লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
স্কুলছাত্রকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পালিয়েছে প্রধান শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটেছে ১৫ ডিসেম্বর (শুক্রবার) কুমিল্লার লাকসামে। ওই ঘটনায় বিচারে অভিযুক্ত হওয়ার ভয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
জানা গেছে, লাকসাম উপজেলার উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দিন গত মাসের ১৬ নভেম্বর দুপুরে স্কুলের বাথরুমে ঢুকলে তন্ময় নামে এক ছাত্র বাহিরে থেকে বাথরুমের দরজা আটকিয়ে দেয়। বাথরুমের ভেতরে আটকে থাকা মিনহাজ দরজা খোলার জন্য চিৎকার দিলে অন্য ছাত্ররা এগিয়ে আসলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস মিয়ার ছেলে ইহাম বাথরুমের দরজা খুলতে সবাইকে নিষেধ করে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর অন্য এক ছাত্র দরজা খুলে দিলে মিনহাজ বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস মিয়ার ছেলে ইহামকে দরজা খুলতে নিষেধ করার বিষয়ে জানতে চাইলে ইহাম এই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ছেলে এবং মাস্তান বলে উত্তেজিত হয়ে মিনহাজকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। পরে অন্যান্য ছাত্ররা দুইজনকে দুইদিকে নিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস মিয়া এসে তার ছেলেকে খারাপ কথা বলার অভিযোগ এনে মিনহাজের গলা চেপে ধরে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি দিয়ে দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। পরবর্তীতে ওই ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়লে তার স্বজনরা তাকে লাকসাম সরকারি হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে স্কুলছাত্র মিনহাজের বাবা মহি উদ্দিন দুলাল জানান, আমার ছেলেকে প্রধান শিক্ষক বেধড়ক মারধর করেছে। ঘটনাটি আমি স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে অবহিত করলে পরদিন ১৭ নভেম্বর সভাপতি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস মিয়াকে সভাপতির বাসায় ডাকলে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস মিয়া উপস্থিত না হয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। এনিয়ে বাড়াবাড়ি করলে পরীক্ষার সময়ে আমার ছেলের ক্ষতি করবে বলেও প্রধান শিক্ষক হুমকি দেন। দীর্ঘ একমাস পর ১৫ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সভাপতি ঘটনাটি সমাধানের লক্ষ্যে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস মিয়াকে পূনরায় ডাকলে তিনি এদিনও ফোন বন্ধ করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। এর আগেও এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. খাইরুল ইমরান অনি বলেন, ছাত্রকে মারধরের ঘটনাটি আমি সঙ্গে সঙ্গে শুনেছি এবং অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনাটি সমাধানের লক্ষ্যে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস মিয়াকে আমি দুইবার আমার বাসায় ডেকেছি। তিনি তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ রেখে অজ্ঞাত রয়েছেন। এটি অত্যন্ত দূখঃজনক।
এদিকে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.