ডেস্ক রিপোর্ট
ভারতের কোচবিহারের কবি প্রিয়াংকা নিয়োগী নিজেকে মানব সেবায় নিয়োজিত রাখতে খুব ই ভালোবাসেন।
প্রিয়াংকা নিয়োগীর কাছে মেডিসিন ব্যাঙ্ক এর চিন্তাভাবনা কোথায় থেকে এলো জানতে চাইলে তিনি বলেন।
জুলাই মাসের ০৩ তারিখ আমি ও মা বাড়িতে ফিরি চেন্নাই থেকে। চার তারিখ থেকে মা কে জ্বর ,বমি, টয়লেট যেতে হয়েছে অনেকবার। পুন্ডিবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ইঞ্জেকশন করে ছেড়ে দেয়।তাতেও কাজ হয়না।পড়ের দিন কোচবিহার হাসপাতালে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে প্রচুর ওষুধ লেখে। এবং প্রাইভেট ডক্টরের ওষুধ বন্ধ করে দেয়।মা আগের থেকেই প্রাইভেট ডক্টরের ওষুধ খেতো রোজ। এর পনেরো দিন পর আবার ঐরকম পরিস্থিতি দেখা দিলে পুন্ডিবাড়ী হাসপাতালে মা কে নিলে আবার ওষুধ লেখে কেনার জন্য।আর ঐ ওষুধ খেয়েও না কমলে সন্ধ্যের দিকে কোচবিহার হাসপাতালে মা কে নিতে হয়। সেখানেও যে ওষুধ লেখে তা কিনে আনার জন্য বলে সিস্টার। সিস্টারের কথামতো রাত সাড়ে দশটার দিকে ওষুধে কিনতে গেলে সরকারি মেডিকেল সপ থেকে শুরু করে পাবলিক দোকানেও সেই ওষুধ পাওয়া যায়না।আমি নিরুপায় হয়ে সিস্টারকে জানাই ওষুধ পাইনি।সিস্টার আরও একবার খুঁজতে গিয়ে পেয়ে যায় সেই ওষুধ।আমি হাফ ছেড়ে বাঁচি। আমার মা সুস্থ হয়ে যায়।
কিন্তু বাড়িতে ফেরার কিছু দিন পর লক্ষ্য করলাম যে অনেক ওষুধ আর লাগবেনা, যা একেকটি পাতার থেকে মাত্র একটি ওষুধ ব্যবহার হয়েছে, আবার পুরো পাতার একটিও ব্যবহার হয়নি,আবার কিছু খুচরো ওষুধও লাগবে না।আবার কিছু ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এই ধরণের দামি ওষুধগুলো রয়ে গেছে।
তখনই মাথায় আসে যদি মেডিসিন ব্যাংক (Medicine Bank) প্রতিটি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের সাথে করা হয় তাহলে মানুষ তার অবশিষ্ট ওষুধ ডোনেট যেমন করতে পারবে, তেমনি যার প্রয়োজন তিনি নিতেও পারবেন। মানুষ দুটো কারণে অনেকসময় ওষুধ নিতে পারেনা -
১. মেডিসিনের দোকানে ওষুধ না থাকলে,
২. টাকার সমস্যার জন্য।
আর সেকারণেই জনসমক্ষে বিষয়টি আনার জন্য ফেসবুকের পোস্ট করি।ঐ পোষ্ট দেখে একজন জানিয়েছেন তার এলাকাতেও মেডিসিন ব্যাংক স্থাপন করবেন।পোস্ট দেখেই কোচবিহারের কয়েকজন মেডিসিন ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠার জন্য আমার সাথে আলোচনা করে। আগামীতে বিভিন্ন জায়গায় মেডিসিন ব্যাঙ্ক দেখতে পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
মেডিসিন ব্যাংক হলে মানুষ একটু হলেও সহযোগিতা পাবেন বলে আশা করছি এবং মানুষের জীবন বাঁচবে। মেডিসিন ব্যাঙ্ক সাধারণ মানুষের জন্য উদ্যোগ নিয়েছি।অনেক মানুষই মেডিসিনের অভাবে মারা যায়, আগামী দিনে যাতে কোনো মানুষ মেডিসিনের অভাবে মারা না যায় তারজন্য সমাজের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।তাদের অপ্রয়োজনীয় ওষুধগুলো ডোনেট করতে হবে।যাতে যার প্রয়োজন সে নিতে পারেন।প্রত্যেক হাসপাতাল ও নার্সিং হোমের পাশে যদি মেডিসিন ব্যাঙ্ক করা হয় তাহলে সাধারণ মানুষের অনেক উপকার হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2024 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.