মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগরে সরকারি জায়গা দখল নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের তিতাস-হোমনা সড়কের পাশে তিতাস এলাকায় সরকারি খাস জমি দখল নিয়ে এখন দুই গ্রুপের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি খাস জমিতে প্রায় ৩০-৪০টি দোকান রয়েছে, যেখানে দীর্ঘ ৪০-৫০ বছর যাবত ব্যবসা পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। বেশ কয়েক বছর আগে প্রশাসনের অভিযানে বেশ কয়েকটি দোকান উচ্ছেদ করা হয় এবং প্রশাসনের নিকট থেকে নতুন দোকান ঘর নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়। এরপর থেকে নতুন করে কেউ দোকানপাট এ এলাকায় গড়ে তুলতে পারেনি।
স্থানীয় দোকানদার মঙ্গল মিয়া বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে আমি এখানে দোকান চালাই। এখন হঠাৎ বাহাদুর, ইব্রাহীম ও আল-আমিন আমাকে জায়গা ছাড়তে বলছে। কারণ আমাদেরকে উচ্ছেদ করতেই পারলেই এ জায়গায় দখল নিবে তারা। যেহেতু আমরা এ জায়গায় প্রায় অর্ধ শতাধিক বছর যাবত ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি এ জায়গায় রক্ষণাবেক্ষণ আমরাই করব। তবে সরকার যেকোনো মুহূর্তে চাইলে আমি জায়গা ছেড়ে দেব, কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী কাউকে দখল নিতে দেব না।
ব্যবসায়ী কালাম বলেন, বিগত সরকারের আমলে আমার দোকান ভেঙে ফেলা হয়। এরপর থেকেই আমরা পরিবার নিয়ে বহু কষ্টে জীবন যাপন করছি। স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা এই জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করতে চাচ্ছে। আমরা চাই এ জায়গা যেন কেউ দখল করতে না পারে। আমরা যারা আগে ব্যবসা করেছি তারা যেন আবার অস্থায়ীভাবে ব্যবসা করার জন্য সুযোগ পাই।
দোকানদার শমসু মিয়া বলেন, আমি নিজে এই জায়গা ভরাট করেছি, বহু বছর দোকান চালিয়েছি। এখন আমার ছেলে দোকানে বসে। যদি সরকার জমি ফেরত নেয়, আমরা দিয়ে দেব; তবে আমাদের মতো অন্যদের দোকানও একসঙ্গে তুলে দিতে হবে।
অভিযুক্ত জাকির হোসেন বাহাদুরের ভাই আল আমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি আমাদের খরিদকৃত জমি। জমি পরিমাপ করে গাছপালা পরিষ্কার করতে গেলে দোকানদাররা আমাদের উপর হামলা করতে আসে। আমি কারও সঙ্গে ঝগড়ায় জড়াইনি, তবে বিষয়টি নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, তিতাস এলাকায় সরকারি জায়গা বেদখল হওয়ার কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। তাই ওই এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। কোন পক্ষই সরকারি জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। কেহ নির্মাণ করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.