১৭ এপ্রিল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চীন সফরের শততম বার্ষিকী উপলক্ষে, বেইজিংয়ের শিছেং জেলার ফা’ইউয়ান মন্দিরে ‘কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি, শতবর্ষের কবিতার ভালবাসা’ প্রতিপাদ্যে লাইলাক কবিতা উৎসব শুরু হয়েছে।
চীনের সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার বিভাগের উপমন্ত্রী এবং চায়না মিডিয়া গ্রুপের মহাপরিচালক শেন হাই শিয়োং অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তিনি এবং বিখ্যাত কবি শু থিং, চীনা লেখক সমিতির কবিতা কমিটির পরিচালক চিতি মাচিয়া এবং চীনা কবিতা সমিতির সভাপতি চৌ ওয়েন জাং প্রমুখ অতিথিদের সাথে যৌথভাবে বৈশ্বিক চীনা কবিতা সংগ্রহ কার্যক্রম চালু করেন।
বেইজিংয়ের শিছেং জেলার পার্টি কমিটির সম্পাদক সুন শুও তার বক্তৃতায় বলেছেন যে, এক’শ বছর আগে এপ্রিল মাসে, মহান কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, চীনা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সু জি মো এবং লিন হুই ইন’কে সাথে নিয়ে, প্রাচীন মন্দিরে লাইলাক ফুল উপভোগ করতে, কবিতা ও সাহিত্য সম্পর্কে আলাপ করতে ফা’ইউয়ান মন্দিরে এসেছিলেন। যা চীনা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি দুর্দান্ত অর্জন এবং এমনকি বিশ্ব সাহিত্যের ইতিহাসে একটি অনন্য গল্প। আজকের এই কবিতা অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য হল ‘লাইলাক কবিতা উৎসব’কে চীনের চমৎকার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির জন্য একটি কেন্দ্রীভূত প্রদর্শনী এলাকা হিসেবে তৈরি করা এবং বিশ্ব সভ্যতার মধ্যে একটি বিনিময় ও পারস্পরিক শিক্ষার মঞ্চ তৈরি করা।
অনুষ্ঠান চলাকালে, সুই জি মো’র নাতি সুই শান জেং ‘হু হুথং নং ৭’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন, যা শ্রোতাদের কবিতায় বর্ণিত শতবর্ষ আগের কবির জীবনাচার উপলব্ধি করতে সহায়তা করে। ঠাকুর পরিবারের বংশধর সৌরজা ঠাকুর, সুবিখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মনোজ মুরলী নায়ার, নাচ ও গানের মাধ্যমে চীন ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের বর্ণিল গল্প তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে, পিকিং ইউনিভার্সিটি, রেনমিন ইউনিভার্সিটি, বেইজিং নরমাল ইউনিভার্সিটি, নানকাই ইউনিভার্সিটি, চিলিন ইউনিভার্সিটি, ফুদান ইউনিভার্সিটি, নানচিং ইউনিভার্সিটি এবং উহান ইউনিভার্সিটিসহ আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য সোসাইটি আনুষ্ঠানিকভাবে ‘লাইলাক কবিতা উদ্ভাবন কেন্দ্র’ গঠন করেছে। সভায় উপস্থিত অতিথিরা ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের হাতে কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার ফলক প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে, চীনের সুবিখ্যাত অভিনেতা ওয়াং কাং, জি কুয়ানলিন, সুন ছিয়ান, অন্যান্যরা চীনা এবং বিদেশী কবিতা আবৃত্তি করেন। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবৃত্তি, লোকসংগীত, গান এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কবিতার সৌন্দর্য প্রদর্শন করে।
একটি ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হিসেবে, ফা’ইউয়ান মন্দিরে লাইলাক ফুল কবিতা উৎসব মিং রাজবংশের সময় থেকে শুরু হয় এবং এর কয়েক’শ বছরের ইতিহাস রয়েছে। ১৯২৪ সালের বসন্তে, মহান কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ফা’ইউয়ান মন্দির পরিদর্শন করেন এবং লাইলাক গাছের নীচে কবিতা রেখে যান।
১৭ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত, কবিতা উৎসবের পাশাপাশি, জাতীয় কবিতা বিনিময় এবং লাইলাক কবিতা সিটি-ওয়াকের মতো কার্যক্রমও অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র:স্বর্ণা-হাশিম-হাইমান, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2024 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.