা খেলাধুলা করতে পারে না। এতে তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ময়নাল হোসেন সরকার জানান, “কয়েক বছর আগে মাঠের পূর্বপাশে কিছু মাটি ফেলা হয়েছিল। অন্য অংশে অল্প পানি জমে। বাকিটা আমি অবগত নই। পানি জমাটের বিষয়টি আমি বিস্তারিত জেনে জানাতে পারবো।
মুরাদনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী তুফরিজ এটন বলেন, শিশু-কিশোরদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে খেলাধুলা অপরিহার্য। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে মাঠের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করবো।
মুরাদনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আব্দুর রহমান বলেন, মাঠটির সমস্যা আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। যেহেতু মাঠটির পাশেই উঁচু সড়ক রয়েছে, যা রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের আওতাধীন, এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইতোমধ্যে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করার মাধ্যমে মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.