মোঃ তরিকুল ইসলাম খন্দকার, লালমনিরহাট
লালমনিরহাট জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীন মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা রুমা খাতুনের বিরুদ্ধে প্রসূতি সেবা সংক্রান্ত টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এমন অভিযোগ উঠেছে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মোঃ শাহজালাল (সাজু)-এর বিরুদ্ধে।
জানা যায়, দৈনিক আলোকিত সকাল পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মোঃ আরিফুল ইসলাম রিপন সম্প্রতি লিখিতভাবে রুমা খাতুনের বিরুদ্ধে প্রসূতি সেবা প্রদানের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও অনিয়মের অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৭ আগস্ট ২০২৫ তারিখে উপপরিচালক শাহজালাল সরেজমিন তদন্তের নির্দেশ দেন এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৭(২)(ঘ) অনুযায়ী তদন্ত কর্মকর্তাও নিয়োগ দেন।
তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলেও অভিযোগকারী পক্ষের দাবি, অভিযুক্ত কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বরং তাকে ছুটিতে পাঠিয়ে “নিজ উদ্যোগে সমস্যার সমাধান করবেন” বলে আশ্বাস দেন উপ-পরিচালক শাহজালাল।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রায় চার মাস আগে লালমনিরহাটে যোগদানের পর থেকেই “সংস্কারের নামে অসংস্কার” শুরু করেছেন। বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তার অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ, অশালীন ভাষা ব্যবহার ও হয়রানির ঘটনাও প্রকাশ পেয়েছে।
এছাড়া মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ শফিকুল ইসলামকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ল্যাম্পগ্রান্ট ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, যা উপপরিচালকের দায়িত্বসীমার বাইরে। এ বিষয়ে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের অভিযোগ, “উপপরিচালক শাহজালাল প্রভাব খাটিয়ে অনভিজ্ঞ ও আজ্ঞাবহ ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসাচ্ছেন, ফলে সেবা ব্যাহত হচ্ছে সাধারণ মানুষের।”
তারা আরও দাবি করেন, “তিনি এমন কিছু কর্মকর্তাকে কাছে টানছেন, যাদের বিরুদ্ধে অতীতে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও কর্মচারী হয়রানির মামলা এবং সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা ও সুশাসনের সংকট তৈরি হয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে উপপরিচালক মোঃ শাহজালাল (সাজু) বলেন, “সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। প্রশাসনিক নিয়ম অনুসারে তদন্ত চলছে, প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে জেলা প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে এবং প্রাথমিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কামরুজ্জামান জনি
Copyright © 2025 Muktirlorai | মুক্তির লড়াই. All rights reserved.