রাকিবুল ইসলাম
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
নারায়গঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকার ইউএস বাংলা কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় নাজমা বেগম (৪৫) নামক এক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল ৩০ অক্টোবর সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মুত্যু হয়। নাজমা বেগম উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মাছিমপুর এলাকার শাহজাহান ভুইয়ার স্ত্রী। বর্তমানে নাজমা বেগম ৭ কন্যা ও স্বামী রেখে মৃত্যু বরণ করেন। নাজমা বেগমের মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
পরিবার স্বজনরা জানান, নাজমা বেগমকে গত বৃহস্পতিবার জ্বর ও মাথা ব্যাথ্যা হলে কর্নগোপ এলাকার ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। সকল পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে তার শরীরে ডেঙ্গু রোগ শনাক্ত হয়। প্রথম দিন নাজমা বেগমের শরীরের প্লাটিলেটের মাত্রা ছিলো ২ লাখেরও বেশি। চিকিৎসার ২য় দিনে নাজমা বেগমের শরীরের প্লাটিলেটের মাত্রা কমে ২ লাখে নিচে নেমে আসে। ৩য় দিনে শরীরের প্লাটিলেটের মাত্রা কমে ৮৫ হাজার নেমে আসে। সর্বশেষ ৪র্থ দিনে ১০ হাজারে নেমে আসে। নাজমা বেগমের স্বজনরা তার চিকিৎসার অবনতি দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হসপিটালে নিয়ে যেতে চাইলে হসপিটালের ডাক্তার তাকে নিয়ে যেতে দেয়নি। অবশেষে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে আজ ৩০ অক্টোবর সকালে নাজমা বেগমের মৃত্যু হয়।
স্বজনরা আরো জানান, এ হাসপাতালে নার্সরা রোগী ও রোগীর সাথে আসা লোকদের সাথে খারাপ আচরণ করে। নার্সরা রোগীদের সেবা না দিয়ে সব সময় মোবাইলে আসক্ত থাকে। এখানে ভালো কোনো ডাক্তার নেই। কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থী দিয়ে তারা রোগী দেখান। এখানকার ডাক্তাররা রোগীদের সেবায় অবহেলা করে।
এ ব্যাপারে ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার ডাঃ ওমর ফারুক বলেন, নাজমা বেগম জ্বর ও মাথা ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে এসে ভর্তি হন। পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে তার শরীরে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। আমরা তার চিকিৎসার কোনো ত্রুটি রাখিনি। তার শরীরের প্লাটিলেটের মাত্রা দিন দিন কমে আসার পর তাকে আইসিইউতে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জিএম মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, এবছর ডেঙ্গু সিজানে আমাদের হাসপাতালে প্রায় ১ হাজার ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা দিয়ে এসেছি। আজকে একজনের ডেঙ্গু রোগী মারা যায় এবং আগে একটি রোগী মারা গেছে। আমরা সর্বাত্ম চেষ্টা করি রোগীদের ভালো চিকিৎসা দেওয়ার। আজকে মৃত্যুর ঘটনায় ডাক্তারের কোনো অবহেলায় হয়নি। রোগীর শরীরের প্লাটিলেটের মাত্রা দিন দিন কমে যাওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় খুবই দুঃখীত।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.